জাপানের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবর বেরিয়েছে, সামাজিক বিজ্ঞান ক্লাসে ফ্যামিকম নিয়ে পড়ানো হচ্ছে। আর সে খবরে অনেকেই নিজেদের স্মৃতিময় দিনে ফিরে গেছেন। উল্লেখ্য, নিনটেনডো গেমিং কনসোল ফ্যামিকম ১৯৮৩ সালে রিলিজ হয়েছিল।
সামাজিক বিজ্ঞান ক্লাসের পড়ানোর খবরটি প্রথম ছড়িয়ে পড়ে টুইটার ব্যবহারকারী মরিটেপ্পি'র একটি টুইট থেকে। তার টুইটটি ৩২,০০০ বার রিটুইট হয়েছে:
六年生の子が「あ、ファミコンだ!」と言うので「その年で知らんだろ」と言ったら「知ってるよ!社会で習った」と言われる。 _人人人人人人人人人人人人_ > 社会で習った! <  ̄Y^Y^Y^Y^Y^Y^Y^Y^Y^Y^Y ̄ pic.twitter.com/RuTXMWW1q8
— 森哲平 (@moriteppei) May 6, 2015
আমার মেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। সে আমার পুরোনো গেমিং কনসোল দেখে বললো, “এটা ফ্যামিকম”। আমি ওকে বললাম, “তুমি তো খুব ছোট, ফ্যামিকমের নাম কীভাবে জানলে।“ সে আমাকে বললো, “অবশ্যই আমি এর নাম জানি। স্কুলের সামাজিক বিজ্ঞান ক্লাসে আমরা এটা সম্পর্কে জেনেছি।”
কী? ওরা স্কুলের সামাজিক বিজ্ঞান ক্লাসে ফ্যামিকম সম্পর্কে পড়াশোনা করছে???
জাপানের পপ কালচারে অরিজিন্যাল নিনটেনডো গেইম কনসোল বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে।
১৯৯৩ সালে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে জাপান এবং ইংরেজিভাষী দেশগুলোতে প্রায় ৬২ মিলিয়ন ফ্যামিকম গেমিং কনসোল বিক্রি হয়েছে।
জাপানের অনেক মানুষ, এখন যাদের বয়স ৪০ বছর এবং বাচ্চাকাচ্চা’র বাবা-মা, ফ্যামিকম তাদেরকে ছেলেবেলার দিনগুলোতে নিয়ে গেছে। তারা যেন আবার ১৯৮০ সালের স্বর্ণালি সময়ে ফিরে গেছেন।
তবে গত মাসে মরিটেপ্পি টুইট করার আগেও এপ্রিল মাসে অন্য একজন টুইটার ব্যবহারকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ্যবইয়ে ফ্যামিকম সংযোজিত হওয়ার কথা জানান। উল্লেখ্য, এপ্রিল মাসে জাপানে স্কুলের ক্লাস শুরু হয়।
昨日新しくもらってきてた小3の子どもの社会の教科書みてたら。昔のくらしのページにファミコンで遊ぶ子どもの写真のってた…。今の子にとったらファミコンが昔の暮らしなんやね。懐かしいけど遊んだけど。
— ゆり (@swingingYrtm) April 9, 2015
গতকাল আমার মেয়ে স্কুল থেকে সামাজিক বিজ্ঞানের নতুন বই বাড়িতে নিয়ে এসেছে। বইয়ের একটি অধ্যায়ে অতীতে মানুষজন কেমন জীবন যাপন করতো, তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সেখানে বাচ্চা’রা ফ্যামিকম গেইম খেলছে তার একটি ছবি রয়েছে। সেই সময়ে বাচ্চাদের কাছে ফ্যামিকম ছিল জীবনের একটি অংশ। এটা আমাকে স্মৃতিকাতর করে দিলো…
বাবা-মা’রা নস্টালজিক হলেও স্বীকার করে নিয়েছেন যে, ২০১৫ সালের বাচ্চাদের কাছে ১৯৮০ সালে তাদের ছেলেবেলাকে “প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ মতোই” মনে হবে:
いや~まじで3年生の社会科の教科書に「ファミコン」が「お父さんお母さんの時代の~」て書かれてて、うんわ~~~~まじか~~~~確かに古いけどまるで遺物写真のように感じてしまってもう昭和ってそうなんか~~~~~
— かじか (@kajikatohituji) May 6, 2015
বাহ্, তৃতীয় শ্রেণি’র পাঠ্যবইয়ে ফ্যামিকমকে “তোমাদের বাবা-মা’র ছেলেবেলার কিছু” হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না। এটা অনেক আগের ঘটনা। তবে পাঠ্যবইয়ে ফ্যামিকমের ছবি দেখে আমার কাছে “প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ মতোই” মনে হলো। আমার কাছে ১৯৮০ সালকে বর্তমানে এমনই মনে হয়।
অরিজিন্যাল ফ্যামিকম গেইম কনসোল দেখতে পুরোনোদিনের খেলনার মতো:
社会で…習った…?!授業で…?もしかしてベーゴマとかメンコみたいにファミコンも「昔の遊び」扱いされてるの?!
— kga152 (@kga152) May 6, 2015
সামাজিক বিজ্ঞান শ্রেণিকক্ষে তারা ফ্যামিকম সম্পর্কে পড়াশোনা করছে? তারা এ থেকে শিখবে যে, এখন যেমন তারা বেইগোমা (ঘূর্ণন জাতীয় খেলনা) এবং মেনকো (তাস জাতীয় খেলা) নিয়ে খেলে, তেমনি “অতীতে বাচ্চাকাচ্চারা যেসব গেইম নিয়ে খেলতো, তার একটি এটি।”
১৮৮৯ সালে বাচ্চাদের জন্য খেলার কার্ড বানানোর মধ্যে দিয়ে নিনটেনডো’র যাত্রা শুরু হয়। এর প্রধান কার্যালয় জাপানের কিয়োটো-তে অবস্থিত।
টুইটার ব্যবহারকারী আজেমিন পুরো ঘটনার সার-সংক্ষেপ তুলে ধরেছেন:
ファミコンが社会の教科書に出ているとは。歴史上の出来事になっているとは。当時遊んでいた人々も大袈裟だが、歴史上の人物と同等の扱いになってしまうのか。小学生にとってはファミコンは遊ぶものでは無くて、学校で勉強するもの。すごい時代になったと痛感する。
— azemin (@azemin) May 6, 2015
আমাদের ইতিহাসের অংশ হিসেবেই ফ্যামিকম পাঠ্যবইয়ের পাতায় স্থান করে নিয়েছে। আমরা যারা নিনটেনডো খেলে বড় হয়েছি, তাদের কাছে ফ্যামিকমের এই ঐতিহাসিক চরিত্র হয়ে ওঠা একটা বিশাল পাওয়া। এখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা জানবে, ফ্যামিকম শুরু একটা খেলনা নয়, এটা আরো বেশি কিছু। কী চমৎকার একটা সময়ে আমরা আছি।