ভিডিওর মাধ্যমে ইকুয়েডরের সারাইয়াকু সম্প্রদায়ের আত্মপরিচয় সংরক্ষণ

Sarayaku. Foto:  gracias a El Churo

সারাইয়াকু সম্প্রদায়ে অনুষ্ঠিত একটি চলচ্চিত্র কর্মশালা থেকে নেয়া ছবি। ছবিঃ ইউটিউব চ্যানেলের এল চুরো।

ইকুয়েডোরের পূর্ব অংশে আমাজন অঞ্চলে অবস্থিত পাসতাজা প্রদেশে সারাইয়াকু সম্প্রদায়ের বসবাস। এটি জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ একটি এলাকা যেখানে স্থানীয় কিচওয়া সম্প্রদায়ের লোকজন বহুজাতিক বিভিন্ন কোম্পানির বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে আসছে। কেননা তাদের জমিতে তেল সম্পদের যে খনি পাওয়া গেছে তা তাঁরা কাজে লাগাতে চাইছে।

বেশ কয়েকটি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার সহযোগীতায় সারাইয়াকুর কিচওয়া জনগণের এ্যাসোসিয়েশনটি ২০০৩ সালে একটি অভিযোগ দায়ের করে। সম্পত্তিতে জনগণের অধিকার, আন্দোলন, ধর্ম, স্বাস্থ্য, এবং সংস্কৃতির স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ইকুয়েডর সরকারের আইন লঙ্ঘনের উপর ভিত্তি করে মানবাধিকার বিষয়ক আন্তঃ – আমেরিকান কমিশনকে (স্প্যানিশ ভাষায় এটির নামের প্রথম অক্ষর একত্রিত করলে দাঁড়ায় সিআইডিএইচ) সাথে নিয়ে এ্যাসোসিয়েশনটি এই অভিযোগ দায়ের করেছে।

কমিশন সহিংসতার ঘটনা তদন্ত করার জন্য এবং প্রয়োজনীয় শর্তপূর্ণ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিতে সরকারকে আদেশ করেছে। সারাইয়াকু সম্প্রদায়ের জমি থেকে যেকোন ধরণের প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলনের কাজ সম্পন্নের আগে সরকার যেন তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে নেয় সেটি তাঁরা নিশ্চিত করেছেন।

পূর্বে আমরা গ্লোবাল ভয়েসেসে তাঁদের সংগ্রাম এবং তাদের বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাতে সম্প্রদায়টি যেসব পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে সে সব বিষয় নিয়ে লিখেছি। যেমন একটি পদ্ধতি হচ্ছে, তাদের ব্লগের ব্যবহাররাইজিং ভয়েসেসের আমাজন ইনিশিয়েটিভের মাধ্যমে রাইজিং ভয়েসেসের সহযোগিতায় এল চুরো সমবায়ের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কমিউনিকেশন দলটি ধারাবাহিকভাবে কয়েকটি কর্মশালার আয়োজন করেছে। এসব কর্মশালায় ডিজিটাল ভিডিওর ব্যবহার সম্পর্কে তরুণদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে, যেন তাঁরা তাঁদের নিজেদের গল্পগুলো বলতে এবং তাঁদের সাংস্কৃতিক পরিচয়কে একটি আকৃতি দান করতে পারেন।

এল চুরোর ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিওগুলো প্রকাশিত হয়েছে।

“দক্ষিণ আমাজনঃ এন্টনিয়া, কাসাভা, ফসল, এবং তাঁর পরিবার” শিরোনামের ভিডিওটি সেগুলোর মধ্যে একটি। ভিডিওটিতে এন্টনিয়া একজন কিচওয়া নারী, যিনি খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে তাঁর ডিঙি নৌকাতে কাজ করতে যান। তিনি তাঁর শৈশবের কথা বর্ননা করেন এবং মাছ ধরা, শিকার এবং কৃষিকাজ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ সম্পর্কে নানা গল্প শেয়ার করেছেন।

 

তিনি ব্যাখ্যা করেছেন, এই সম্প্রদায়ের মানুষ শুধুমাত্র শনিবার গাছ রোপণ করে এবং কিছু পরিবার এমনকি গাছ লাগানোর আগে গান গায়। তবে শুক্রবার দিনটিকে কৃষিকাজের জন্য অশুভ বলে বিবেচনা করা হয়। কাসাভা তাঁর জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ কেননা ফসল ফলপ্রসূ হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে যে ধর্মানুষ্ঠান পালন করা হয় তাতে এটি ব্যবহার করা হয়।

এন্টনিয়ার জন্য তেল উত্তোলন কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়, কারণ তিনি এবং সারাইয়াকু সম্প্রদায়ের অন্যান্য অধিবাসীরা শুধুমাত্র তাঁদের ঐতিহ্য, রীতিনীতি, এবং কিংবদন্তি সংরক্ষণ করতে চান, যা প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে হারিয়ে যাচ্ছে। উল্লেখ্য সারাইয়াকু শব্দের অর্থ “ভূট্টা নদী”। উপরন্তু, অনেক তরুণ তাদের সংস্কৃতির এই গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো সম্পর্কে জানতে আর আগ্রহী নন।

তাই তারা প্রযুক্তি নিয়ে বাজি ধরেছেন, যেন এই সম্প্রদায়ের তরুণরা তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণে সাহায্য করতে পারেন।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .