- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

ভূমিকম্পের আগে ও পরের ছবিতে ফুটে উঠলো নেপালের ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলোর প্রকৃত অবস্থা

বিষয়বস্তু: দক্ষিণ এশিয়া, নেপাল, ইতিহাস, দুর্যোগ, নাগরিক মাধ্যম
Historical Monuments after the earthquake at Kathmandu Durbar Square. Image by Ajaya Manandhar. Copyright Demotix (25/4/2015) [1]

ভূমিকম্পের পরে ঐতিহাসিক স্থাপনা কাঠমান্ডু দরবার স্কয়ার। ছবি তুলে অজয়া মনন্ধর। স্বত্ত্ব: ডেমোটিক্স (২৫/৪/২০১৫)।

গত ২৫ এপ্রিল ২০১৫ নেপালে ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে ৭ হাজারের [2] বেশি মানুষ মারা গেছেন। আহত হয়েছেন এর দ্বিগুণেরও বেশি। তবে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৮ মিলিয়ন [3]। এদের মধ্যে কমপক্ষে ২ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

ভূমিকম্পে শুরু মানুষ মারা যায়নি কিংবা সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। নেপালের ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাগুলোরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে কয়েকটি ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। বার্তা সংস্থা এপি’র সাথে সাক্ষাৎকারে [4] ইউনেস্কোর প্রধান আইরিনা বোকোভা বলেছেন, নেপালের ধ্বংসস্তুপ দেখে হৃদয় ভেঙ্গে যাচ্ছে। এগুলো সবই হিন্দু ও বৌদ্ধ সংস্কৃতির অংশ ছিল।

এইসব ঐতিহ্যবাহী ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো আগে ও পরের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা পোস্ট করেছেন।

কাঠমান্ডু ভ্যালিতে তিনটি দরবার স্কয়ার ছিল। এগুলো হলো কাঠমান্ডু দরবার স্কয়ার [5], পাটান দরবার স্কয়ার [6] এবং ভক্তপুর দরবার স্কয়ার [7]। সবগুলোরই ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রাচীন এই মন্দিরগুলো আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে বছরখানেকও বেশি সময় লাগবে।

এটা আমার হৃদয় ভেঙে দিয়েছে। নেপালের ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোর একটি বসন্তপুর দরবার স্কয়ার। আগে ও পরের ছবি দেখা যাচ্ছে।

নেপালের ভক্তপুরের একটি মন্দির। ভূমিকম্পের আগে ও পরের অবস্থা। প্রথম ছবিটি মাত্র দু’সপ্তাহ আগে নেয়া।

ভীমসেন টাওয়ার নামে পরিচিত ধারাহারা [17]নেপালের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ভীমসেন থাপা নির্মাণ করেছিলেন। এটি আগে তের তলা মিনার বিশিষ্ট ছিল। ১৯৩৪ সালের ভূমিকম্পে এটি ধ্বংস হয়ে যায়। পরে এটি নয়তলা টাওয়ার করে বানানো হয়েছিল। কিন্তু এবারের ভূমিকম্পে সেটিও ধ্বংস হয়ে গেছে।

ধারাহারা টাওয়ার: আগে পরে আগে পরে। #নেপালকোয়েক।

বিদেশিদের কাছে স্বয়ম্ভুনাথের [21] পরিচিত বানর মন্দির (মাঙ্কি টেম্পল) নামে। এই মন্দিরও ধ্বংস হয়েছে।

ধ্বংসপ্রাপ্ত মন্দিরের পাশ দিয়ে একজন ভিক্ষু হেঁটে যাচ্ছেন। স্বয়ম্ভুনাথ ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐহিত্যের অংশ।

স্বয়ম্ভুনাথের দর্শনীয় দৃশ্য। এটি মাঙ্কি টেম্পল নামেরও পরিচিত।

বাগমাটি নদীর তীরে অবস্থিত সুন্দর মন্দিরগুলোর একটি হলো কালমোচন মন্দির [29]। এটিও মাটিতে মিশে গেছে।

নেপালের কাঠমান্ডু’র কালমোচন। এটি আমার খুব পছন্দের একটি মন্দির ছিল। শুভ সকাল  #হ্যালোমানডে #টেম্পল #আর্কিটেকচার #ভিজিটনেপাল

থাপাথালি শহরে মুঘল শৈলীতে নির্মাণ করা হয়েছিল কালমোচন মন্দির। জং বাহাদুর এটি নির্মাণ করেছিলেন। সেখানে এখন শুধুমাত্র গরুড় পাহারায় আছে।

ষষ্ঠী ব্রতকথা’র তীর্থযাত্রীদের [38] মাঝে সানখু এলাকা বেশ জনপ্রিয় ছিল। এখানে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

নেপালে থাকার সময়ে আমি সানখুতে বাস করেছিলাম। ভূমিকম্প এখানে ব্যাপক ক্ষতি করেছে। আগে ও পরের ছবি দেখে আমি দু:খে মারা যাচ্ছি।

কাঠমান্ডু ভ্যালির কয়েক কিলোমিটার দূরে চাঙ্গু নারায়ণ মন্দির অবস্থিত। এটিও জাতিসংঘ ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। এখানেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

চাঙ্গু নারায়ণের কিছু অংশ এখনো দাঁড়িয়ে আছে। তবে এর প্রাঙ্গনে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এখন এটির পুনর্নির্মাণ দরকার। #নেপালেরভূমিকম্প

নেয়ার (Newar) সংস্কৃতির উন্মুক্ত জাদুঘর হলো খোকানা অঞ্চল, এখানকার বিস্তৃত এলাকার ক্ষয়ক্ষতির ছবি দেখিয়েছেন।

অপরূপ নেপাল! আজকে সকালে খোকানা থেকে তোলা!

নেপালের খোকানার ধ্বংসস্তুপ থেকে সামীর ছাগলের দু’টি বাচ্চা নিয়ে ফিরছেন। #নেপালকোয়েক

বাঙ্গামাটির [52]প্রাচীন স্থাপনাগুলোতেও ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।

হৃদয় বিদারক ঘটনা! বাঙ্গামাটি মন্দির: আগে ও পরের ছবি। #নেপালআর্থকোয়েক #নেপালকোয়েক

কাঠমান্ডু ভ্যালির কাছে হিমালয়ের কোলে ল্যাংট্যাং গ্রামের অবস্থান। এই জায়গাটা পর্বতারোহীদের খুব প্রিয়। ভূমিকম্পে জায়গাটা একদম ধ্বংস হয়ে গেছে।

২৫ এপ্রিল ভূমিকম্পের আগে ও পরে নেপালের ল্যাংট্যাং গ্রাম:

গোর্খা শহরের খুব সুন্দর একটি জায়গা হলো বারপাক [57]। এই গ্রামটিই ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল। ব্রিটিশ, ভারতীয় এবং নেপাল সেনাবাহিনীতে কাজের জন্য এখানকার মানুষদের বেশ সুনাম ছিল। গ্রামটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে।

বারপাকের পুরোনো ছবি থেকে বুকের ভিতরে মোচড় দিয়ে উঠলো। ভূমিকম্প একে ধ্বংস করে দিয়েছে।

ভূমিকম্প নেপালে ব্যাপক ক্ষতচিহ্ন রেখে গেছে। যেগুলো বেঁচে গেছে, সেগুলো সংরক্ষণ করতে এখন দরকার [63] বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন মানুষ। তবে এই ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ সত্ত্বেও, নেপালের মানুষ আশা হারায়নি। তারা একদিন ঠিকই এই ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো পুনর্নির্মাণ করতে সক্ষম হবে।

শশী রাজ পান্ডে টুইট করেছেন:

নেপালের মানুষের মধ্যে বিপুল আশার উপস্থিতি দেখতে পাচ্ছি। ধ্বংসযজ্ঞের ভেতরেও পুনর্নির্মাণের স্বপ্ন দেখছে তারা। #নেপালকোয়েক