প্রবন্ধটি লিখেছেন আদনান আমির দ্য বেলুচিস্তান পয়েন্ট [2]‘র পক্ষে। শেয়ারিং এর নীতিমালা অনুযায়ী এখানে তা পুনঃপ্রকাশিত হয়েছে।
কোয়েটার অধিকাংশ বাসিন্দা, ছাত্র, রোগী এবং প্রাত্যহিক যাতায়াতকারীদের জীবন স্থবির হয়ে পড়ে যখন গত সপ্তাহে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এবং তার সফরসঙ্গীরা বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটাতে আসেন।
পরিসংখ্যান মতে, হাজার হাজার মানুষ প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে প্রভাবিত হন যখনই কোয়েটাতে খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা ভিআইপি আসেন এবং তাদের নিরাপত্তার জন্য রাস্তা বন্ধ থাকে। কোয়েটাতে প্রায় ১০ লাখ [3] লোক বাস করে। এ বছর পঞ্চম্বারের মতো কোন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির আগমন উপলক্ষ্যে রাস্তা বন্ধ করা হলো।
প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যেকার “সকল পার্টির সম্মেলনে [4]“অংশগ্রহণ করতে সকালে কোয়েটার পৌঁছেছেন। মাস্তাং গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে [5] পরিপ্রেক্ষিতে সভাটি আহ্বান করা হয়েছে, জঙ্গিদের জাতিগতভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সে হামলায় ২২জন পশতুন যাত্রী নিহত হন।
আলোচনার স্থান কোয়েটার গভর্নর হাউসের আশেপাশের সকল প্রধান সড়ক নিরাপত্তা অজুহাতে বন্ধ করে দেওয়া হয়। গত কয়েক বছর ধরে, যখনই একজন গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিবিদ অথবা ক্ষমতাধর মানুষ কোয়েটাতে আসেন [6], সাধারণ জনগণের জন্য সকল প্রধান সড়ক বন্ধ করে দেয়া হয়।
রাস্তা বন্ধ থাকবার কারণে শহরের বাইরে থেকে আসা যাতায়াতকারীদের দুই-তিন কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে শহরের কেন্দ্রের গন্তব্যস্থলে পৌছাতে হয়। সাধারণ যানবাহন শহরের কেন্দ্রে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়নি এবং যাত্রীদের রাস্তায় ব্লকের বাইরে নামিয়ে দিতে অধিকাংশ যানবাহন বাধ্য হয়।
শহরের প্রধান সান্দমেন প্রাদেশিক হাসপাতাল গভর্নর হাউসের কাছাকাছি অবস্থিত হওয়ায় রোগী এবং অন্যান্যদের দীর্ঘ মর্মান্তিক সময় অতিবাহিত করতে হয়, হাসপাতালে পৌঁছাবার পূর্বে।
“আমি একটি জরুরী সংবাদের জন্য কালাত জেলা থেকে কোয়েটাতে এসেছি কিন্তু রাস্তা বন্ধ করার কারণে আমি সময়মত আমার গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে না।” মুর্তজা বালোচ, বালুচিস্তান পয়েন্টকে জানান। তিনি আরও বলেন, “এখন আমাকে অন্য কোন দিন কোয়েটা ফিরে আসতে হবে এবং এটা আমার জন্য বিশাল মানসিক চাপ।”
শহরের তিনটি প্রধান স্কুল সেন্ট ফ্রান্সিস গ্রামার স্কুল, সেন্ট জোসেফ কনভেন্ট স্কুল এবং সেক্রেড হার্ট স্কুল প্রশাসনের চাপে ছুটির দিন ঘোষণা করতে বাধ্য হয়। স্কুলগুলো প্রধানমন্ত্রীর ব্যবহৃত রাস্তায় হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
“যখনই আমাদের প্রধানমন্ত্রী শহরে আসেন, আমার মেয়ের স্কুল জীবনের একটি দিন নষ্ট হয় কারণ সেদিন স্কুল বন্ধ থাকে,” , জানালেন কোয়েটাবাসী সালিম হায়দার।
প্রধানমন্ত্রী আসার দিন, মুহাম্মদ সিদ্দিক, যানজটে আটকা পড়া একজন গাড়ি মালিক বললেন যে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক এবং ভিআইপিদের চলাচল শহরের মিলিটারী ক্যান্টনমেন্টের অতি নিরাপত্তার মাঝে সীমাবদ্ধ হওয়া উচিত। “প্রধানমন্ত্রী ও বেলুচিস্তান সরকারের কোয়েটাবাসীদের জন্য কোনো উদ্বেগ থেকে থাকলে,” সিদ্দিক বলেন, “তারা কোয়েটা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় তাদের আলাপ আলোচনা চালান এবং অপ্রয়োজনীয় মানসিক চাপ থেকে আমাদের মুক্তি দেন।”