
ইরানে বসবাসরত আফগান নাগরিকদের প্রতি আরোপিত বৈষম্যের ইতি টানার জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক এবং তার ছাত্ররা লজ্জিত (#এ্যাশেমড) নামক প্রচারণার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ছাত্ররা যে ব্যানার ধরে আছে তাতে লেখা আছে” ইরানের শিশুরা আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানি ছাত্রদের সমর্থন করে। এটি উক্ত প্রচারণার ফেসবুক পাতায় পোস্ট করা হয়েছে।
এই লেখাটি ইরানভয়েসেস.অর্গ-এর পাতায় প্রথম প্রকাশিত হয়েছে এবং এরপর এটিকে ইংরেজিতে অনুবাদ করা হয় ও একে অন্যের লেখা ছাপানোর চুক্তি অনুসারে এখানে প্রকাশ করা হয়েছে।
ইরানের আজারবাইযান প্রদেশের এক শিক্ষক এবং তার ছাত্ররা ইরানে বসবাসরত আফগান শিশুদের প্রতি যে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয় তার বিরুদ্ধে লড়াই-এর জন্য এক ফেসবুক প্রচারণা শুরু করেছে।
তেহরানের কাছে পাকদাস্ত নামের এক গ্রামের স্কুলে বাড়ির কাজের খাতা বাড়িতে রেখে আসার শাস্তি হিসেবে চার আফগান শিশুকে শাস্তি হিসেবে হাত পায়খানার ভেতরে রাখতে বাধ্য করার সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে এই প্রচারণা সৃষ্টি করা হয়। এতে ইরানে বসবাসরত আফগান উদ্বাস্তুদের যে সামাজিক মর্যাদা প্রদান করা হয়, তার প্রতিবাদ করা হয়েছে, যারা প্রায়শ ইরানীদের কাছ থেকে বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়ে থাকে। এই উদ্যোগ বর্ণবাদী আচরণ থামানোর জন্য অংশগ্রহণকারীদের এই প্রচারণায় যোগ দেওয়া ও স্যোশাল মিডিয়ায় “লজ্জিত” (شرمساريم#) নামক হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক জাভেদ এবং তার ছাত্ররা এই উদ্যোগের যাত্রা শুরু করেন নিজেদের ছবি প্রকাশের মাধ্যমে যেখানে লেখা আছে, “ ইরানের ছাত্ররা আফগান এবং পাকিস্তানের ছাত্রদের সমর্থন করে”।
এর প্রতিষ্ঠাতার মতে এই প্রচারণার সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য হচ্ছে লজ্জিত শব্দ পাল্টে এটাকে গর্বিত করে ফেলা। এই প্রচারণা জন্য করণীয় কার্যাবলীর জন্য তৈরী ফেসবুক পাতায় আহ্বান জানানো হয়েছে :
ইরানে বসবাসরত আমাদের আফগান ভ্রাতা এবং ভগ্নীরা যাতে ফ্যাসিবাদ ও বর্ণবাদী আচরণের শিকার না হয় তা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের এই সমর্থন করুন যে আমরা এই ধরনের আচরণের পক্ষে কথা বলব না। এই প্রচারণার মাধ্যমে সকল ইরানী নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে আসুন লজ্জিত নামক হ্যাশট্যাগ ব্যবহার ও সাথে এই প্রচারণার সপক্ষে নিজেদের ছবি এবং ভিডিও প্রদর্শনের মধ্যে দিয়ে আমরা সকল ধরনের অমানবিক আচরণের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াই এবং তা প্রতিহত করি।
#شرمساريم, এই হ্যাশট্যাগটি ব্যবহারের মধ্যে দিয়ে স্যোশাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা ফেসবুক এবং টুইটার এর সমর্থনে পোস্ট করছে, এদিকে ডিসেম্বরে চালু হওয়া এর ফেসবুক পাতায় ইতোমধ্যে ২০,০০০ লাইক পড়েছে।
পাকিস্তানের পরে ইরানে সবচেয়ে বেশী সংখ্যক আফগান উদ্বাস্তু এবং অভিবাসীর বাস। এদিকে অন্য দেশের তুলনায় আফগান উদ্বাস্তুদের প্রতি ভাল আচরণের জন্য জাতিসংঘ ইরানের প্রশংসা করেছে, তবে এখানে বৈষম্যের অনেক ঘটনা উদাহরণ এবং উদ্বাস্তু ও নাগরিক মর্যাদা প্রদানে অস্বীকারের অনেক সংবাদও পাওয়া গেছে।