- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

ফেসবুকে বিক্রি হচ্ছে সিরিয়ার প্রাচীন শিল্পকর্ম

বিষয়বস্তু: মধ্যপ্রাচ্য ও উ. আ., সিরিয়া, ইতিহাস, নাগরিক মাধ্যম, যুদ্ধ এবং সংঘর্ষ, শিল্প ও সংস্কৃতি
Looted ancient coins from Syria on sale on Facebook. Photograph shared by @zaidbenjamin on Twitter

সিরিয়া থেকে চুরি করা প্রাচীন মুদ্রা ফেসবুকে বিক্রি হচ্ছে। টুইটারে ছবিটি শেয়ার করেছেন জায়েদ বেনজামিন।

সিরিয়ার প্রাচীন শিল্পকর্ম বিক্রি করার উদ্দেশ্যে ফেসবুকে পোস্ট দেয়া হয়েছে। শিল্পকর্মগুলো তুরস্ক থেকে সংগ্রহ করে নিতে হবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি’র সাংবাদিক জায়েদ বেনজামিন ফেসবুকে বিক্রি সংক্রান্ত পোস্টটির স্ক্রিনশট দিয়ে বিষয়টি সবার নজরে এনেছেন।

সিরিয়ার প্রাচীন শিল্পকর্ম বিক্রির আরো একটি ফেসবুক পেজ। তুরস্ক থেকে সংগ্রহ করে নিতে হবে।

মিশরের সীমা দিয়াবের সরস মন্তব্য:

সিরিয়ার প্রাচীন শিল্পকর্ম বেচাকেনার বাজার আছে? ফেসবুকে দেখুন। জমজমাট বাজার সেখানে।

স্বাভাবিকভাবেই সীমা ফেসবুকের যে পেজটির লিংক দিয়েছেন, সেটা বন্ধ হয়ে গেছে।

A screen shot of a page which used to allegedly sell Syrian antiques on Facebook is no longer available

ফেসবুকে সিরিয়ার প্রাচীন শিল্পকর্ম বিক্রির স্ক্রিনশট। পেইজটিতে এখন আর ঢোকা যাচ্ছে না।

আরো পড়ুন:
আইএসআইএস-এর পাচারকারীরা সিরিয়ার ধ্বংসস্তুপ থেকে প্রাচীন শিল্পকর্মগুলো লুট করে নিয়েছে। আর সেগুলোর প্রত্যেকটি এক মিলিয়ন ডলার করে বিক্রি করছে। [7]

একটি সংবাদ প্রতিবেদনে [7] বলা হয়েছে, আইএসআইএস-এর জঙ্গীরা লুট করা প্রাচীন শিল্পকর্মগুলো অনলাইন এবং মধ্যস্থতাকারী’র মাধ্যমে পশ্চিমা এবং প্রতিবেশী উপসাগরীয় দেশের জাদুঘরের কাছে বিক্রি করে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার লাভ করছে।

Syrian antiques on sale on Facebook. Photograph shared by @zaidbenjamin on Twitter

সিরিয়ার প্রাচীন শিল্পকর্ম ফেসবুকে বিক্রি হচ্ছে। টুইটারে ছবিটি শেয়ার করেছেন জায়েদ বেনজামিন।

দ্য ডেইলি মেইল দাবি করেছে, আইএসআইএস-এর স্বঘোষিত রাজধানী সিরিয়ার রাক্কা থেকে ১০,০০০ বছরের পুরোনো শিল্পকর্মগুলোর প্রত্যেকটি এক মিলিয়নেরও বেশি ডলারে বিক্রি হচ্ছে। তারপর সেগুলো সিরিয়া ও ইরাক হয়ে তুরস্ক এবং লেবাননে পাচার করে দেয়া হচ্ছে।

Syrian gold coins on sale on a Facebook page. Photograph shared on Twitter by @zaidbenjamin

সিরিয়ার প্রাচীন স্বর্ণমুদ্রা ফেসবুকে বিক্রি হচ্ছে। টুইটারে ছবিটি শেয়ার করেছেন জায়েদ বেনজামিন।

আইএসআইএস এবং আল কায়েদা গত কয়েক মাসের মধ্যে সিরিয়া এবং ইরাকের বিপুল পরিমাণ ভূখণ্ড দখল করে নিয়েছে। তারা ভূমি দখল করতে করতে যেখানে যাচ্ছে পিছনে রেখে যাচ্ছে ভয়াবহ ধ্বংসের স্মৃতি। তারা যেসব এলাকা দখল করছে সেখানেই “বিরুদ্ধ মতবাদ” উপড়ে ফেলছে এবং “ধর্মত্যাগ”-এ বাধ্য করছে। তাদের হাত নিস্তার পাচ্ছে না সভ্যতার আদি নিদর্শন ও প্রাচীন সময়ের সমৃদ্ধ ইতিহাসও।

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান এবং সংস্কৃতি বিষয়ক সংগঠন ইউনেস্কো’র সিরিয়ার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সুরক্ষা [8] বিষয়ক একটি পাতা আছে। সেখানে গত চার বছরে সিরিয়ার যুদ্ধে কী পরিমাণ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যসমূহ ধ্বংস হয়ে গেছে, তার বিবরণ তুলে ধরেছে।

ইউনেস্কো’র তথ্যমতে:

Illegal excavations and looting have exponentially increased since the beginning of the conflict in Syria. These actions have damaged many historical sites and museums, and important Syrian cultural property has disappeared from the country to end up on the black market and/or in private collections.

Numerous archaeological sites in Syria are being systematically targeted for clandestine excavations by well-organized and often armed groups. Excavated archaeological objects of cultural significance make a lucrative trade for unscrupulous dealers operating both locally and internationally. Sites situated near the borders are, in general, more susceptible to being targeted by looters who take advantage of their location to quickly and illegally export artefacts out of Syria.

সিরিয়ায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই অবৈধ খনন এবং লুটপাত ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। এর ফলে অনেক ঐতিহাসিক স্থাপনা, জাদুঘরের ক্ষতি হয়েছে। নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে সিরিয়ার সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক সম্পদ। সেগুলো এখন ব্যক্তিগত সংগ্রহশালায় অথবা কালোবাজারে পাওয়া যাচ্ছে।

সিরিয়ার বেশ কয়েকটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান ধারাবাহিকভাবে সুসংগঠিত এবং সশস্ত্র গোষ্ঠী কর্তৃক আক্রান্ত হয়েছে। তারা সেখানে খনন কার্যক্রম চালিয়ে ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলো সংগ্রহ করে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পাচারকারীদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। তাছাড়া প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো লুট করতে তারা বেছে বেছে সীমান্তবর্তী এলাকার স্থানগুলোকেই লক্ষ্যবস্তু করছে, যাতে করে খুব সহজেই সেগুলো বাইরে পাঠিয়ে দেয়া যায়।

তাছাড়া জাদুঘরের ক্ষয়ক্ষতির পরিসংখ্যান জানা যাবে জাদুঘর সংশ্লিষ্ট পেজটির মন্তব্যে:

Most of the damage to museums in Syria has occurred in the north-western region of the country, where there have been incidents of looting of valuable cultural property, and many works of art are currently unaccounted for. A large number of museums have also had their infrastructure damaged as a result of being caught in the armed conflict.

সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জাদুঘরগুলোতেই সবচে’ বেশি ক্ষতি হয়েছে। সেখানকার মূল্যবান সাংস্কৃতিক সম্পদ ছাড়াও আরো কতো শিল্পকর্ম যে চুরি গেছে তা এখনো হিসাব করা হয়নি! আবার সশস্ত্র যুদ্ধে অনেক জাদুঘরের অবকাঠামোরও ক্ষতি হয়েছে।

আরো পড়ুন:

আইএসআইএস ইরাক ও সিরিয়ার ইতিহাস ধ্বংস করছে [9]

এদিকে সিরিয়ানদের মানবিক ক্ষয়ক্ষতি বাদ দিয়ে ঐতিহাসিক স্থাপনাসমূহের ধ্বংস নিয়ে বেশি বেশি আলোচনায় অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

লিয়াম স্ট্যাক মন্তব্য করেছেন:

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সিরিয়ার কর্মকর্তা পালমেইরার জাদুঘর থেকে কিছু প্রাচীন শিল্পকর্ম সরিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু সেখানকার অধিবাসীদের শহর থেকে চলে যাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করেননি।

খালেদ দিয়াব সতর্ক করেছেন:

সিরিয়ার জীবনাশের ঘটনার দিকে পশ্চিমাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ থাকলেও আইএসআইএস যে পালমেইরা ধূলিসাৎ করে দেয়ার দিকে দ্রুত এগুচ্ছে সেদিকে কারো খেয়াল নেই।