লাল পান্ডাদের মিলিত হওয়ার সুযোগ করে দিতে নেপালে একটি ন্যাশনাল পার্ক বন্ধ ঘোষণা

 Umi, red panda of Nogeyama Zoo. Image from Flickr by Toshihiro Gamo. CC BY-NC-ND 2.0

নোগেয়ামা চিড়িয়াখানার লাল পান্ডা উমি। ফ্লিকরে তোশিহিরো গামোর দেয়া ছবি। সিসি বিওয়াই – এনসি – এনডি ২ দশমিক ০

নেপালের প্রথম হিমালয় জাতীয় উদ্যান এবং রাজধানী কাঠমান্ডুর সবচেয়ে কাছে অবস্থিত লাংটাং জাতীয় উদ্যানটিকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ একটি সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। লাল পান্ডাদের মিলিত হওয়ার সুযোগ করে দিতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

লাল পান্ডাদের প্রজনন মৌসুম শুরু হওয়ায় লাংটাং জাতীয় উদ্যানটি এখন বন্ধ।

নেপালে এই লাজুক প্রাণীটিকে বলা হয় হাবরে । এটি শান্ত পরিবেশে বসবাস করতে পছন্দ করে এবং সামান্য কোলাহলেই ভয় পেয়ে যায়। এমনকি শব্দ শুনে ভয় পেলে এটি তাঁর ছোট বাচ্চা ফেলে পালিয়ে যায়। যেহেতু লাল পান্ডাদের প্রজনন মৌসুম জুন মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে শুরু হয় তাই জাতীয় উদ্যানটি দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। এমনকি জ্বালানি কাঠ সংগ্রহে আসা স্থানীয় লোকজনের প্রবেশ দুই মাসের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

সারা বিশ্বে মাত্র ১০ হাজার লাল পান্ডা অবশিষ্ট থাকলেও মাকালু বরুণ জাতীয় উদ্যান এবং নিরাপদ অঞ্চলের পূর্বে অবস্থিত কাঞ্চনজংগা সংরক্ষিত এলাকা, সাগরমাথা জাতীয় উদ্যান এবং নিরাপদ অঞ্চল, লাংটাং জাতীয় উদ্যান এবং নিরাপদ অঞ্চল, মানাসলু সংরক্ষিত এলাকা, অন্নপূর্ণা সংরক্ষিত এলাকা, ধরপাতান এবং রারা জাতীয় উদ্যান এবং পশ্চিমের নিরাপদ অঞ্চল – নেপালের এই আটটি সুরক্ষিত স্থানে প্রায় ১ হাজার লাল পান্ডা পাওয়া যায়। নেপাল ছাড়াও প্রাণীটি ভারত, চীন, ভুটান, মিয়ানমার ও লাওসের পাহাড়ী অঞ্চলেও দেখা যায়।

দৈত্য পান্ডা আবিষ্কৃত হওয়ার কয়েক দশক আগে লাল পান্ডা আবিষ্কৃত হয়েছে। এটিকে ফায়ার ফক্স নামেও ডাকা হয়। এটি মাংসাসী থেকে তৃণভোজীতে পরিণত হওয়া একটি প্রাণী এবং কচি বাঁশের কান্ড এবং পাতা খেয়ে এরা বেঁচে থাকে।

মনে রাখবেন, লালা পান্ডাই হচ্ছে প্রকৃত পান্ডা! 🙂

যদিও এই লাজুক প্রাণীটি মোজিলা ফায়ারফক্সের লোগোতে দাপিয়ে বেড়ায় এবং লক্ষ লক্ষ ইন্টারনেট ব্রাউজার প্রতিদিন এটি ব্যবহার করেন, তবুও কেবল স্বল্প সংখ্যক লোকই জানে যে এটি একটি লাল পান্ডা।

ফায়ারফক্স লোগোতে আসলে কোন শেয়ালের ছবি নেই বরং এটি একটি লাল পান্ডা।

ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) লাল পান্ডাকে একটি বিপন্ন প্রজাতি হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। লাল পান্ডারা সাধারণত পোষ না মানলেও তারা কস্তুর্রীমৃগ এবং অন্যান্য বন্য প্রাণীর জন্য পাতা ফাঁদে শিকারে পরিণত হয়। রাখাল এবং চৌরিরা, ইয়াক-গাভীর হাইব্রিড পালগুলো অনিচ্ছাকৃতভাবে বিরক্ত করে এবং লাল পান্ডাদের আবাসস্থল ধ্বংস করে থাকে। এদের বাসস্থানের ক্ষতি সংরক্ষণবাদীদের জন্য আরেকটি প্রধান উদ্বেগের বিষয়।

বন্যপ্রাণী বিষয়ক সংস্থা ডব্লিউ ডব্লিউ এফ এর সাথে নেপালের সরকার যৌথভাবে লাংটাং এ এই বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতিটির সংরক্ষণে স্থানীয় বিভিন্ন সম্প্রদায়কে জড়িত করেছে। অনুরূপভাবে, লাল পান্ডা নেটওয়ার্ক ২০০৭ সাল থেকে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সঙ্গে লাল পান্ডাদের বিভিন্ন বিষয় পর্যবেক্ষণ এবং সংরক্ষণ কাজ করে আসছে।

লাংটাং জাতীয় উদ্যানে আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞার সময়টিতে লাল পান্ডাগুলো মিলিত হওয়ার জন্য একটি শান্তিপুর্ণ পরিবেশ পাবে। প্রানিটির সংরক্ষণ সম্পর্কে সচেতনতা আরও বাড়াতে এরপর খুব শীঘ্রই ২০ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক লাল পান্ডা দিবস পালন করা হবে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .