জাপানে আরো একবার এলো চেরি ফোটার মওসুম। এই মনোমুগ্ধকর গোলাপী রঙের ফুলের আগমন মানে স্যোশাল মিডিয়ায় কিছু অসাধারণ সুন্দর ফুলের ছবিতে ভরে যাওয়া, এই প্রস্ফুটিত ফুল একই সাথে আশা, স্বপ্ন এবং হারানোর এক প্রতিচ্ছবি হয়ে আসে।
ফুকুশিমা জেলার আইওয়াকি এলাকায় আইওয়াকি মানবোন সাকুরা (যার মানে হচ্ছে অনেকটা আইওয়াকি এলাকার ১০,০০০ চেরি বৃক্ষ) প্রকল্প, ঠিক এই বিষয়টি উপস্থাপন করছে।
আইওয়াকি, ফুকুশিমা দাইইচি পরমাণু শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই শহরটি এক প্রচণ্ড শক্তিশালী সুনামির দ্বারা আক্রান্ত হয়, যা ২০১১ সালে এক জোরালো ভূমিকম্পের পরে জাপানের প্রশান্ত উপকূলে আঘাত হানে। এই ঘটনায় ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র এক বিপর্যয়ের শিকার হয়।
এই প্রচণ্ড বিপর্যয়ের চতুর্থ বার্ষিকীতে আইওয়াকি মানবান প্রকল্পের অংশ হিসেবে এক পাহাড়ের চূড়ায় ৯৯,০০০ টি চেরি গাছ বপন করা হয়, যে পাহাড় শহরের উপর নজর রাখছে। যে ব্যক্তির কোম্পানি এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সাহায্য করেছে, সেই তাদাশিগে শিগা ব্যাখ্যা করেন:
負の遺産を残してしまうことにすごい悲しさ、悔しさを今さらながら感じています。なんとかならないものなのでしょうか!春、桜の花が満開に咲いているのを見て、20年後、30年後の未来の子供達に、山一面の桜を見てもらえるようにしようと思いたちました。万が一いわきに住めなくなった時でさえ、いわきの土地を愛していた人達の気持ちが伝わるくらい、沢山の桜の木を植えたいと思っています。
মার্চ ২০১১-এ যে বিপর্যয় ঘটে তার প্রভাব এখানে এক বেদনার ছাপ রেখে গেছে। কাজে আসুন এটাকে ঠিক করার জন্য আমরা কিছু একটা করি! প্রতিবছর চেরি গাছের চারা জন্মায়। আসুন শিশুদের আমরা এখন থেকে পরবর্তী এক ২০ বছর প্রদান করি, এখন থেকে ৩০ বছর পর যখন কিছু একটা দেখার জন্য তারা আইওয়াকির উপরে পাহাড়ের ঢালে এসে জড়ো হবে। এমনকি যদি কোন কারণে সে সময় কেউ আর আইওয়াকিতে বাস না করে, তখনো আমরা আমাদের এই শহরের জন্য আমাদের ভালবাসা প্রকাশ করতে পারি, আমরা তা করতে পারি চেরি গাছের চারা রোপণ করে।
এর পেছনে চিন্তাটা হচ্ছে ২০১১ সালে যে বিপর্যয় আতঙ্ক এবং বেদনা ছড়িয়েছে চেরি গাছ এবং বসন্তে এর ফোঁটা ফুল ঐ সকল কিছু স্মৃতিকে প্রশান্ত করতে সক্ষম হবে।
সাকুরার দীর্ঘ ইতিহাস
জাপানে চেরি অথবা সাকুরা ফোঁটা নিয়ে লেখার ইতিহাস অনেক প্রাচীন। স্বল্প সময়ের জন্য ফোঁটা এই ফুলের কথা প্রথম পাওয়া যায় মান’ ইয়োশুতে, এটি জাপানের টিকে থাকা সবচেয়ে প্রাচীনতম কবিতা সঙ্কলন, যা এখন থেকে প্রায় ১৩০০ বছর আগে নারা যুগে লেখা হয়েছিল।
জাপানের ইতিহাসে প্রস্ফুটিত চেরি হচ্ছে এক নতুন শুরু, আশা এবং স্বপ্ন। এই প্রস্ফুটিত চেরি এতটাই সুন্দর যে এটা একজনের নিঃশ্বাস খানিক ক্ষনের জন্য থামিয়ে দিতে পারে এবং এই ফুল ফোঁটার কিছুদিনের মধ্যে আবার ঝরে যায়। চেরি ফোঁটার ঘটনা জাপানের নাগরিকদের হৃদয়ে এক আবেগের মিশ্রণ তৈরী করে এবং এটি তাদের হৃদয়ে এক বিশেষ জায়গা জুড়ে রয়েছে।
জাপানে প্রতি বছর মার্চের শেষে চেরি ফোঁটার সময়টিকে নিছক এক ঋতু পরিবর্তনের চেয়ে বেশী কিছু হিসেবে দেখা হয়। ঘটনাক্রমে মার্চের শেষে স্নাতক পর্ব এবং বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সমাপ্তি ঘটে, যার সাথে চেরি ফোঁটার সময় মিলে যায়, এবং এপ্রিলের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন শিক্ষাবর্ষের শুরু হয়।
এই ঋতুতে জাপানের টুইটার ব্যবহারকারীরা প্রস্ফুটিত সাকুরার কিছু বিস্ময়কর ছবি পোস্ট করেছে :
今年の春に・・・ #ファインダー越しの私の世界 #写真撮ってる人と繋がりたい #写真好きな人と繋がりたい pic.twitter.com/9QKvXHqrok
— shara_photo@△ (@shara_photo) November 24, 2014
বসন্ত এসেছে আজ।
スカイツリーの河津桜がそろそろ満開 pic.twitter.com/9urWao0Zvh
— すえきち (@suekichiii) March 10, 2015
টোকিওর আকাশছোঁয়া ভবনের নীচে প্রায় পরিপূর্ণ প্রস্ফুটিত চেরি বৃক্ষ।
টুইটার ব্যবহারকারী @৭ডি_ইতাচি জাপানের এক চিরায়ত ছবি ধারণ করেছে:
4年ぶりに故郷へ戻る事ができました。この場所はやっぱり落ち着くな〜 #夜桜 #高田城 #写真好きな人と繋がりたい pic.twitter.com/xNg8XVg9KL
— イタチ (@7D_ITACHI) April 16, 2014
বিগত চার বছরে মধ্যে এই প্রথম জোয়েটসিতে নিজের জন্মভূমিতে ফিরে এলাম। এখানে সত্যি খুব শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে।
সাকুরা ফুল ফোটার মধ্যে দিয়ে নতুন সময়ের যাত্রা শুরু :
春ってなんかわくわくして 桜とかが綺麗に咲いたりして 前までわ好きだったけど いろんな人達との別れが多いな~ 今わ春が嫌いだ
— みらい✡ (@3jsb24Giants) March 28, 2015
এই বিষয়টি সব সময় বিস্ময়কর যে বসন্তে সুন্দর সাকুরা প্রস্ফুটিত হয়। আমি সবসময় বসন্তকে ভালবাসি, কিন্তু এই মুহূর্তে আমি এই ঋতুর প্রতি ঘৃণা জানাচ্ছে, কারণ যেন আমার এক পুরোনো বন্ধুকে ছেড়ে যেতে হচ্ছে।
চেরি ফুলের পাপড়ি ঝড়ে পড়ার সাথে সাথে এক বিচ্ছেদের সুর বাজাতে শুরু করে:
【桜の絨毯と吹雪】 →http://t.co/kO1MwAiPfq 境内を歩くとあちらこちらで桜吹雪が舞っています。(長野県中野市 谷厳寺の桜) #風景 #桜 pic.twitter.com/1tOgZE4ZKF
— pixpot photo (@pixpotjp) March 5, 2015
চেরি ফুলের পাপড়ির স্তুপ মন্দিরের মেঝেতে পড়ে আছে (কাকুগান মন্দির, নাগানো)।
প্রস্ফুটিত চেরির মানব আত্মার উপর এক সুগভীর প্রভাব রয়েছে।
今年はじめて桜をみつけた!疲れてたけどもうちょっとがんばろうと思った pic.twitter.com/cot3GeJdir
— 大石蘭 (@wireless_RAN) March 26, 2015
এ মওসুমে প্রথম যে চেরি গাছে ফুল ফুটেছে, সেটিকে আমি চিহ্নিত করেছি। যদিও আমি খুব ক্লান্ত, আমি মনে করি আমি কিছুটা সময় আরো খানিকটা এগিয়ে যেতে পারব।