উত্তর থাইল্যান্ডের রাজধানী শহর মুয়াং নান-এ একটি মসজিদ নির্মাণ পরিকল্পনার প্রতিবাদ জানাতে প্রায় ৮০০ মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। বিক্ষোভকারীদের প্রতিনিধি হিসেবে একজন বৌদ্ধ ধর্মযাজক প্রাদেশিক কর্মকর্তার হাতে প্রতিবাদপত্র হস্তান্তর করেন।
উল্লেখ্য, থাইল্যান্ডের বেশিরভাগ মানুষ বৌদ্ধ ধর্মাম্ববলী। মাত্র ৫ শতাংশ মুসলমান। আর বেশিরভাগ মুসলিম দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে বসবাস করেন। পূর্বে এটি পাট্টানি সাম্রাজ্য হিসেবে পরিচিত ছিল। যদিও কিছু মুসলিম গ্রুপ এই অঞ্চলটি থাইল্যান্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার আন্দোলন করছেন।
প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিতে বুফারম এবং অন্যান্য পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে গ্রামের মানুষজন এসেছিলেন। তারা দাবি করেছেন, মুসলমান সম্প্রদায় মসজিদ নির্মাণের ব্যাপারে তাদের সাথে আলোচনা করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
জানুয়ারি মাসে প্রথম আলোচনা সভা [2]অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তবে স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায় বিষয়টি নিয়ে ঐক্যমতে পৌছাতে ব্যর্থ হয়।
প্রদেশে মসজিদের দরকার নেই বলে যারা মনে করেন, তাদের সাক্ষাৎকার [3] নিয়েছে ব্যাংকক পোস্ট। সেখানে বলা হয়, জনগণ ভয় পাচ্ছেন। তারা মনে করছেন, মসজিদ নির্মাণের পিছনে কোনো রাজনৈতিক বা ধর্মীয় উদ্দেশ্য থাকতে পারে। যার মাধ্যমে থাইল্যান্ডের বিভিন্ন অংশ অস্থিতিশীল হবে এবং সহিংসতা ছড়িয়ে পড়বে।
এদিকে মসজিদ নির্মাণের জন্য যে জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে, সেখান থেকে মাত্র দু'কিলোমিটার দূরে একটি বৌদ্ধ মন্দির রয়েছে। এটাও কাউকে কাউকে অখুশি করেছে। বিক্ষোভকারীরা তাদের প্রতিবাদপত্রে জানিয়েছেন, এই মসজিদ নির্মিত হলে এখানে “শব্দ দূষণ” হতে পারে। তাছাড়া সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রায় পার্থক্যটাও দুশ্চিন্তার কারণ হবে।
৫৫ বছর বয়সী রিক্রাইসাক কান্তা স্থানীয় মিডিয়ার কাছে মসজিদ নির্মাণের বিরোধীতার কারণটি ব্যাখ্যা করেছেন:
Villagers have no problems with Muslims but this protest is because we are not happy with the local (provincial) government that allowed the building of this mosque in a Buddhist community. We should have a public hearing before the construction as this mosque has an impact on our community. If the province continues with the construction, the Nan people will continue the protest.
গ্রামবাসীর সাথে মুসলমানদের কোনো সমস্যা নেই। তবে বিক্ষোভ করা হচ্ছে, কারণ প্রাদেশিক সরকারের কর্মকাণ্ডে আমরা খুশি নই। তারা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষের মাঝে মসজিদ নির্মাণের অনুমতি দিয়েছেন। মসজিদ নির্মাণের আগে আমরা গণশুনানি চাই। প্রাদেশিক সরকার যদি নির্মাণ কাজ অব্যাহত রাখে, তবে আমরাও প্রতিবাদ চালিয়ে যাবো।
মুসলিম সম্প্রদায়ের একজন প্রতিনিধি জানিয়েছেন, নান প্রদেশে বর্তমানে ৬০ জন মুসলমান রয়েছেন। প্রার্থনা কাজে অংশ নিতে তাদের ১৩০ কিলোমিটার দূরের প্রদেশে যেতে হয়। অন্য একজন মুসলিম নেতা মনে [4] করেন, মসজিদ নির্মিত হলে পর্যটনের ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তিনি বলেছেন, পার্শ্ববর্তী প্রদেশগুলো থেকে পর্যটক ছাড়াও বিদেশি মুসলমান পর্যটকরা মসজিদ দেখতে এখানে আসবেন। ফলে পর্যটন খাতে এই অঞ্চলের আয় বাড়বে।
অন্য ধর্মের প্রতি নমনীয়তা দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় কিছু থাই নিজেদের অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন:
พวกคุณบอกว่าต้องการความสงบ ไม่ต้องการความแตกแยก แต่ที่พวกคุณทำอยู่นี่ คือจุดเริ่มต้นของความแตกแยกเลยนะ pic.twitter.com/lzJ5ZbNCeC [5]
— joe black (@joe_black317) March 1, 2015 [6]
আপনি বলবেন, শান্তি চান, কোনো ধরনের বিচ্ছিন্নকরণ চান না। তাহলে বিচ্ছিন্নকরণ যখন শুরু হচ্ছে, আপনি তখন কি করছেন?
ตามนัด! คนน่านฮือยื่นคำขาดห้ามสร้างมัสยิด แฉคนมีสี-การเมืองปั่นกระแสต้านทหารต่อ http://t.co/UCoh3UM5bz [7] pic.twitter.com/YFlWIrhVoX [8]
— ♥ Moui ♥ (@moui) March 2, 2015 [9]
… নান জনগণ মসজিদ নির্মাণের বিরোধীতা করছে। আবার অন্যরা বলছে,বিক্ষোভটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এবং এটা সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে যাবে।
@moui [10] แบบนี้ล่ะ ที่ทำให้เสื่อม เขาเรียกว่า เดรัจฉานวิชา เป็นข้อห้ามของสงฆ์ไทย แต่ขยันทำกันจัง
— ████ .III. ████ (@RITT41) March 2, 2015 [11]
বৌদ্ধ ভিক্ষু ধর্মের অপমান করেছেন। এটা তার নির্বুদ্ধিতা। তার কার্যক্রম সরকারি নিয়মনীতির বিরুদ্ধে গেছে।
I do feel sad for this news: Buddhists in Nan take a stand against mosque.http://t.co/840nlcBaaA [12] #religions [13] #buddhism [14] pic.twitter.com/5W5AjqdrSk [15]
— Chokdee Smith (@chokdeesmith) March 3, 2015 [16]
এই খবর দেখে আমি দু:খ পেয়েছি: নান প্রদেশের বৌদ্ধরা মসজিদ নির্মাণের বিরোধীতা করছেন।
নান প্রদেশের গভর্নর ইউক্রিট পুয়েংসোফা দু'পক্ষের মধ্যে ভারসাম্য [17] আনার চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেছেন, একটি স্থায়ী মসজিদ নির্মাণের আগে মুসলমানরা একটি বালাশাহ (অস্থায়ীভাবে নামাজের জায়গা) নির্মাণ করবেন। এরপরে মুসলিম সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেলে তারা স্থায়ীভাবে একটি বড় মসজিদ বানাতে পারবেন।
অন্যান্য ধর্মবিশ্বাসের মতো ইসলামও থাইল্যান্ডে সরকারীভাবে স্বীকৃত। মুসলমানরা অন্যান্য মুসলমান দেশ এবং সংগঠনগুলোর সাথে সুসম্পর্ক রাখতে পারেন। তবে বিক্ষোভ অব্যাহতভাবে চলতে থাকলে বৌদ্ধ ধর্মের বাইরে অন্যান্য ধর্মবিশ্বাস নিয়ে যে অজ্ঞতা ও অসহিষ্ণুতা তা থাইল্যান্ডের ভবিষ্যতের ওপর প্রভাব ফেলবে।