এই প্রবন্ধটি প্রথম ছাপা হয় ইরানভয়েসেসঅর্গ-এ ও এরপর ইংরেজিতে অনুবাদ করা হয় এবং লেখা বিনিময় চুক্তি অনুসারে এখানে প্রকাশ করা হয়েছে।
“আমি আপনাদের প্রতিশ্রুতি প্রদান করছি, যদি আমি দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হই তাহলে আমি প্রথম দিন থেকে লেক উরুমিয়া হ্রদটিকে রক্ষার কাজ শুরু করব “ ইরানের রাষ্ট্রপতি হাসান রোহানি তার এক নির্বাচনী প্রচারণার সময় এই বক্তব্য প্রদান করেন।
ঘটনা হচ্ছে, লেক উরুমিয়া বিষয়টি এখন এক জাতীয় সমস্যায় পরিণত হয়েছে, ইরানের উত্তরপশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত এই হ্রদটি বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম লবণাক্ত পানির হ্রদ। তুর্কি সীমান্তের কাছে অবস্থিত এই হ্রদটি পূর্ব এবং পশ্চিম আজারবাইজান প্রদেশের মাঝে অবস্থিত এবং এর খানিকটা অংশ উত্তর কুর্দিস্তানে পড়েছে। জার্নাল অফ দি গ্রেট লেক রিসার্চের গবেষকেরা বিবৃতি প্রদান করেছে যে এই হ্রদটি এক পরিবেশগত বিপর্যয়ের দ্বার প্রান্তে এসে দাড়িয়েছে। হ্রদের উপকূল রেখার ক্রমশ কমতে থাকার ফলে তা হ্রদের আকার উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কমিয়ে ফেলেছে, যা পুরো পরিবেশের ভারসাম্য বিপন্ন করে তুলেছে। নীচের এই ভিডিওটি অক্টোবর ১৯৭২ থেকে আগস্ট ২০১৪ পর্যন্ত এই হ্রদের ক্ষেত্রে গুরুতর যে সকল পরিবর্তন ঘটেছে সে সব বিষয়ে এক ধারণা প্রদান করছে।
আগস্ট ২০১৩-এ, মন্ত্রী পরিষদের সাথে প্রথম বৈঠকে রাষ্ট্রপতি রোহানি এই সমস্যার সমাধানে এক বিশেষ কার্যকরী দল গঠন করেন। তার মন্ত্রীসভার জ্বালানি মন্ত্রী এই দলের নেতৃত্ব প্রদান করেছে, যে দলের অন্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছে কৃষি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী পরিবেশ রক্ষাকারী সংগঠনসমূহ। এই হ্রদকে রক্ষার জন্য অন্য যে সকল প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়েছে সেগুলোতে যুক্ত আছে তিনটি প্রদেশ, ইরানের পরিবেশ মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউনাইটেড নেশনস ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রাম), যারা এমন কিছু সমাধান তৈরী করছে যেন সেগুলো সরকার প্রয়োগ করতে পারে। মার্চ, ২০১৪-এ এই সকল ব্যক্তি এবং বিভাগের মধ্যে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় যার ফলে ইরান সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ১১ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নে নেমে পড়ে, যার মধ্যে রয়েছে জাতীয় পর্যায়ের এক সচেতনতা মূলক প্রচারণা। অন্য সব প্রচেষ্টার মধ্যে রয়েছে ইউএনডিপি ইরানকে প্রদান করা জাপান সরকারের ২ মিলিয়ন ডলারের এক অনুদান, যা হ্রদের পুনরুদ্ধারে ব্যয় করা হচ্ছে [বিগত মার্চে দ্বিতীয় কিস্তির অনুদান নবায়ন করা হয়েছে]।
উরুমিয়ার পরিস্থিতি সম্পর্কে একেবারে সাম্প্রতিক মন্তব্যটি এসেছে পূর্ব আজারবাইযানের পরিবেশ রক্ষা বিভাগের প্রধান হামিদ ঘাসেমির কাছ থেকে যিনি আইএসএনএ সংবাদ সংস্থাকে বলেন “মেহের [সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে শুরু] মাসে শুরু থেকে এসফান্দ [ মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে পর্যন্ত] মাসের শেষ পর্যন্ত এই প্রদেশে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ২১৫.৩ মিলিমিটার। এর তুলনায় গত বছর এই একই সময়ে গড় বৃষ্টিপাত হয়েছিল ১১৭.১ মিলিমিটার।
ঘাসেমি উল্লেখ করেন যে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বৃদ্ধি হওয়া সত্বেও, গত বছর যা ছিল, এ বছরও হ্রদের পানির স্তর এবং আকার একই থেকে গেছে। ঘাসেমি গুরুত্ব প্রদান করেন যে “পানির স্তর যে অবস্থায় আছে সে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো বিষয়টি” বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বৃদ্ধির সাথে সাথে এই এলাকার প্রধান সব বাঁধের সাথে সরসারি যুক্ত। তিনি একই সাথে হ্রদের পাশে বাস করা স্থানীয় গ্রামবাসীদের মাঝে এর পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির প্রতিও গুরুত্ব আরোপ করেন, যাদের জন্য স্থানীয় ভাষায় সচেনতা বৃদ্ধির প্রচারণা তৈরী করা দরকার।