প্রতিবাদকারীদের প্রতি “ভীতিপ্রদর্শন এবং সহিংসতার” দায়ে মিসরের সাবেক প্রেসিডেন্ট মুরসিকে ২০ বছরের কারাদন্ড

A banner which reads: "The revolution continues; Morsi will be back," seen in Giza this morning. Photograph shared on Twitter by @Ikhwanweb, the Twitter account of the Muslim Brotherhood in Egypt

ব্যানারে লেখা রয়েছেঃ “বিপ্লব চলছে; মুরসি ফিরে আসবেন”। আজ সকালে গিজায় ব্যানারটি দেখা গেছে। মিসরে মুসলিম ব্রাদারহুডের টুইটার একাউন্ট থেকে ছবিটি টুইটারে শেয়ার করেছেন @ইখওয়ানওয়েব।

গনতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত মিসরের প্রথম প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে আজ মিসরে ২০ বছরের কারাদন্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করা হয়েছে। ২০১২ সালে প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে “ভীতিপ্রদর্শন এবং সহিংসতার অপরাধে” তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। তবে প্রতিবাদকারীদের হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

মুসলিম ব্রাদারহুডের সদস্য মুরসি বিপ্লবের পর এক বছরের জন্য মিসরের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এ বিপ্লবে হুসনি মোবারককে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছিল। হুসনি মোবারক গত ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মিসর শাসন করেছেন। মুরসিকে বিতাড়নের জন্য ব্যাপক আন্দোলন সংগ্রাম চালানোর পর ২০১৩ সালে তাঁর শাসনামলের অবসান ঘটানো হয়। এরপর মিসরীয় সেনাবাহিনীর কমান্ডার ইন চিফ এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জেনারেল আব্দুল ফাতাহ এল সিসির নেতৃত্বের অধীনে মিসরীয় সেনাবাহিনী ক্ষমতাসীন হয়। পরবর্তীতে তিনি মিসরের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন।

কায়রো ভিত্তিক সাংবাদিক বেল ট্রু আদালতের কার্যবিবরনী টুইট করেছেনঃ

ব্রাদারহুড নেতৃবৃন্দ মোহাম্মাদ আল-বেলতাগি, এসাম আল-ইরিয়ান এবং আবদেল-আরতি দাঁত বের করে হাসছিলেন, হাত নাড়ছিলেন, কাঠগড়ায় বন্দী অবস্থায় রাবা অভিবাদন (সামরিক ক্যু বিরোধী প্রতীক) জানাচ্ছিলেন।

মুরসি এখন বিচারকের ডেস্কের কাছে এবং সাংবাদিকদের থেকে দূরে অবস্থিত কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আছেন। উপস্থিত পুলিশকে পাস কাটিয়ে তাঁর ছবি নিতে ক্যামেরাম্যান সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

কারাদন্ড প্রাপ্ত ব্রাদারহুড নেতারা যারা অপসারিত প্রেসিডেন্ট মুরসির কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন, তারা শব্দনিরোধক দেয়ালের মধ্য দিয়ে তাঁর পক্ষে স্লোগান দিচ্ছিলেন।

তিনি আরও লিখেছেনঃ

মোহাম্মাদ মুরসি – এবং সকল বিবাদীকে হত্যা করতে প্ররোচিত করার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। পরিবর্তে তাদের বিরুদ্ধে ভীতিপ্রদর্শন, সহিংসতার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।

দ্যা বিগ ফারাও মনে করেন, মুরসির নিষ্ঠা বর্তমানে ক্ষমতাসীনদের জন্য একটি শিক্ষণীয় বিষয় হওয়া উচিৎ। তিনি উল্লেখ করেছেনঃ

২ বছর আগে মুসলিম ব্রাদারহুড ক্ষমতাসীন ছিল, অবস্থান কর্মসূচী পালনকারীদের ওপর আক্রমণ চালাতে দলীয় সন্ত্রাসী বাহিনী পাঠিয়েছিল। যা ঘটছে তা আজকের শাসনতন্রে যারা নানা অবিচার করছেন তাদের সমর্থকদের প্রতি একটি শিক্ষণীয় বিষয় হয়ে থাকবে।

তিনি আরও বলেছেনঃ

প্রতিটি আদালতেরই ন্যায় বিচারের পক্ষে রায় দেয়া ছাড়া কিছু করার থাকে না। এখানে প্রতিহিংসা আছে এবং দুই ভিন্ন সত্ত্বার মাঝে বিদ্যমান যুদ্ধ দ্বারা প্রভাবিত।

তিনি আরও লিখেছেনঃ

গত ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে আমি দেখেছি যে দলীয় সন্ত্রাসী বাহিনী পুলিশ ভ্যানের উপস্থিতিতে প্রতিবাদকারীদের উপর হামলা চালিয়েছে। এত কিছুর পরেও রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা দিয়ে প্রভাবিত রায়টির প্রতি আমি কিছুতেই সমর্থন দিব না।

তামের আল-ঘোবাশি মিসরের বিচার ব্যবস্থার প্রতি সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছেনঃ

মিসরের বিচার ব্যবস্থা এই মামলার প্রকৃত ঘটনাকে অপ্রাসঙ্গিক বিবেচনা করেছে। তাই এই প্রক্রিয়ার সাথে সাদৃশ্য আছে এমন যেকোন বিচারকে দেখা অসম্ভব।

মজার বিষয় টুইট প্যালেস্টাইন এই চক্রান্ত ধরে ফেলেছেন। তিনি সমান্তরাল চিত্র একেছেন:

৩০ বছরের স্বৈরশাসক একচেটিয়া ক্ষমতা প্রয়োগ করে শাসনের পরেও মুবারাক মুক্ত অবস্থায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আর মুরসিকে দেয়া হয়েছে ২০ বছরের কারাদন্ড। মিসরের অন্যায্য আদালতের এটি কি ধরনের উন্মাদনা?

যেহেতু বিচার কাজ এখনও চলছে, তাই মুরসির প্রতি অন্যায়ের এটাই শেষ নয়। সাংবাদিক হাফসা হালাওয়া টুইট করেছেনঃ

মনে রাখুন, এই বসন্তে তাঁর বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি ও কারাগারের নিয়ম ভাঙ্গার মতো “মারাত্মক” অভিযোগও চলে আসবে।

মিসরীয় আদালতে মুরসির বিচার এখনও চলছে। তাই পরবর্তী খবর জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .