
কামসুত্রের ছবি প্রকাশের দায় কাঁধে নিয়ে সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন জাবের আল হারমি। এই ছবিটি কাতারের আল শারক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল।
কাতারি সম্পাদক জাবের আল হারমি আজ তার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগের কারণ, ভুল করে তার পত্রিকা আল শারক-এর স্বাস্থ্য বিষয়ক সাময়িকীর পাতায় কামসুত্রের মেহদির ছবি প্রকাশিত হয়েছিল। প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, একজন নারীর হাতের একটি ছবিতে ছোট ছোট অনেকগুলো মেহদি আঁকা। আর সেখানকার সেই অঙ্কনকর্মে নারী-পুরুষের যৌন মিলনের দৃশ্য রয়েছে। উল্লেখ্য, প্রকাশিত ওই নিবন্ধে মেহেদির ব্যবহারের বিপদ সম্পর্কে সচেতন করা হয়েছিল।
আল হারমি ঘটনার পরেই পত্রিকায় চিঠি লিখে ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তাছাড়া রক্ষণশীল মুসলিম দেশে এই ধরনের অশ্লীল ছবি প্রকাশের দায়দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নেন।
দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে পদত্যাগের মতো সাহসী সিদ্ধান্ত নেয়ায় কাতারের নেটিজেনরা তার প্রশংসা করেছেন। তারা “আল হারমি, আপনার পদত্যাগ গ্রহণ করা হবে না” শীর্ষক হ্যাশট্যাগ দিয়ে তার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
আল হারমি ২৫ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশায় জড়িত রয়েছেন। তবে পত্রিকাটি তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছি কিনা তা জানা যায়নি।
এই টুইটার ব্যবহারকারী তার অনুসরণকারীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন:
#الحرمي_استقالتك_مرفوضة
كمغرد ارفضها أستاذ
اعجبتني شجاعتك والاعتراف في وقت كثير جدا يفتقدون الاعتراف بالخطأ
لهذا
استقالتك مرفوضة أستاذ
— ✳ الأدعم#قطر (@sul535) June 1, 2015
একজন টুইটার ব্যবহারকারী হিসেবে আমি আপনার পদত্যাগ প্রত্যাখান করলাম। আমি আপনার সাহসের তারিফ করি। অন্যরা যেখানে স্রেফ অস্বীকার করে বসে, সেখানে আপনি ভুল স্বীকার করে নিয়েছেন। এজন্যই আমি আপনার পদত্যাগকে প্রত্যাখান করছি।
টুইটারে ফয়সাল বিন জসিম আল থানি তার ২৬৭০০ অনুসরণকারীর উদ্দেশ্যে বলেছেন:
استقالة الاستاذ جابر
دليل انه شخصية امينة
تتحمل مسئولياتها بشجاعة
وتقدر الامور حق قدرها
وقد استطاع عمل نقلة بالصحيفة
#الحرمي_استقالتك_مرفوضة
— فيصل بن جاسم ال ثاني (@althani_faisal) June 1, 2015
জনাব জাবেরের পদত্যাগ এটাই প্রমাণ করে তিনি একজন সৎ মানুষ। তাছাড়া তিনি অবস্থা বিবেচনা করে সব ধরনের দায়িত্ব নিজ কাঁধে নেয়ার সাহসও রাখেন। তিনি সংবাদপত্রের জগতকে বদলে দিয়েছেন।
আল হারমি ছেলে সালেম স্বীকার করেছেন:
لم أرى في حياتي شخص أحب مهنته مثل ابوي، وان سألته لماذا؟ يقول: كل يوم شيء جديد وتحدي جديد. ٢٥ سنة اتممها في الصحافه #الحرمي_استقالتك_مرفوضة
— سالم جابر الحرمي (@SalemAl7rmi) June 1, 2015
আমি আর কাউকেই দেখিনি আমার বাবার মতো কাজকে এমনভাবে ভালোবাসতে। আপনি তার কাছে গিয়ে যখন জিজ্ঞেস করবেন, কেন তিনি কাজকে এমন ভালোবাসেন, তিনি বলবেন: এখানে প্রতিদিনই নতুন কিছু শেখার আছে, আছে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জও। তিনি ২৫ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশায় আছেন।
কাতারের অধিবাসী ডেভ ম্যাকক্লুয়ার প্যারাগ্লাইডারের পুরোনো একটি পোস্টে রক্ষণশীল মুসলিম দেশে যৌনতা নিয়ে কথা বলার বিপদ সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিয়েছেন:
The government takes the view that pornography is anti-Islamic and should not be allowed in the country. Possession of pornographic material can result in severe penalties, including imprisonment and deportation. Pornography is treated in much the same way as illegal drugs, with similar consequences if caught.
সরকার পর্নোগ্রাফি দেখাকে ইসলামবিরোধী মনে করে। এজন্য তারা দেশে সেগুলো প্রদর্শনের অনুমতি দেয় না। পর্নোগ্রাফি সংশ্লিষ্ট কোনো কিছুর সাথে যুক্ত থাকলে জেল-জরিমানা হতে পারে। এমনকি নির্বাসন পর্যন্তও দেয়া হতে পারে। পর্নোগ্রাফির সাথে জড়িত থাকলে অবৈধ মাদক-সহ ধরার পড়ার যে শাস্তি সেরকম শাস্তি ভোগ করতে হয়।