আর্মেনিয়ান গণহত্যার ইতিহাসের নিখোঁজ শব্দটি হলো: ন্যায়বিচার

Aleppo January 1920: Armenian refugees at the American Relief eye hospital, photo by University of Michigan Expedition, George R. Swain, Ann Arbor, Michigan. Public domain.

আলেপ্পো, জানুয়ারি ১৯২০: আমেরিকান রিলিফ আই হাসপাতালে একদল আর্মেনিয়ান উদ্বাস্তু। ছবিটি ইউনিভার্সিটি অব মিশিগান এক্সপেডিশন থেকে নেয়া।

গত ২৪ এপ্রিল, শুক্রবার আর্মেনিয়ান গণহত্যার শতবার্ষিকী পূর্ণ হয়েছে। আর্মেনিয়ান’রা গণহত্যার জন্য তুর্কি কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে আসছে। গণহত্যায় প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ নিহত হন, যা অটোমান সাম্রাজ্যে বসবাসকারী আর্মেনিয়ান জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ। এরা সবাই গণহত্যা, নির্বাসন এবং দুর্ভিক্ষে মারা গেছেন।

ইতোমধ্যে ২২টি দেশ আর্মেনিয়ান গণহত্যার স্বীকৃতি দিয়েছে। স্বীকৃতিদানকারী দেশগুলোর মধ্যে লাতিন আমেরিকার পাঁচটি দেশ রয়েছে। এগুলো হলো: আর্জেন্টিনা, বলিভিয়া, চিলি, উরুগুয়ে এবং ভেনিজুয়েলা।

লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে সবচে’ বেশি আর্মেনিয়ান বাস করেন আর্জেন্টিনায়। সংখ্যার বিচারে তৃতীয় বৃহত্তম দেশ। দেশটিতে ৭০,০০০-১৩৫,০০০ এর মতো আর্মেনিয়ান বংশোদ্ভূত মানুষ রয়েছেন। এদের মধ্যে আর্জেন্টিনার সাংবাদিক লালা টাউটোনিয়ানের পরিবারও আছে।

লালা কারেনিনা’র দাদা-দাদীদের সময়কার যে ঘটনা এখনো অণুরনিত হয়: সেটি হলো আর্মেনিয়ান গণহত্যা।

টাউটোনিয়ান সম্প্রতি আর্জেন্টিনার বিচার ও মানবাধিকার বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকাশনা ইনফোজাজ নোটিসিয়াসে তার দাদা-দাদীদের সেই সময়ের ঘটনাবলী- তারা কীভাবে নতুন করে বাঁচার আশায় পৃথিবীর অপরপ্রান্তে ভ্রমণ করেছেন, নতুন করে জীবন শুরু করেছেন সেসব নিয়ে লিখেছেন:

Contaba mi abuela Nazlé, la paterna, que no sintió el balazo en su brazo. Estaba fuertemente aferrada a su hermano menor cuando notó una sangre marrón, espesa, bañando su mano y la de su hermanito. Mientras relataba esto, mostraba su cicatriz, con el ceño fruncido, la mirada grave, la voz firme…

আমার দাদী নাজলী বুলেটের আঘাতে জখম হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি আমাকে বলেছেন, কখনোই মনে হয়নি তার হাত বুলেটবিদ্ধ। কারণ তিনি তার ছোট ভাইকে শক্ত করে ধরে রেখেছিলেন। যখন খেয়াল হলো ততোক্ষণে তার হাতে রক্ত জমাট বেঁধে গেছে। তবে তিনি বিচলিত হননি। স্থির দৃষ্টিতে ক্ষতস্থানটা দেখেছেন। তখনও কথাবার্তায় দৃঢ়তা ধরে রেখেছিলেন…

Contaba mi abuelo Vartevar, el materno, que mataron frente a sus ojos— unos turquesas, brillantes hasta el último de sus días a los 99 años—, a su esposa y a su bebé. Que él sobrevivió en el desierto escondiéndose bajo la arena cuando pasaban arrasando los turcos, bebiendo del orín de una mula moribunda, que sus compañeros en la marcha de la muerte caían como hojas secas. …

আমার নানার নাম ভার্টেভার। ৯৯ বছর বয়সে তিনি মারা যান। তিনি আমাকে বলেছেন, কীভাবে তার চোখের সামনেই তার স্ত্রী-পুত্রকে হত্যা করা হয়েছে। তাছাড়া জীবন বাঁচাতে মরুভুমির ভিতরে কীভাবে লুকিয়ে ছিলেন, সেকথাও আমাকে বলেছেন। তুরস্ক অতিক্রম করার সময়ে তার সঙ্গীরা যখন একে একে শুকনো পাতার মতো ঝরে যাচ্ছে, তখন তিনি মৃতপ্রায় খচ্চরের প্রস্রাব পান করেছেন…

তুরস্কের সরকার অবশ্য গণহত্যার ঘটনা অস্বীকার করে আসছে। তবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে বিপুল সংখ্যক আর্মেনিয়ান যে মারা গেছেন, এটা স্বীকার করেন। যদিও তারা যুক্তি দেখান, উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘটিত জাতিগত সহিংসতায় এ সময়ে অনেক তুর্কি নাগরিকও নিহত হয়েছেন।

টাউটোনিয়ান আরো লিখেছেন:

Estas son las consecuencias de un Genocidio: odios, rencores, dolores, resentimientos, nacionalismos exacerbados, chauvinismos baratos, y todo horriblemente sustentado. También el afán de mantener viva una cultura, una lengua, una religión, una memoria que se quiso tapar, matar, silenciar.

গণহত্যার ফলাফল হিসেবে: ঘৃণা, তিক্ততা, বেদনা, বিরক্তি, উগ্র জাতীয়তবাদ, অন্ধ দেশপ্রেম এসবের পিছনে জল ঢেলেছে। তবে অন্যদিকে সংস্কৃতি, ধর্ম, ভাষা, স্মৃতি বাঁচিয়ে রাখার ইচ্ছাটাকে জাগ্রত করেছে।

Porque cada una de las imágenes expuestas, cada niño moribundo, cada mujer violada, cada abuelo tatuado, cada hombre degollado, nos recuerda que tenemos porqué vivir.

কেননা সেইসব দৃশ্য- প্রতিটি মুমূর্ষু শিশু, প্রতিটি ধর্ষিতা নারী, মৃত দাদা-দাদীর প্রতিটি ট্যাটু, প্রতিটি তিক্ত পুরুষ আমাদের মনে করিয়ে দেয় কেন আমাদের বেঁচে থাকতে হবে।

Porque falta una palabra en la historia del Genocidio armenio: justicia.

কারণ আর্মেনিয়ান গণহত্যার ইতিহাস থেকে একটি শব্দ নিখোঁজ হয়ে গেছে, সেটি হলো: ন্যায়বিচার

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .