কোচিনেরাবু-জিমা জাপানের একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। আর এই দ্বীপেই শিনডেক পর্বতের অবস্থান। গত ২৮ মে হঠাৎ করেই এখানে আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত ঘটে। অগ্নুৎপাতের ফলে দ্বীপের ১৩৭ জন বাসিন্দা দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান।
অধিবাসীরা খুব দ্রুত দ্বীপ ছেড়ে চলে যাওয়ায় অগ্নুৎপাতের ছবি তুলতে পারেননি। তবে অগ্নুৎপাত শুরুর দিকের অল্প কিছু ছবি তুলতে পেরেছিলেন। সেগুলোই তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন।
তবে একজন ছেলে অগ্নুৎপাতের ঘটনা ভিডিও করতে সক্ষম হয়েছেন। সেই ভিডিও জাপানের মূলধারার অন্যতম সংবাদ ওয়েবসাইট জিজি-তে আপলোড করা হয়েছে।
「ドドド」と地鳴り、迫る噴煙=直前に耳鳴り、母は悲鳴ー撮影の少年・口永良部島
ভিডিও ক্যাপশন: ভিডিও করার ঠিক আগ মুহূর্তে, পৃথিবী গর্জে ওঠে, আকাশ ছাই-মেঘে ভরে যায়। আর ছেলেটির মায়ের চিৎকার শোনা যায়।
ছেলেটি ভিডিও শুরু করার মাত্র কয়েক সেকেন্ড আগে অগ্নুৎপাত শুরু হয়। ভিডিও-তে শোনা যায়, ছেলেটি তার ভীতসন্ত্রস্ত মাকে লন্ড্রির জামাকাপড়র কথা ভুলে গিয়ে তাড়াতাড়ি নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলছে।
অগ্নুৎপাতের তীব্রতা এতো বেশি ছিল যে, দ্বীপের বেশিরভাগ বাসিন্দা জামাকাপড় ছাড়া আর বেশি কিছু নিয়ে যেতে পারেননি:
毎日動画:口永良部空撮:新岳噴火、避難する島民 – 毎日新聞 http://t.co/rHClcXK8Wb 爆発的噴火に襲われ、住み慣れた島を離れる住民たちの様子です。本社ヘリ、本社機から撮影した動画、静止画で構成しました。 pic.twitter.com/vX5E0KJBuV
— 毎日新聞映像グループ (@eizo_desk) May 29, 2015
মাইনিচি সংবাদের ফুটেজ থেকে: পাখির চোখে দেখা কোচিনেরাবু-জিমা: নতুন অগ্নুৎপাত শুরু হয়েছে। অগ্নুৎপাতের ভয় সবার মধ্যে ঢুকে পড়েছে। বাসিন্দারা এলাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছে। মাইনিচির সংবাদ সংস্থার হেলিকপ্টার থেকে ছবি নেয়া হয়েছে (ভিডিও আছে)।
এখনো নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি, কোচিনেরাবু-জিমার বাসিন্দারা কবে তাদের বাসায় ফিরতে পারবেন।
口永良部噴火:避難「年単位」も 牛とイモの島、募る不安
কোচিনেরাবুর অগ্নুৎপাত: দ্বীপের বাসিন্দাদের এক বছরের বেশিও বাইরে থাকতে হতে পারে। দ্বীপটি এখন গরু ও আলুর আবাস হয়ে গেছে। বাসিন্দারা কবে বাড়ি ফিরতে পারবেন, তা আল্লায় জানে।
আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের কিছু বিহ্বল করা ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
口永良部 噴火 pic.twitter.com/uenMA3ZTXQ
— T.Bell (@mon_suzu) May 29, 2015
কোচিনেরাবুর অগ্নুৎপাত।
屋久島にかかる火山灰雲。人工衛星から。 pic.twitter.com/4Ole98f7Nz
— 早川由紀夫 (@HayakawaYukio) May 29, 2015
স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া কোচিনেরাবুর অগ্নুৎপাতের ছাইয়ের চিহ্ন।
কাগোশিমারি উত্তর-পূর্ব অধিবাসীদের সৌভাগ্য যে, বাতাস কিউশু মেইনল্যান্ড থেকে অগ্নুৎপাতের ছাইকে দূরে পাঠিয়ে দিচ্ছে:
【5/29-11:45 TBC気象台】気象庁が発表した口永良部島の降灰予報によると、火山灰は火口から南東方向へと流れる見込みです。 pic.twitter.com/3H4SZOvl9D
— TBC東北放送 防災減災・災害情報 (@TBC_saigai) May 29, 2015
জাপানের আবহাওয়া দফতরের তথ্য থেকে জানা গেছে, কোচিনেরাবু-জিমার অগ্নুৎপাতের ছাই বাতাসে দক্ষিণ-পশ্চিমে চলে যাচ্ছে।
কিউশু আগ্নেয়গিরিতে যেকোনো সময় অগ্নুৎপাত ঘটতে পারে। এগুলো এখনো সক্রিয়। নিচের টুইটটি একবছর আগের। এখানে কোচিনেরাবু-জিমার আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের ঝুঁকি দেখানো হয়েছে:
九州の火山も要注意 桜島、口永良部は入山規制 桜島では2009年以降、活動が活発化し、翌年から4年連続で噴火回数が800回を超えた。#西日本新聞 http://t.co/iNxusHislz pic.twitter.com/Vdu0ayDFcf
— 花 「生活の党」応援 (@sakura1478) September 29, 2014
[ছবি ও চার্ট-এ উপর থেকে নিচে] কিউশু আগ্নেয়গিরি সক্রিয়তা:
কিজু (সবুজ)
আনজেন (সবুজ)
আসো (হলুদ)
কিরিশিমা (হলুদ)
সাকুরাজিমা (লাল)
সাতসুমা ইয়োজিমা (সবুজ)
কোচিনোরাবু (লাল)
সুয়ানোজ (হলুদ)আগ্নেয়গিরির সক্রিয়তা: ৩= লাল, ২= হলুদ, ১= সবুজ
কাগোশিমার সাকুরাজিমা এবং কোচিনোরাবু সক্রিয় আগ্নেয়গিরির তালিকায় রয়েছে। ২০০০ সালের পর থেকে সাকুরাজিমা আগ্নেয়গিরির সক্রিয়তা বাড়ছে। এবং গত চার বছরের মধ্যে ৮০০ বারের বেশি অগ্নুৎপাত ঘটেছে।
সারাবিশ্বের মধ্যে জাপানের কোচিনেরাবু-জিমা দ্বীপের আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের ঘটনাই সর্বসাম্প্রতিক। তবে কিউশু দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তের কাগোশিমা শহরের সাকুরাজিমা আগ্নেয়গিরি থেকে নিয়মিতভাবে অগ্নুৎপাতের ঘটনা ঘটে। পাশের শহরের বাসিন্দারা দিগন্ত সীমায় প্রায়ই এর দেখা পান।
কোচিনেরাবুর অগ্নুৎপাতের কয়েক সপ্তাহ আগে এখানে একদফা অগ্নুৎপাতের ঘটনা ঘটে। আর এই অগ্নুৎপাতের ছাই এখনো শহর জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে।
桜島の噴火。 今晩はこの辺でm(_ _)m pic.twitter.com/CqT2E6F8Ep
— 乗りテツ透析テツ(脱被曝) (@tohsekitetsu) May 22, 2015
সাকুরাজিমা অগ্নুৎপাত। আজ রাতে একে ঠিক এমন দেখাচ্ছিল।
m(_ _)m
কোচিনেরাবু-জিমা দ্বীপের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে। আর কাগোশিমার রাস্তায় সাকুরাজিমার ছাইয়ের আস্তরণ পড়ে রয়েছে:
帰ろうと思ったら俺の愛車が 火山灰にやられてた… pic.twitter.com/FBIpu5piHG — 田中 省吾 (@SkytreeShogo) May 29, 2015
আমি যখন বাড়ি ফেরার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি, তখন দেখলাম আমার গাড়ি আগ্নেয়গিরির ছাইয়ে ডুবে আছে।
বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী টুইট করেছে:
桜島の火山灰でキャンパス内は、こんな感じ。 pic.twitter.com/vAN3at3F5t
— Ryusuke IMURA (@tigers_1964) May 29, 2015
দেখুন আমাদের ক্যাম্পাসের অবস্থা কেমন হয়েছে। সাকুরাজিমার অগ্নুৎপাতের ছাইকে ধন্যবাদ।
সাকুরাজিমার অগ্নুৎপাত স্থানীয় বাসিন্দাদের বিড়ম্বনার কারণ হলেও কাগোশিমার পর্যটকদের কাছে এটা একটি দর্শনীয় বস্তু:
最終日、錦江高原ホテルで温泉日帰りで入ってきた。 桜島からモクモクと煙が出ていました。 写真は誰もいないとのことで撮影の許可を取ることができました(*^^*) pic.twitter.com/m3ilCPo8tW
— az (@azuchn2525) May 22, 2015
গতকাল আমরা কিনকো হাইল্যান্ড হোটেলে ছিলাম। আমাদের বাইরে গোসল সারতে হয়েছে। সাকুরাজিমার অগ্নুৎপাতের ছাইয়ে আকাশ উত্তাল ছিল। গোসল করার মতো কোনো জায়গা ছিল না। আশা করি, আমরা ছবি তোলায় কেউ মনক্ষুণ্ন হবেন না।
*^^*)
সাকুরাজিমার বিস্ফোরণ নতুন কোনো ঘটনা নয়। সুনামি এবং শত শত মানুষ হত্যা ছাড়াও ১৯১৪ সালে একটি ভয়াবহ অগ্নুৎপাতের ঘটনা ঘটে। যা কাগোশিমা এলাকার মানচিত্রই পাল্টে দেয়। কারণ এই বিস্ফোরণে একটি উপদ্বীপেরও সৃষ্টি হয়:
“The Sakurajima eruption in 1914, one of the biggest eruptions in history: http://t.co/ElXdaaVHTh #photography pic.twitter.com/liH7baQn7s” — Daniel Gennaoui (@DanielGennaoui) March 30, 2015
১৯১৪ সালের সাকুরাজিমা অগ্নুৎপাত। আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের ইতিহাসে এটি অন্যতম বৃহত্তম অগ্নুৎপাতের ঘটনা।