ক্যামেরুনিয়রা তাদের রাষ্ট্রপতির স্বাস্থ্য নিয়ে লো মোঁদ এর করা প্রতিবেদনে খুশী নয়

Capture d'écran du couple Biya revenant à Yaoundé

বিয়া জুটির ইয়াউন্দে-তে ফিরে আসার স্ক্রীনশট 

১৯৮২ সাল খেকে ক্যামেরুন-এর রাষ্ট্রপতি পল বিয়া ও তার স্ত্রীর ঘন ঘন ইউরোপ সফর সবসময়ই ক্যামেরুনিয় ও দেশের রাজনীতি পর্যবেক্ষকদের মধ্যে প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে। কিন্তু ২০১৫ সালে রাষ্ট্রপতি জুটির সাম্প্রতিক সফর ফরাসী সংবাদপত্র লো মোঁদ এর কল্যাণে বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছে, যারা অজ্ঞাতনামা উৎসের উপর নির্ভর করে সফরটিকে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত হিসেবে প্রবন্ধ ছেপেছে।  

ক্যামেরুনিয়রা সংবাদপত্রটির প্রতিবেদনকে গোপনীয়তায় হস্তক্ষেপ আখ্যা দিয়ে সমালোচনা করেছে, এমনকি দেশটিকে সাবেক কলোনীয় শক্তি ফ্রান্সের দ্বারা অস্থিতিশীল করার একটি চক্রান্তে লো মোঁদ অংশগ্রহণ করেছে বলে অভিযুক্ত করেছে।  

এর সবই শুরু হয় ১৩ই মার্চ যখন লো মোঁদ-এর আফ্রিকিয় সংস্করণ লো মোঁদ আফ্রিক ‘Le couple présidentiel hors du pays et en mauvaise santé’ (রাষ্ট্রপতি জুটি দেশের বাইরে এবং ভগ্ন স্বাস্থ্যে আছে) শীর্ষক একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করে। উল্লেখযোগ্য যে প্রথিতযশা ক্যামেরুনিয় সক্রিয় কর্মী বার্গেলাইন ডমু'র দ্বারা সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ব্যাপকভাবে ছড়ানো প্রবন্ধটির প্রথম সংস্করণে, লো মোঁদ আফ্রিক-এর সম্পাদক ঘোষণা দিয়েছে: 

Depuis le 2 mars, le chef de l’Etat camerounais « effectue une visite privée en Europe », indique un communiqué du palais d’Etoudi, le siège de la présidence, sans préciser la destination. Mais de sources concordantes, Paul Biya séjourne actuellement dans un centre hospitalier du canton de Genève, où il suit un traitement pour des soucis cardiaques et un cancer de la prostate, ajoutent les mêmes sources. Âgé de 82 ans – dont 33 passés au pouvoir – « l’homme lion », comme on le surnomme au Cameroun, hésiterait à subir une opération chirurgicale envisagée par les médecins.

Une source bien introduite dans les organisations de la diaspora camerounaise affirme que les médecins et autres personnels soignants camerounais ou d’origine camerounaise travaillant aux HUG (Hôpitaux universitaires de Genève, structure publique mais de grande qualité où sont souvent hospitalisés des chefs d’Etat africains) ont été récemment invités à prendre leurs congés. “

রাষ্ট্রপতি প্রাসাদ থেকে প্রাপ্ত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কোন নির্দিষ্ট গন্তব্যের কথা উল্লেখ না করে বলা হয়, ২রা মার্চ থেকে ক্যামেরুনের রাষ্ট্র প্রধান ‘ইউরোপে ব্যক্তিগত সফরে আছেন'। কিন্তু বেশ কয়েকটি উৎস থেকে জানা যায় যে পল বিয়া বর্তমানে জেনেভাতে একটি চিকিৎসা কেন্দ্রে অবস্থান করছে, কোন কোন উৎস উল্লেখ করেছে যে তিনি সেখানে হৃদজনিত সমস্যা ও অগ্রগ্রন্থির ক্যান্সার-এর চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। ৮২ বছর বয়েসে — যার মধ্যে ৩৩ই কেটেছে ক্ষমতায় থেকে — এই ‘সিংহ মানব’ (ক্যামুরুনে মানুষ তাকে এ নামেই জানে) ডাক্তাররা যে অস্ত্রপচার ব্যবস্থার পরামর্শ দিচ্ছে তা গ্রহণ করতে দ্বিধা করছেন বলে বলা হয়েছে।  

বিভিন্ন দেশে অবস্থান করা ক্যামেরুনিয়দের মধ্যে থাকা ভাল-যোগাযোগসম্পন্ন একটি উৎস নিশ্চিত করেছে যে এইইচইউজিতে (জেনেভা ইউনিভার্সিটি হাসপাতাল, একটি সরকারী কিন্তু বেশ সর্বজন-গন্য হাসপাতাল যেখানে আফ্রিকার রাষ্ট্রপ্রধানরা প্রায়শই ভর্তি হয়) কর্মরত ক্যামেরুন থেকে আগত বা ক্যামেরুন বংশদ্ভুত ডাক্তার ও অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা দানকারীদেরকে সম্প্রতি ছুটি নিতে উৎসাহিত করা হয়।  

বর্তমানে অনলাইনে পাওয়া সংস্করণ থেকে এই তথ্যটুকু অপসারণ করা হয়েছে। শিরোনামটিও এখন ভিন্ন ‘Le couple présidentiel hors du pays et en mauvaise santé’ (রাষ্ট্রপতি জুটি দেশের বাইরে এবং ভগ্ন স্বাস্থ্যে আছে) পরিবর্তন করে ‘Le couple présidentiel s'exile pour raisons médicales’ (রাষ্ট্রপতি জুটি স্বাস্থ্যগত কারণে দেশের বাইরে যায়), এবং তারপর ‘Le couple présidentiel est à Genève et s'occupe de sa santé’ (রাষ্ট্রপতি জুটি জেনেভায় এবং তাদের স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিচ্ছে) তে পরিবর্তন করে, যা ক্যামেরুনিয় আলাঁ জুল-এর ব্লগের স্ক্রীনশটি থেকে দেখতে পাওয়া যাবে:

Screenshots by Cameroonian blogger Allain Jules that show the evolution of headlines from Le Monde regarding the presidential couple in Cameroon.

ক্যামেরুনিয় ব্লগার আলাঁ জুলের স্ক্রীনশটে ক্যামেরুনের রাষ্ট্রপতি জুটি সম্পর্কে লো মোঁদ-এর শিরোনামগুলোর বিবর্তন দেখা যায়।

এই প্রবন্ধটির কারণে ক্যামেরুনের নেতৃত্বের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। প্রথমটি হলো চিকিৎসাগত গোপনীয়তার প্রশ্ন। সংবাদ চ্যানেল ক্যামেরুন-ইনফো.নেট-এর দ্বারা সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা আলাঁ জুলের কাছে সরকারী লোকজনসহ সবারই একটি ব্যক্তিগত জীবন ও চিকিৎসাসংক্রান্ত গোপনীয়তার অধিকার রয়েছে:

Même s'il y a des vérités, c'est de l'ordre du privé. Parce que, chaque personne est libre de garder un secret médical. Encore plus, les médecins. Le secret médical est un des fondements de la médecine libérale dont la violation est réprimée par le code de santé publique et le code pénal.

এটি যদি সত্যিও হয়, এটি ব্যক্তিগত। কারণ প্রত্যেকেই চিকিৎসাসংক্রান্ত গোপনীয়তা পাবার যোগ্য। ডাক্তাররা বরং আরও বেশী। চিকিৎসাসংক্রান্ত গোপনীয়তা হলো চিকিৎসা শাস্ত্রের ভিতগুলোর একটি, যা ভঙ্গ করা সরকারী স্বাস্থ্য বিধি ও দণ্ডবিধি অনুসারে বেআইনী।  

ক্যামেরুনের সরকারও একই মতামত পোষণ করেছে। ক্যামেরুন টেলিভিশনে অনুষ্ঠিত একটি টক শো-তে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মহা-পরিদর্শক ঘোষণা করেছে:

le droit aussi pour le chef de l’Etat camerounais au respect de sa vie privée, nonobstant son statut de personnalité publique.

L’article 9 du Code civil français prescrit que «chacun a droit au respect de sa vie privée», a-t-il rappelé. Le Pr. Albert Mbida a également évoqué un arrêt rendu par la Cour de cassation en 1998 qui abonde dans le même sens.

ক্যামেরুনের রাষ্ট্রপ্রধানের জন্যও একটি ব্যক্তিগত জীবনের অধিকার আছে, হোক না সে একজন জনব্যক্তিত্ব।

তিনি ফরাসী বেসামরিক বিধির ৯ অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে বলেন যে ‘প্রত্যেকেরই তার ব্যক্তিগত জীবনের মর্যাদা পাবার অধিকার আছে'। অধ্যাপক এ্যালবার্ট এমবিদাও ১৯৯৮ সালে উচ্চ আদালতের দ্বারা প্রদত্ত একটি রায় উল্লেখ করেন যেটিতেও একই সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে। 

প্যারিসভিত্তিক বিশ্লেষক আব্দেলআজিজ মুন্ডে-এর কাছে লো মোঁদ এর প্রবন্ধটি একটি মৌলিক প্রশ্নের উত্থাপন করে: 

La fonction présidentielle sacrifiera t-elle à l'impératif d'une mutation moderne ? : déclarer ses biens suivant la Constitution et publier son bulletin de santé, gage de responsabilité et de transparence.

La question du secret dans la gestion des affaires de l'État n'a plus la même nature qu'au mitan des années 60. La vie politique evolue avec les exigences de son temps.

রাষ্ট্রপতির প্রতিষ্ঠান কি একটি আধুনিক পরিবর্তনের জরুরী চাহিদার প্রতি সাড়া দেবেন?: সংবিধানের সাথে সঙ্গতি রেখে দায়িত্বশীলতা ও স্বচ্ছতা দেখিয়ে তিনি কি তার সম্পত্তির জানান দেবেন, এবং তার চিকিৎসা বিবরণী প্রকাশ করবেন।  

জাতীয় সম্পর্কের বিষয়গুলোর প্রেক্ষিতে গোপনীয়তার প্রশ্ন এখন আর ১৯৬০-এর দশকের মধ্যভাগের অনুরূপ নয়। সময়ের সাথে সাথে রাজনৈতিক জীবনেরও পরিবর্তন হয়েছে। 

এই ঘটনা নিয়ে ক্যামেরুনিয়দের প্রতিক্রিয়ায় চিকিৎসাসংক্রান্ত গোপনীয়তার প্রশ্ন থেকেও বেশী আর একটি বিষয় অব্যাহতভাবে উঠে এসেছে: এই ধারণা যে বাস্তবিকভাবে লো মোঁদ আফ্রিক হলো ক্যামেরুনকে অস্থিতিশীল করার বিদেশী প্রচেষ্টার একটি সংবাদিকতামূলক বাহু মাত্র। একটি অজ্ঞাতনামা উৎসের বরাত দিয়ে ২৩৭অনলাইন সাইটটি লিখেছে:

Cela trahit une sorte de complot du Quai d’Orsay, par presse interposée, contre le pouvoir de Yaoundé au moment où le pays de Paul Biya inspire confiance, à l’intérieur comme à l’extérieur, explique un fin analyste. On a envie de dire que c’est une histoire de fou, car Paul Biya subit régulièrement des check-up dont les résultats sont toujours satisfaisants. S’il y a des malades dans cette affaire, on pourrait dire que c’est plutôt le journal Le Monde qui mérite d’être conduit à l’hôpital et non le chef de l’État camerounais. Cette affaire pue la manipulation

ঠিক যখন দেশের বাইরে ও ভিতরে পল বিয়ার দেশ আস্থা অর্জন করছে তখন, এটি ফরাসী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দ্বারা প্রেসের মাধ্যমে ইয়াউন্ডে-তে যারা এখন ক্ষমতায় আছে তাদের বিরুদ্ধে এক ধরনের চক্রান্তের বিষয় উন্মোচন করে, একজন সূক্ষ্ণ বিশ্লেষক ব্যাখ্যা করেন। আপনি হয়তো এটিকে অর্থহীন বলতে পারেন, যে পল বিয়া নিয়মিত পরীক্ষা করান, যার ফলাফল সর্বদাই সন্তোষজনক হয়। এই ঘটনায় জড়িত যদি কেউ অসুস্থ থেকে থাকে তবে, তা হলো লো মোঁদ সংবাদপত্র, একেই হাসপাতালে পাঠানো প্রয়োজন, ক্যামেরুনের রাষ্ট্রপ্রধানকে নয়। পুরো ব্যাপারটাতেই পরাধিকারচর্চার গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। 

দেশের উত্তরে বোকো হারেম চরমপন্থীদের দ্বারা ৩০ বছরের শান্তি হুমকীর সম্মুখীন হওয়া ক্যামেরুনকে কলোনীয় শক্তি দ্বারা অস্থিতিশীল করার অভিযোগের আভাসটি নতুন নয়।  

২০১৫ সালের ২৮শে ফেব্রুয়ারী বোকো হারাম দ্বারা আক্রান্ত উত্তরের জনগোষ্ঠী ও তাদের বিরুদ্ধে লড়াইরত সৈনিকদের সমর্থনে রাজধানী ইউয়ান্ডে-তে আয়োজিত একটি পদযাত্রার সময়, ক্যামেরুনে কর্মরত ফরাসী দূত ক্রিসটিন রোবিসোঁ-কে অংশগ্রহণকারীরা দুয়ো ধ্বনি দেয়, যারা ‘Non à la guerre, Non à Boko Haram, Non à la France !’ (যুদ্ধকে না বলুন, বোকো হারামকে না বলুন। ফ্রান্সকে না বলুন!) বলে রব করতে থাকে। 

টুইটার ব্যবহারকারী ওটু সিডনী ওলিভিয়ে তার বক্তব্যের মাধ্যমে এটিকে সংকলিত করেছে:

Ce sentiment anti français qui continue de se propager partout au Cameroun… Le monde Afrique a pas aidé avec son article c'est sûr

— Ottou Sydney Olivier (@sydneyolivierO) March 16, 2015

এই ফরাসী-বিরোধী অনুভূতি ক্যামেরুনের অভ্যন্তরে বিস্তৃত হচ্ছে…লো মোঁদ আফ্রিক-এর প্রবন্ধটি নিশ্চিতভাবেই কোন সাহায্য করেনি। 

রাষ্ট্রপতি জুটি লো মোঁদ আফ্রিক-এর প্রবন্ধটির বিষয়ে এখন কোন সাড়া প্রদান করেনি।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .