মেক্সিকোর রাজধানী মেক্সিকো সিটি’র খাবার-দাবারের কিছু স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো সুস্বাদু বাস্কেট টাকো। শহরের যেখানেই যাবেন, দেখতে পাবেন ঝুড়িতে করে এই খাবার বিক্রি হচ্ছে। ঝুড়ির বেশিরভাগই আবার নীল রঙের। তাছাড়া টাকোগুলো গরম গরম রাখার জন্য কাগজ দিয়ে মুড়িয়ে দেয়া হয়।
গত মাসে গ্লোবাল ভয়েসেস তাদের পার্টনার পাবলিক রেডিও ইন্টারন্যাশনাল-এর চমৎকার একটি প্রবন্ধ পুনর্প্রকাশ করে। লেখাটিতে টাকোস আল পাস্টার এবং শর্মার মধ্যেকার সম্পর্ক তুলে ধরে। এবং এটা যে অটোমান সাম্রাজ্যের সময়কালের সেটা উল্লেখ করে। বছর কয়েক আগে আমাদের সহকর্মী লরা সিয়েন্ডার আর্জেন্টিনার খাবার নিয়ে একটি পোস্ট দেন। যে খাবারগুলোর কথা আমরা প্রতিদিনই শুনি, যা দেখলে খাওয়ার জন্য আমাদের পেটের মধ্যে চোঁ চোঁ শুরু হয়ে যায়, মুখ দিয়ে লালা পড়া কোনোভাবেই ঠেকাতে পারি না।
লাতিন আমেরিকার আরো খাবার-দাবারের কথা জানাতে আমরা এবার মেক্সিকোর ঐতিহ্যবাহী বাস্কেট টাকোকে তুলে ধরতে চেয়েছি। টাকো হলো ভাপে সিদ্ধ ভাঁজ করা রুটি, যার ভিতরে ফিলিং দিয়ে মুডে দেয়া থাকে। টাকোর ভিতরে ফিলিং হিসেবে সাধারণ শুকরের রিন্ড, মশলাদার সস, রান্না করা মটরশুটি, আলুসহ শুকরের সসেস দেয়া থাকে। তবে বৈচিত্র্য আনতে কোনো কোনো দোকানদার চিকেন টাকোও পরিবেশন করেন। এতে মুরগির মাংস ছাড়াও গ্রিন মোল সস অথবা রোস্টেড শুকরের মাংসও থাকে।
বিক্রেতারা সাধারণত তাদের সাইকেলের পিছনের ক্যারিয়ারে করে টাকো’র ঝুড়ি নিয়ে আসেন। কোনো কোনো সময় তারা নগরীর ব্যস্ত এলাকায় সাইকেল দাঁড় করিয়ে টাকো বিক্রি করেন। ক্রেতারাও রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে টাকো খেয়ে থাকেন। তিন ঝুড়ি টাকো’র বর্তমান দাম ১৫ মেক্সিকান পেসো, যা প্রায় এক মার্কিন ডলারের সমান।
দামে সস্তা আর সহজে পাওয়া যাওয়ার কারণে শিক্ষার্থী এবং স্বল্প আয়ের মানুষের কাছে এটি একটি প্রিয় খাবারে পরিণত হয়েছে। মেক্সিকো সিটি পৃথিবীর চতুর্থ বৃহত্তম জনবহুল শহর। শহরের অধিবাসীর সংখ্যা ২১ মিলিয়নেরও বেশি। এদের বেশিরভাগেরই সকালের নাস্তা এবং দুপুরের খাবার খাওয়ার জন্য যথেষ্ট সময় হাতে থাকে না।
প্রায় এক বছর আগে জোসে ইগনাসিও নামের একজন ব্যক্তি সংস্কৃতি বিষয়ক ওয়েবসাইট আক্রা’র খাবারের পাতায় নিচের মন্তব্যটি করেছেন:
Los puedes encontrar en muchas esquinas, ya sea en una bicicleta, dentro de una tienda miscelánea o en un puesto improvisado. Estos tacos son una tradición culinaria propia de nuestro país, son conocidos por ser baratos, rápidos y por su manera de preparación: la cocción en una canasta repleta de cebollas matizadas con grasa de chicharrón y aceite.
Todos alguna vez tienen que probar esta delicia que la comida tradicional mexicana nos ofrece.
শহরের আনাচেকানাচে আমরা এর দেখা পাবো। কেউ বাইসাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন, কেউ ছোট্ট দোকান খুলে বসে আছেন, কেউবা রাস্তার উপরের বিক্রি করছেন। এটা আমাদের দেশের ঐতিহ্য অনুযায়ী তৈরি করা হয়। এটি খুব সস্তা, খুব দ্রুত পিঁয়াজ, শুকরের রিন্ড এবং তেল দিয়ে বানানো যায়।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে সবাই চেষ্টা করেন মজাদার, সুস্বাদু এই মেক্সিকান খাবার খেতে।
জোসে ইগনাসিও এই খাবারে কী কী উপাদান থাকে তাও উল্লেখ করেছেন: এতে প্রচুর পরিমাণে তেল থাকে। আর কিছু কিছু রেসিপির ক্ষেত্রে এই তেল আসে শুকরের চর্বি থেকে। ফলে মেক্সিকোর ডায়েটিশিয়ান এবং কার্ডিওলজিস্টদের বছরজুড়েই ব্যস্ততা থাকে। এদিকে ফেডারেল ডিস্ট্রিক সরকারের তথ্য অনুযায়ী, মেক্সিকোর সবচে’ বেশি স্বাস্থ্য সমস্যার মধ্যে রয়েছে ওবেসিটি এবং অতিরিক্ত ওজন। আর ফোবর্স সাময়িকীর তথ্য অনুসারে, লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে মেক্সিকোই মারাত্মক ওবেসিটি সমস্যার মোকাবেলা করছে।
স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে আলোচনা আমরা পরেও করতে পারবো। এখন বাস্কেট টাকো কোথা থেকে এলো, সেটা নিয়ে খানিকটা আলোচনা করা যাক। অনলাইন সাময়িকী চিলানগোতে এল মেমো একটি প্রবন্ধ লিখেছেন। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, মেক্সিকো সিটি যে পরিমাণ টাকো খাওয়া হয়, এর বেশিরভাগই আসে মধ্য-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ টাল্যাক্সকালা থেকে। বিশেষ করে সান ভিসিন্টে এক্সিলিক্সোচিটলা থেকে:
Ahí, la mitad de los lugareños se dedica a la elaboración del taco y hasta tienen un día dedicado a eso: el 1 de diciembre, cuando desfilan con sus bicicletas por todo el lugar, aventando tacos por doquier. Cargados de su característico frasco de mayonesa lleno de salsa verde, estos tlaxcaltecas han cambiado la agricultura por los tacos sudados.
Dice Jorge Ibargüengoitia que los tacos sudados son como el Volkswagen de los tacos nacionales: prácticos, buenos y económicos, y que constituyen uno de los momentos culminantes de la tecnología mexicana. Su elaboración es sencilla: tortillas recién hechas, guisados preparados al momento, aceite hirviendo con un poco de chile guajillo (y que les da ese toque colorado) y si nos ponemos exquisitos, cebollitas para acompañar.
La salsa se prepara con tomate y chile hervido al que posteriormente se le agrega cilantro y cebolla cruda.
এখানকার অর্ধেক অধিবাসী টাকো বানানোর কাজে নিযুক্ত। তারা দিনভর এ কাজ করে থাকেন। ডিসেম্বর মাসের এক তারিখে তারা বাইসাইকেলে করে টাকো প্যারেড করেন। তথন তারা শহর প্রদক্ষিণ করতে করতে ডানে-বামে সবার উদ্দেশ্যে টাকো ছুঁড়ে দেন। এ সময়ে তাদের কাছে স্থানীয় মেয়োনেজ জার দেখা যায়। এটি গ্রিন সসে ভর্তি থাকে। সুস্বাদু টাকোর কারণে টিল্যাক্সকালার স্থানীয় অধিবাসীদের কৃষিকাজেও পরিবর্তন এসেছে।
মেক্সিকান উপন্যাসিক ও নাট্যকার জোসে আইবারগুয়েনগুইটা বলেছেন, সোয়েটি টাকো মেক্সিকোতে অনেকটা ভক্সওয়াগনের মতো জাতীয় টাকোতে পরিণত হয়েছে। এটা খেতে সুস্বাদু এবং দামেও সস্তা। তাছাড়া এটি স্থানীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো হয়। বানানোর প্রক্রিয়াও খুব সাধারণ: ভাপে সিদ্ধ করা টাটকা রুটি নাও। গুয়াজিলো চিলি দিয়ে তেলে জ্বাল দাও। তারপর একপাশে একটু পেঁয়াজ দিয়ে পরিবেশন করো।
টাকোর সাথে যে সস দেয়া হয়, তা টমেটো এবং সিদ্ধ মরিচ দিয়ে বানানো হয়। পরে এর সাথে চিলান্ত্রো এবং পেঁয়াজ দেয়া হয়।
টুইটার ব্যবহারকারী মনিকা রোবলেস জিভ সামলানোর পরামর্শ দিয়েছেন:
Vivimos en un mundo en el que la mitad del planeta muere de hambre y la otra de colesterol y obesidad *se come sus cinco tacos de canasta*
— Mónica Robles (@sirena_deamortz) June 17, 2015
আমরা এমন এক বিশ্বে বসবাস করি, যার অর্ধেক মানুষই ক্ষুধার কারণে মারা যায়। আর বাকি অর্ধেক মানুষ উচ্চ রক্তচাপ এবং মোটা হবার রোগে ভোগে।
টুইটার ব্যবহারকারী মিগ্যান লিভার টাকো বিক্রেতাদের ঐতিহ্যবাহী বাইসাইকেল ছেড়ে দিয়ে আধুনিক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন:
Modernizarse o morir, hasta el de los tacos de canasta entiende el concepto. pic.twitter.com/4euHr4jtKa
— MIGAN LEVER (@MiganLever) June 14, 2015
আধুনিক হবেন, না নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবেন। যদিও টাকো বিক্রেতারা এটা জানেন।
আলবার্তো রোজাস সামাজিক নেটওয়ার্ক ব্যবহারের করে মেক্সিকোর এই ঐতিহ্যবাহী খাবারের কথা ছড়িয়ে দেয়ার কথা বলেছেন:
@elcachorroshow #notedeseoelmal pero que se les antojen mis tacos de canasta pic.twitter.com/yBljD7viYH
— Alberto Rojas (@beto360320) June 17, 2015
#আমরাআপনারক্ষতিচাইনা, তবে আমি আশা করি আপনারা সবাই আমার টাকোস খেতে উন্মুখ হয়ে থাকবেন।
“বাস্কেট টাকো”কে মেক্সিকান গুরমেট হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। তবুও তারা মেক্সিকো সিটির প্রতিদিনকার নাগরিক জীবনের প্রতিনিধিত্ব করে। তাছাড়া টাকো বিক্রি করে বিপুল পরিমাণ লোকের কর্মসংস্থান হয় এবং হাজার হাজার মানুষের এটা খেয়ে থাকেন। তাই আপনি এরপরে যখন মেক্সিকো সিটিতে আসবেন, তখন বাস্কেট টাকোর মজাদার স্বাদ নিতে ভুলবেন না।