মায়ানমারে প্রস্তাবিত শিক্ষা আইনের বিরুদ্ধে আয়োজিত বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার করণে গ্রেপ্তার করা সত্তর জন ছাত্রছাত্রীকে কারাগারে বন্দী করে রাখা রয়েছে, সমালোচকদের মতে যা কেন্দ্রীয় সরকারকে দেশটির উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ক্ষমতা প্রদান করবে। বেশিরভাগ ছাত্রকে ১০ মার্চ, ২০১৫- তারিখের পুলিশী অভিযানের সময় গ্রেফতার করা হয়েছে।
গত বছর দেশটির বিভিন্ন সড়কে বেশ কয়েকটি বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয় যখন এই আইনটি পাশ করার পদক্ষেপ হিসেবে একে সংসদে উপস্থাপন করা হয়। এই সকল বিক্ষোভ প্রদর্শনের কারণে, আইন প্রণেতারা বেশ কিছু ছাত্র সংগঠনকে তাদের সাথে আলোচনায় বসার আহ্বান জানায়। গত মাসে এই আইনটি অনুমোদিত হয়েছে, কিন্তু নতুন করে খসড়া করা এই আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অব্যহত রয়েছে।
গত মার্চে ছাত্র মিছিলে হামলা চালিয়ে তা নির্মম ভাবে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার ঘটনা জনতার মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার করে, যার ফলে সরকার বাধ্য হয় এই ঘটনার তদন্তে এক কমিটি গঠনের কথা ঘোষনা করে। বিশ্ব জুড়ে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এবং ছাত্ররা বিক্ষোভকারী ও ছাত্রছাত্রীর মুক্তি দাবী জানিয়েছে।
মায়ানমারের আটক ছাত্রদের দ্রুত মুক্তির দাবির সাপেক্ষে গড়ে ওঠা এই আন্দোলনে সমর্থন দাতার মধ্যে একজন হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিস্কোতে বাস করা শিল্পী কেনেথ ওয়াং। মায়ানমারের এই প্রাক্তন ছাত্র, একজন একটিভিস্ট হিসেবে ঐতিহাসিক ১৯৮৮ সালের গণজাগরণে যোগ দিয়েছিল, তিনি কারাগারে আটক ছাত্রদের জন্য শোকার্ত, সংসদে সেই আইনের বিষয়ে যাদের নিজের কণ্ঠস্বর তুলে ধারার সুযোগ খুব সামান্য, যা তাদের শিক্ষা জীবনকে প্রভাবিত করবে।
এই ঘটনার প্রতি একাত্মতা প্রদর্শনের জন্য তিনি কারাবন্দী পাঁচজন ছাত্রের ডিজিটাল প্রতিকৃতি অঙ্কন করেছেন, যা ইন্টারনেটে ব্যাপক ভাবে প্রদর্শিত হয়। গ্লোবাল ভয়েসেসকে প্রদান করা এক ইমেইল সাক্ষাত্কারে, ওয়াং বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন, যেন তারা গ্রেপ্তারকৃত ছাত্রদের বিষয়ে কথা বলে এবং মায়ানমার সরকারের কাছে এর জন্য জবাবদিহিতা দাবী করে:
২৫ বছর পর আমি এই সকল তরুণ ছাত্রছাত্রীদের দেখে অন্তরে বেদনা অনুভব করছি-এরা আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ- সংস্কারের দাবীতে যাদের প্রচণ্ড মূল্য প্রদান করতে হচ্ছে। আমি চাই না তাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়টা কারাগারে কাটুক। আমি মনে করি তাদের শ্রেণীকক্ষে থাকা উচিত, কারাগারে নয়। আর এ কারণে আমি তাদের প্রতিকৃতি অঙ্কন করেছি।