- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

ইয়েমেনের বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সৌদি আরবের সাথে যোগ দিয়ে সুদান, ইরান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে

বিষয়বস্তু: মধ্যপ্রাচ্য ও উ. আ., ইয়েমেন, ইরান, সুদান, সৌদি আরব, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, নাগরিক মাধ্যম, মানবাধিকার, যুদ্ধ এবং সংঘর্ষ
The aftermath of Saudi-led airstrikes on Yemen today. Photograph shared by @HussainBukhaiti on Twitter [1]

আজ সৌদি আরবের নেতৃত্বে ইয়েমেনের উপর চালানো বিমান হামলার পর সৃষ্ট ধ্বংসযজ্ঞ। টুইটারে ছবি প্রকাশ করেছে @হুসাইনবুখাতি

ইয়েমেনে ইরানের সহযোগী হুতিদের বিরুদ্ধে শুরু করা যুদ্ধে, ইরানের এক সময়কার সহযোগী সুদান তার অবস্থান পাল্টে ফেলেছে।

হুতি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সুদান, সৌদি নেতৃত্বে পরিচালিত যৌথ বাহিনীতে যোগ দিয়েছে [2], যে হুতিরা এ বছরের জানুয়ারিতে সানার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়, যা অনেকের ভ্রূকুঞ্চন-এর সৃষ্টি করেছিল।

সংযুক্ত আরব আমিরাত ভিত্তিক সাংবাদিক আব্বাস আল লাওয়াতি টুইট করেছে :

ইয়েমেনের অভিযানে সুদানের অংশগ্রহণ সম্ভবত দেশটির স্থায়ীভাবে ইরানী শিবির ত্যাগের এবং উপসাগরীয় সহযোগী সংস্থায় যোগ দেওয়ার বিষয়টি স্থায়ী ভাবে নিশ্চিত করল।

এবং সীন লী যোগ করেছে:

তার মানে বশির এখন রিয়াদে। মনে হচ্ছে সৌদি আরব তেহরানকে হারিয়ে দিয়েছে।

সৌদি মালিকানাধীন আল আরাবিয়া টিভির সংবাদ অনুসারে ইয়েমেনে হুতিদের বিরুদ্ধে পরিচালিত যুদ্ধে সৌদি আরবকে সাহায্য করার জন্য সুদান সেনাবাহিনী পাঠাতে রাজি হয়েছে, যার নাম দেওয়া হয়েছে অপারেশন ডেসিসিভ স্টর্ম, যা আজ সকালে শুরু হয়েছে। একই সাথে আকাশ থেকে হামলা চালানোর জন্য দেশটি এই অভিযানে তিনটি যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে।

সুদানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেছে ইয়েমেনে পরিচালিত হুতি বিরোধী অভিযানে খার্তুম বিমান ও স্থল হামলায় অংশ নেবে।

সুদান ট্রিবিউনের মতে [8] সুদানের রাষ্ট্রপতি ওমর হাসান আল বশিরের সাথে সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুলাজিজ আল সাউদের সাক্ষাৎকারের এক দিন পরে এই চুক্তির বিষয়টি ঘটল, যে বশিরকে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিস বা আইসিসি (আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত) যুদ্ধপরাধ এবং গণহত্যার দায়ে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে চায়।

উক্ত পত্রিকা আরো যোগ করেছে:

এই অভিযান, দুটি দেশের সম্পর্কের মাঝে সাম্প্রতিক বছরগুলো যে শীতলতা বিরাজ করছিল তাকে উষ্ণ করেছে, আর এর কারণ ছিল খার্তুমের সাথে ইরানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।

অতীতে এই ধরনের সংবাদ ছড়িয়ে রয়ে ছিল যে, ইরানের পক্ষ হয়ে সুদান হুতি বিদ্রোহীদের কাছে অস্ত্র পৌঁছে দেওয়ার কাজটি করছে।

একই সাথে সুদান দেশটিতে ইরানের সকল প্রতিষ্ঠান ও দলের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। রোহাল্লাহা ফাগহিহি টুইট করেছে:

ওমর বশিরের সৌদি আরব সফরের ফলাফল? সুদান, দেশটিতে ইরানের সকল প্রতিষ্ঠান ও দলের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে/ আল আরাবিয়া থেকে প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে।

আইসিসি, বশিরের বিরুদ্ধে মার্চ ২০০৯-এ সংগঠিত দারুফুরের গণহত্যা এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে তাকে গ্রেপ্তার করতে চায় [10]। এই প্রতিষ্ঠানটি বশিরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করেছে। ২০০৩ সালে শুরু হওয়া সমস্যায় এ পর্যন্ত ৩০০,০০০ জন নাগরিক নিহত হয়েছে। .

দশটি রাষ্ট্র ইয়েমেনের এই যুদ্ধে যোগ দিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে সুদান,মিশর, জর্দান, পাকিস্তান, মরোক্কো এবং ওমান ব্যাতিত গালফ কোঅপারেশন কাউন্সিল (উপসাগরীয় সহযোগীতা সংস্থার) সবকটি দেশ।

অন্য যে সমস্ত রাষ্ট্র হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যোগ দিয়েছে তারাও সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছে।

জান নোভাক, যিনি ইয়েমেন সম্বন্ধে টুইট করে থাকেন, তিনি লিখেছেন:

সৌদি আরব, যে দেশটি ব্লগারদের চাবকায়, যার নেতৃত্বে রয়েছে দুর্নীতিপরায়ন বাদশা, এখন সে এবং সামরিক স্বৈরশাসকেরা মিলে দুর্নীতিগ্রস্ত অদক্ষ রাষ্ট্রপতি হাদিকে ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধ থেকে উদ্ধার করতে গেছে, যে যুদ্ধ ক্রমশ বাড়ছে।

ভারতের শুভঙ্কর মুখার্জি মন্তব্য করেছে :

দারুণ, তিনজন বাদশা (সৌদি আরব, জর্দান, মরোক্কো) এবং তিনটি নৈরাজ্যবাদী রাষ্ট্র (পাকিস্তান, মিশর, সুদান) আকাশ থেকে ইয়েমেনের উপর বোমা বর্ষণ করছে। আর তা করা হচ্ছে শান্তি ও গণতন্ত্রের স্বার্থে।

লেবাননের ব্লগার আবির ঘাত্তাস ব্যাঙ্গাত্মক ভাবে টুইট করেছে:

যে ভাবে হোক না কেন, আসুন আমরা সৌদি আরবের নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রাখি, দেশটি এত বেশী সাধু এবং কার্যকর যে, তা সে বছরের পর বছর জুড়ে প্রমাণ করেছে।

ইয়েমেন বিষয়ক সংবাদের জন্য আমাদের সংবাদের প্রতি চোখ রাখুন।