
ফেব্রুয়ারি, ২০১৪। জাপানের ফুকুই-এর ‘ওই’ নামক এলাকা (এর মানচিত্র) পিএম ২.৫ ধোঁয়াশায় ঢেকে আছে, যা হলুদ ধূলিকণার কারণে সৃষ্টি। ছবি শোহেই গুচ্চিও-এর সৌজন্যে।
জাপানের দক্ষিণপশ্চিমের শহর ফুকুওকা বছরের প্রথম হলুদ ধূলিকণার অভিজ্ঞতা লাভ করল, গত বছরের তুলনায় তিন মাস পূর্বে এই ধুলিকণা শহরে এসে হাজির। বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে এই প্রথমবার দক্ষিণ কোরিয়া বসন্তের শুরুতে হলুদ ধূলিকণার আগমনের কারণে এক সতর্কতা জারি করে।
হলুদ ধূলিকণা অথবা কোসা (黄砂), সাধারণত পূর্ব এশিয়ায় বসন্তের আগমন বার্তা ঘোষণা করে, বসন্তের সময় বয়ে যাওয়া জোরালো পশ্চিমা বায়ু, মঙ্গোলিয়ার গোবি মরুভূমি এবং চীনের লোয়েস উপত্যাকা সহ এশিয়া মহাদেশের শুষ্ক অঞ্চল থেকে বালি, ধুলি এবং পলিমাটির সূক্ষ্ম কণা বয়ে আনে।
এই ধূলিকণার বিস্তার ঘটে পুরো উত্তরপশ্চিম এশিয়া জুড়ে, যার মধ্যে কোরিয়া উপদ্বীপ, জাপান এবং রাশিয়ার দূরপ্রাচ্যও রয়েছে।
এএনএন টেলিভিশন চ্যানেল তাদের সংবাদে ফুকুওকায় অনেক আগে এই ধূলিকণার আগমন এবং এই ঋতুতে কি ভাবে এই ধূলিকণা মেঘমুক্ত দিনেও দৃষ্টিকে বাঁধা দিচ্ছে তা নিয়ে প্রতিবেদন তৈরী করেছে:
জাপানে, হলুদ ধূলিকণা সাধারণত গাড়ি, জানালা, নেড়ে দেওয়া কাপড়ে এক লক্ষ্যনীয় এক পুরু স্তর তৈরী করে। বায়ু বাহিত এই ধুলা একই সাথে নীল অথবা হলুদ ধোঁয়াশার সৃষ্টি করে, যা সূর্যকে আড়াল করে ফেলে।

২০১১ সালের মার্চ মাসে এই ধুলা পীত সাগর এবং জাপান সাগরকে ঝাপসা করে ফেলেছিল। ছবি সিওয়াইএফএস প্রজেক্ট, নাসা/ গডারড স্পেস ফ্লাইট সেন্টার এবং ওরবইমেজ-এর।
এ ধরনের সম্ভাবনা যথেষ্ট যে এই মাসের [ফেব্রুয়ারির] শুরুতে জাপানের বেশ কয়েকটি শহরে এই ধূলিকণা আঘাত হেনেছে। এই টুইটার ব্যবহারকারী তার গাড়ির উপর এর এক ধুলার স্তর তৈরীর সংবাদ প্রদান করেছে (যদিও বিষয়টি এমন হতে পারে যে এই স্তর হয়ত ক্রিপ্টোমেরিয়া বা জাপানিজ সিডার নামক বৃক্ষের পরাগ রেণু থেকে তৈরী হয়েছে, যা বসন্তের শুরুতে জাপানের আরেকটি উদ্বেগের কারণ):
黄砂だ! pm 2.5と花粉対策 広島地方 pic.twitter.com/2bs4t2Xdgr
— hajime (@tattachan1484) February 9, 2015
এটা হচ্ছে হলুদ ধূলিকণা! পিএম ২.৫- নামক ধূলিকণা এবং এর প্রতিরোধে পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণের সময়!: (হিরোশিমার কোন এক স্থানে)
Even further east, a Hankyu train rider somewhere near Osaka has also noticed the arrival of the continental dust:
うわ この黄色いのん 黄砂? pic.twitter.com/0Fus7oXvPi
— 阪急京都線民 (@hankyu100) February 23, 2015
ওহ! এটা নিঃসন্দেহে হলুদ ধূলিকণা !
সাম্প্রতিক বছরসমূহে, জাপানে বসন্তের সময় শ্বাসকষ্ট জনিত রোগের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ার সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে, হলুদ ধূলিকণা যার এক অন্যতম কারণ।
এক ধূলিঝড় যাকে এক সময় ভাবা হত প্রাকৃতিক এক ঘটনা, এখন তা আরো নিকৃষ্ট রূপ ধারণ করেছে, আগের চেয়ে ঘন ঘন এবং জোরালো ভাবে উপস্থিত হওয়ার মাধ্যমে, আর এর জন্য দায়ী হচ্ছে মধ্য এশিয়া এবং চীনের কিছু অংশে মাত্রাতিরিক্ত পশুচারণ, বন উজাড়, ভূমির ক্ষয় বৃদ্ধি এবং মরুকরণের ঘটনা।
পলিমাটির সূক্ষ্ম কণা যা কিনা শেষে হলুদ ধূলিকণায় পরিণত হয়, তা এই একই নামে পরিচিত অ্যারোসল হিসেবে কাজ করে, আর এটি চীনের উত্তরের ব্যাপক শিল্পায়িত এলাকা থেকে ভারী মাত্রায় শিল্প দূষণজাত উপাদান সংগ্রহ করে।
এর ফলে সারা উত্তরপূর্ব এশিয়া জুড়ে বাতাসের গুণগত মান ক্রমশ খারাপ হচ্ছে এবং পিএম ২.৫ নামক ধোঁয়াশার মেঘ সৃষ্টি হচ্ছে, সূক্ষ্ম কণা গুলো এত ছোট যে এগুলোকে দেখা যায় না এবং সাধারণত এগুলো শিল্প দূষনের মাধ্যমে তৈরী হয়ে থাকে। পিএম ২.৫-এর উপাদান যে সকল বস্তুকণা, সেগুলোর কারণে সৃষ্টি দূষণকে সাধারণত মানুষের জন্য ক্ষতিকারক হিসেবে বিবেচনার করা হয়, কারণ এই সমস্ত কণা শ্বাসের মাধ্যমে সহজে শরীরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে যা পরে শ্বাসতন্ত্র গিয়ে জটিলতা বৃদ্ধি করে।
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে উত্তর পূর্ব এশিয়ায় পিএম ২.৫-এর ঘনীভূত রূপ:

Source: Air Pollution in Asia – সূত্র-এশিয়ায় বায়ু দূষণ পরিস্থিতি-তৎক্ষণাৎ সময়ে বায়ুর গুণগত মানের দৃশ্যমান মানচিত্র সূচক (রিয়েল টাইম এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ভিসুয়াল ম্যাপ) (২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫)
উপরে দূষণ সূচক এবং রঙের কোড ইপিএ–এর মানকে অনুসরণ করেছে যেমনটা সজ্ঞায়িত করেছে এয়ারনাও।
এখানে ১০০-এর উপরে অবস্থান করা স্থানের বাতাসের গুণগত মান নির্দেশ করে এই বাতাস “সংবেদনশীল দলের জন্য অস্বাস্থ্যকর”। ৩০০-এর উপরে নির্দেশ করে বাতাসের গুণগত মান “সকলের জন্য বিপজ্জনক”।
টুইটারে প্রদর্শিত এই চিত্র প্রদর্শন করছে হলুদ ধূলিকণার আকস্মিক ছড়িয়ে পড়ার ঘনত্ব:
今日(23日)西日本で黄砂が観測されています.http://t.co/sINRq5OXC1 22日の衛星可視では,黄海あたりに黄砂っぽいのが見えます.19日と比べるとかなり茶色い.http://t.co/MARPwXwBJD pic.twitter.com/D7N9da4yKs
— 荒木健太郎 (@arakencloud) February 23, 2015
আজ (২৩ ফেব্রুয়ারি) হলুদ ধূলিকণা পরিষ্কার ভাবে দৃষ্টিগোচর হচ্ছে…২২ ফেব্রুয়ারি তারিখে পীত সাগরের পাড় থেকে হলুদ ধূলিকণা পরিষ্কার ভাবে দেখা যাচ্ছিল [ফুকুওকার সন্নিকটে]। ২২ ফেব্রুয়ারির তুলনায়, আজকে সত্যিকার অর্থে তা [খেয়াল করার মত]