হুথি বিদ্রোহীদের কাছ থেকে নিয়ন্ত্রণ ছিনিয়ে নেবার একটি আঞ্চলিক প্রচেষ্টায় ইয়েমেনের উপর সৌদি আরবের বিমান আক্রমণ শুরু করার মাত্র কিছু দিন পরেই ইয়েমেনের সর্ববৃহৎ ইন্টারনেট সেবাদানকারী ইয়েমেন নেট বেশ কয়েকটি সংবাদ ও গণমাধ্যম ওয়েবসাইট বন্ধ করে রেখেছে বলে প্রতিয়মান হয়।
হুথিরা জানুয়ারী মাসে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এর নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে, যে কাজটিকে জাতিসংঘ খুব দৃঢ়ভাবে নিন্দা জানিয়েছে। এটি লিপিবদ্ধ করা প্রথম ঘটনাগুলোর একটি যেখানে জানুয়ারী মাসে বিদ্রোহীরা জাতীর রাষ্ট্রপতি এবং মন্ত্রীসভাকে উচ্ছেদ করার পর থেকে এরকম ব্যাপক-আকারে অনলাইনের উপর সেন্সর আরোপ করা হলো।
ইয়েমেনের ইন্টারনেট সোসাইটির স্থানীয় পরিচ্ছেদ (আইএসওসি) তাদের ফেসবুক ও টুইটার হিসাবে অনুসারীদেরকে আহ্বান জানিয়ে পোস্ট দিয়েছে যেন তারা যে যে ওয়েবসাইটগুলোতে প্রবেশ করা যাচ্ছে না সেগুলোকে চিহ্নিত করে। এপর্যন্ত, মারেব প্রেস, ইয়েমেন ভয়েস, সাহাফা নেট, আল-সাওয়া নেট এবং ইয়েমেন প্রেসসহ সংবাদের সাইটগুলোকে বন্ধ হিসেবে পাওয়া গেছে।
هل تم حجب موقعك أو موقعا تتصفحه في #اليمن ؟ يرجى الرد بكتابته أو مراسلتنا على contact@isoc.ye #Yemen #عاصفة_الحزم فضلا ريتويت
— جمعية الإنترنت-اليمن (@ISOC_Yemen) March 26, 2015
ইয়েমেনে আপনার ওয়েবসাইট বা আপনি সাধারণত যে ওয়েবসাইট পরিদর্শন করেন তা বন্ধ হয়েছে কি না? এই পোস্টের উপর আপনার মতামত দিয়ে বা contact@isoc.ye-তে ইমেইল-এর মাধ্যমে আমাদেরকে অনুগ্রহপূর্বক জানান।
বন্ধ করা সাইটের অনেকগুলোতেই হুথিদের সম্পর্কে সমালোচনামূলক বক্তব্য রয়েছে। ইয়েমেন প্রেস এবং মারেব প্রেস মাউথিদের নেতৃত্বে মানবাধিকার লঙ্ঘনের উপর বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন করেছে। অন্যান্যদের কোন নির্দিষ্ট সাংবাদিকতা বা রাজনৈতিক পরিচিতি নেই। একটি উদাহরণ হলো সাহাফা নেট, যেটি একটি তালাশ যন্ত্র যেখানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সকল প্রধান ইয়েমেনিয় ওয়েবসাইট থেকে বিষয়বস্তু সংগ্রহ করা হয়। গত সপ্তাহে এটি বন্ধ করার আগে পর্যন্ত সাহাফা নেট ইয়েমেনের সবচেয়ে বেশী পরিদর্শন করা ওয়েবসাইটগুলোর মধ্যে একটি ছিল।
এই ওয়েবসাইটটি বন্ধ করার আগে, ইয়েমেনের তথ্য মন্ত্রী ২৫শে মার্চ একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রদান করেছে যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, যে যে গণমাধ্যম থেকে ‘উত্তেজনা ছড়ানো’ হবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সাইটগুলো বন্ধ হয়ে যাবার সংবাদ অনলাইনে জানাজানি হয়ে যাবার সংগে সংগে বেশ কিছু প্রতিক্রিয়া টুইটারের মাধ্যমে পাঠানো হয়। আইএসওসি-ইয়েমেন-এর সহপ্রতিষ্ঠাতা ফাহ্মি আলবাহেথ টুইট করেছে:
many political websites are blocked in #yemen today by Houthies #freedom #IGmena #privacy #netgov
— Fahmi Albaheth فهمي (@albaheth4) March 26, 2015
ইয়েমেন-এ আজকে হুথিরা অনেক রাজনৈতিক ওয়েবসাইট বন্ধ করেছে
ফাহ্মি এই বন্ধ করা কিভাবে অতিক্রান্ত করা যায় সে ব্যাপারে একটি উপকরণও টুইট করেছে:
تدوينة جديدة :أدوات وبرامج مجانية لكسر حجب مواقع #الانترنت لكافة الإخوة في #اليمن خصوصا http://t.co/uGkQ6bIj2G #Yemen #عاصفة_الحزم
— Fahmi Albaheth فهمي (@albaheth4) March 27, 2015
একটি নতুন ব্লগ পোস্ট: বিনামূল্যের হাতিয়ার ও নমনীয় সম্ভার যা আপনাকে ইয়েমেনের বর্তমানে ওয়েবসাইট বন্ধ করাকে অতিক্রান্ত করতে সাহায্য করবে। http://t.co/uGkQ6bIj2G #Yemen
আইএসওসি-ইয়েমেন তাদের ফেসবুকের পাতায় ওয়েব সেন্সর করা বিষয়ক একটি বিবৃতি পোস্ট করেছে:
Statement by ISOC-Yemen on Recent Acts of Web Censorship
As an independent organization concerned with the right of users to access the Internet freely, the Internet Society Yemen Chapter (ISOC-Yemen) condemns and denounces the acts of censorship that have recently targeted several Yemeni websites. ISOC-Yemen urgently calls upon the Yemeni authorities involved to immediately unblock those websites and stresses that the current turmoil in Yemen should not be used as a pretext to tamper with accessing the Internet, which should remain open for all users to use without restrictions.
Issued in Sana'a on Friday, March 27, 2015
Internet Society Yemen Chapter (ISOC-Yemen)
সাম্প্রতিক কালে ওয়েব সেন্সর করার উপর আইএসওসি-ইয়েমেন-এর একটি বিবৃতি
স্বাধীনভাবে ইন্টারনেটে প্রবেশাধিকারে ব্যবহারকারীদের অধিকার বিষয়ে কর্মরত একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে, ইন্টারনেট সোসাইটি ইয়েমেন পরিচ্ছেদ (আইএসওসি-ইয়েমেন) সম্প্রতিকালে বেশ কয়েকটি ইয়েমেনিয় ওয়েবসাইটকে লক্ষ্য করে সেন্সর করার যে কাজটি করেছে তার নিন্দা ও প্রত্যাখ্যান করছে। আইএসওসি-ইয়েমেন জরুরীভাবে সংশ্লিষ্ট ইয়েমেনিয় কতৃপক্ষের নিকট বন্ধ করে দেয়া ওয়েবসাইটগুলোকে খুলে দেবার দাবী জানাচ্ছে এবং ইয়েমেনের বর্তমান বিশৃঙ্খলাকে ইন্টারনেট-এ প্রবেশাধিকারে বাধা দান করার একটি অযুহাত হিসেবে ব্যবহার না করার উপর জোর দিয়েছে, যা সকল ব্যবহারকারীদের জন্য কোন বিধিনিষেধ ছাড়াই ব্যবহার করার জন্য উন্মুক্ত থাকা উচিত।
সানা'আ-এ শুক্রবার ২৭শে মার্চ ২০১৫ তারিখে জারি করা হয়েছে – ইন্টারনেট সোসাইটি ইয়েমেন পরিচ্ছেদ (আইএসওসি-ইয়েমেন)
প্রগতিশীল যোগাযোগ সংঘ (এপিসি) সেন্সর করার এই কাজটির নিন্দা জানিয়েছে:
APC joins @ISOC_Yemen in condemning acts of censorship that have recently targeted several Yemeni websites http://t.co/JnNgNsjgqW
— APC (@APC_News) March 27, 2015
এপিসি @আইএসওসি_ইয়েমেন সাথে যোগ দিয়ে সাম্প্রতিককালে বেশ কয়েকটি ইয়েমেনিয় ওয়েবসাইটকে লক্ষ্য করে সেন্সর করার এই কাজটির নিন্দা জানিয়েছে।
আমরা আরও তথ্য সংগ্রহের জন্য আইএসওসি-ইয়েমেন এর সভাপতি ও ইয়েমেন পোর্টাল এর প্রতিষ্ঠাতা ওয়ালিদ আল-সাকাফ এর সাথে যোগাযোগ করেছিলাম। আল-সাকাফ বলেন যে কায়দায় বন্ধ করার ঘটনাগুলো ঘটছে তা সন্দেহজনকভাবেই কয়েক বছর আগে ২০০৫ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ব্যবহারকারীদের সম্মুখীন হওয়া ঘটনার অনুরূপ। তিনি ব্যাখ্যা করেন যে একমাত্র পার্থক্য হলো প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আলী আবদুল্লাহ সালেহ সম্পর্কে যে ওয়েবসাইটগুলো সমালোচনা করতো সেগুলো ছাড়াও হুথিদের সম্পর্কে সমালোচনামূলক ওয়েবসাইটগুলোই নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। বিগত দিনে সালেহ হুথিদের ওয়েবসাইটগুলোকে বন্ধ করেছে, তবুও হুথিরা এখন সালেহ-এর সাথে তাদের মিত্রতা (যাকে আল-সাকাফ ‘অপবিত্র’ বলে ব্যাখ্যা করেছে) সম্পর্কে সমালোচনাকারী ওয়েবসাইটকেই বন্ধ করে দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন যে হুথি বাহিনী রাজধানী ও সরকারী কার্যালয়গুলো দখল করার পর থেকেই, তারা সকল গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ স্থাপনাগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে সমর্থ হয় যেমন ইয়েমেন-এর মূল আইএসপি ও মুঠো ফোন পরিচালনাকারী গণ টেলিযোগাযোগ কর্পোরেশন, সেই সাথে সাথে যোগাযোগ ও তথ্য মন্ত্রণালয়গুলো যারা তারযুক্ত ফোন ও রাষ্ট্রীয় মাধ্যমগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে। সুতরাং হাউথিরা এখন যে কোন কর্মকর্তার কাছে একটি গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ প্রদান করতে পারে। আল-সাকাফ বিশ্বাস করে যে এগুলো রাষ্ট্রীয় মাধ্যমগুলোতে তার ভাষায় চরম হাউথি-কেন্দ্রীক পক্ষপাত ও হুথি রাজনীতির যে কোন সমালোচনাকারী ওয়েবসাইটকে বন্ধ করে দেয়ার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক সতর্কবার্তা সম্পর্কে আল-সাকাফ ব্যাখ্যা করে যে ‘উত্তেজনা ছড়ানো’ বিষয়ক অভিযোগ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সীমিত করার জন্য একটি সহজ ছুতা। তিনি আরও বলেন যে এই একই অযুহাতে ২০১১ সালে আলজাজিরার কার্যালয়ে হানা দেওয়া হয় এবং যন্ত্রপাতী বাজেয়াপ্ত করা হয়।
এ পর্যন্ত ইয়েমেন নেট বা যোগাযোগ ও তথ্য মন্ত্রণালয়গুলো থেকে সেন্সর করার এই ঘটনাগুলো সম্পর্কে কোন প্রকার আনুষ্ঠানিক বিবৃতি জারি করা হয় নি।