লেবানিজ-আর্মেনীয় বিক্ষোভকারীরা বৈরুতের এক চলচ্চিত্র প্রদর্শন কেন্দ্রে তুর্কি রাষ্ট্রদূতকে আটকে রেখেছিল

Lebanese-Armenian Protesters outside the movie theater. Image from AztagDaily

লেবানিজ-আর্মেনীয় বিক্ষোভকারীরা এক চলচ্চিত্র প্রদর্শন কেন্দ্রের বাইরে অবস্থান গ্রহণ করে, লেবাননের সংবাদপত্র ডেইলি স্টার যেমনটা সংবাদ প্রদান করেছে বিক্ষোভকারীরা “ সত্য প্রকাশিত হবে” এবং “আমাদের স্মরণে রেখেছি” ইত্যাদি স্লোগান প্রদান করছিল। ছবি আজটাগডেইলি থেকে নেওয়া।

বুধবার তাশাহানগ পার্টির ৬০ জন লেবানিজ-আর্মেনীয় সদস্য লেবাননের এক চলচ্চিত্র প্রদর্শন কেন্দ্রের ভেতরে তুরস্কের রাষ্ট্রদূতকে আটকে রাখে, যারা ১৯১৫ সালে অটোমান সাম্রাজ্যের দ্বারা সংঘঠিত আর্মেনীয় গণহত্যার বিষয়ে তুরস্কের সরকারি অবস্থানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছিল। গ্যালিপোলির যুদ্ধের (১৯১৫-১৯১৬) ঘটনার বিষয়ে নির্মিত “সন মেকটাপ” নামের এক তুর্কি চলচ্চিত্রের প্রথম প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে অংশ নিতে রাষ্ট্রদূত সুলেইমান ইনান ওজ ইলদিজ এখানে হাজির হয়েছিলেন। গণহত্যার শতবার্ষিকীর স্মৃতিরক্ষণ-এর নিজস্ব ওয়েবসাইটেও এই ঘটনার সংবাদ প্রদান করা হয়েছে।

যে সময়ে এই চলচ্চিত্রের প্রচারণা চালানোর বিষয়টি বেছে নেওয়া হয়েছে সেই একই বছরে যে বছরে আর্মেনীয় গণহত্যার শতবার্ষিকী পালিত হচ্ছে যাকে এখানে গণহত্যা হিসেবে উল্লেখ করা হয়নি। লেবানিজ-আর্মেনীয় দৈনিক “আজটাগ”-এর অনলাইন সংখ্যায় প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তুর্কি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে যে আর্মেনীয় গণহত্যার শতবর্ষে দেশটি বিশ্বের মনোযোগ এই বিষয় থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে, এ বছরের ২৪ এপ্রিলে যে ঘটনা বিশ্বজুড়ে স্মরণ করা হবে।

এই বিবৃতি যা আর্মেনীয় এবং আরবি উভয় ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে, লেবানিজ-আর্মেনীয় একটিভিস্ট ইয়েঘিয়া তাশিজিয়ান গ্লোবাল ভয়েসেস-এর জন্য তার সারসংক্ষেপ তৈরী করেছেন:

এই চলচ্চিত্রের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আর্মেনীয় গণহত্যার বিষয়টি থেকে সবার দৃষ্টি সরিয়ে তা গ্যালিপোলির ঘটনার দিকে নিয়ে যাওয়া, এবং তা করা হয়েছে এই বাস্তবতা সত্ত্বেও যে তুর্কি সরকার অতীতে গ্যালিপোলির যুদ্ধকে তেমন একটা স্মরণ করেনি। সম্প্রতি তুরস্ক সরকার এই যুদ্ধের ঘটনার তুলে ধরার জন্য অর্থ বিনিয়োগ করছে এবং প্রচারণা চালাচ্ছে যাতে মনোযোগ আর্মেনীয় গণহত্যার শত বার্ষিকীতে বিশ্বের সবার মনোযোগ অন্যদিকে সরিয়ে দেওয়া যায়। যার ফলে তাশহাগ ইয়োথ এন্ড স্টুডেন্ট (তাশহানগ) শাখা আরো একবার বিশ্বকে তুর্কি শাসনামলে আর্মেনীয় এবং আরবদের ভোগান্তির কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার এই উদ্যোগ গ্রহণ করে। আর এই ঘটনায় তুর্কি দূতাবাসের নিরাপত্তা রক্ষীরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ লিপ্ত হয়, নিরাপত্তা রক্ষীরা আওয়াজ তোলে, “এরদোগান”, “এরদোগান”, অপরদিকে বিক্ষোভকারীরা এর জবাবে আওয়াজ তোলে “গণহত্যা”, “গণহত্যা”। .

আর্মেনিয়ায় সংঘঠিত গণহত্যার শতবর্ষে এই ঘটনাকে স্মরণ করা লেবাননের নাগরিকের জন্য বিশেষ এক গুরুত্ব বহন করে, বিশেষ করে যেখানে দেশটির মোট জনসংখ্যার ৪ শতাংশ নাগরিক লেবানিজ আর্মেনীয় জনগোষ্ঠীর। ২৪ এপ্রিলে তারিখে পালিত হতে যাওয়া শতবার্ষিকীর ঘটনাকে সামনে রেখে অজস্র অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে দি ইনডিপেন্ডন্ট-এর রবার্ট ফিস্কের এক আলোচনা। যার শিরোনাম “একশত বছর এবং একটি দিন”, আর এটি অনুষ্ঠিত হবে বৈরুতের আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের লেবানিজ-আর্মেনিয়ান হেরিটেজ ক্লাবে, পাশাপাশি স্বয়ং এই দিনটি উপলক্ষে এক জাতীয় মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .