ইকুয়েডোরের জাতীয় বিষয় নিয়ে ক্রুডোইকুয়েডোর নামক টুইটার একাউন্ট হাস্যরসাত্মক মীম [ইন্টারনেটের হাস্যরসাত্মক বিদ্রূপ] পোস্ট করে থাকে, বিশেষ করে রাষ্ট্রপতি রাফায়েল কোরেয়ার মত রাজনৈতিক চরিত্রদের নিয়ে এই ধরনের মীম প্রকাশ করে, যিনি এই দলের হাস্যরসের পাত্র হতে খুব একটা আহ্লাদিত নন। এর প্রেক্ষিতে যখন রাষ্ট্রপতি কোরেয়া প্রকাশ্যে ক্রুডোইকুয়েডোরকে আক্রমণ করে বসে, তখন এই একাউন্টের ফেসবুক পাতায় ব্যাপক সমর্থন প্রদর্শিত হয়। পরে এই গ্রুপের টুইটার একাউন্টও স্থগিত করে রাখা হয়েছিল।
রাষ্ট্রপতি রাফায়েল কোরেয়া যে সব টিভি–রেডিও অনুষ্ঠানের হাজির হন, সেগুলোর সাম্প্রতিক পর্বে তিনি ক্রুডোইকুয়েডোরের কথা উল্লেখ করেন, এতে তিনি দাবী করেন যে সরকারকে হীন ভাবে তুলে ধরার এক চক্রের এটি একটি অংশ, “যাদের বিরোধী দল অর্থায়ন করছে”। এমনকি কোরেয়া ক্রুডোইকুয়েডোরের লেখকদের পরিচয় ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি পর্যন্ত প্রদান করেছেন।
তবে, কিন্তু ইকুয়েডোরের রাষ্ট্রপতি যে বিষয়টি প্রত্যাশা করেনি, তা হচ্ছে তার এই মন্তব্য ক্রুডো ইকুয়েডোরের উক্ত পাতার জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে এর অনুসারীর সংখ্যা ৯০০ গুণ করে ফেলবে। এই ব্যাঙ্গাত্মক একাউন্টের প্রতি করা তার সমালোচনার ফলে, এই পাতার প্রতি সমর্থনে ‘আমিও এক ক্রুডো ইকুয়েডোর’ (#ইয়োসোক্রুডোইকুয়েডোর), ‘আসুন মীম লাভ করি’ (#ভেনপারামেমার্তে), মাশিবেরাঞ্চে (#মাশিবেরাঞ্চে, এই নামের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি কোরেয়ার টুইটার একাউন্টের নাম যে সব শব্দের, সেগুলো দিয়ে খেলা করা এই নাম বানানো হয়েছে) নামক হ্যাশটাগের মাধ্যমে এক প্রচারণার উৎপত্তি ঘটে।
দেশটিতে মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর কোরেয়ার হামলা চালানো এই প্রথম নয়। তিনি এ বছরের একেবারে শুরুর দিকে কার্টুনিস্ট জ্যাভিয়ার “বোনিল” এবং সংবাদপত্র “এল ইউনিভার্সিও“-এর সাথে একই ধরনের সাংঘর্ষিক এক ঘটনায় জড়িয়ে পড়েন, যার ফলে উভয়ে সরকারের নিন্দা করে প্রকাশ করা কয়েকটি কার্টুনের জন্য আইনি মামলার সম্মুখীন হয়।
১৮ জানুয়ারি তারিখে ক্রুডোইকুয়েডোরের টুইটার একাউন্ট কয়েক ঘণ্টার জন্য স্থগিত করে রাখা হয়েছিল, দাবী করা হয় যে উক্ত স্যোশাল নেটওয়ার্কের শর্তাবলী ভঙ্গ করার দায়ে তাদের এই সাময়িক স্থগিত করে রাখা হয়। ক্রুডোইকুয়েডোর-এর পেছনে যে সমস্ত লেখক, তারা-এল কমার্সিয় নামক সংবাদপত্রকে প্রদান করা এক সাক্ষাৎকারে বলেন যে, “সরকারের অনুরোধে” এই একাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, যখন এই একাউন্ট অনলাইনে ফিরে আসে, তখন ক্রুডোইকুয়েডোর এই কথাগুলো উচ্চারন করে :
#YoCerreACrudo decían… #SomosMas decían… #AllYouNeedIsIMODIUM pic.twitter.com/94ttMUjeay — Crudo Ecuador (@CrudoEcuador) enero 29, 2015
২ ঘন্টা আগে: টুইটার @ক্রুডোইকুয়েডোর নামক একাউন্টটি স্থগিত করে রেখেছিল। তারা যে অশিষ্ট আচরণ এবং অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করল তা কত না সুন্দর। তাদের শালীনভাবে কাজ করতে বাধ্য করি!
২ ঘন্টা পরে কেউ কি বলেছে আমি ক্রুডোইকুয়োড বন্ধ করে দাও। আমি দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে যন্ত্রণা দেওয়া বন্ধ কর এবং আস মীমের বিষয়বস্তুতে পরিণত হও।
বন্ধ হয়ে যাওয়া ক্রুডো বলছে… সোমোসোমাস বলছে…সকলের ইমোডিয়াম (এক বিশেষ ধরনের মাদক দ্রব্য) প্রয়োজন।
অজস্র টুইটের মাধ্যমে ক্রুডোইকুয়োডোর-এর অনুসরণকারী-এর ফিরে আসাকে স্বাগত জানাতে মোটেও অস্বস্তি বোধ করেনি:
Bienvenido de nuevo @CrudoEcuador miles de ecuatorianos te apoyamos. — RonDamon Ecuatoriano (@MrRonDamon) enero 29, 2015
ক্রুডোইকুয়েডোরের এই ফিরে আসাকে স্বাগতম! তোমার প্রতি হাজার হাজার ইকুয়েডোরবাসীর সমর্থন রয়েছে।
ক্রুডোইকুয়েডোরের প্রতি তাদের সমর্থন প্রদর্শনের জন্য অনেকে জসুইশার্লি নামক হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করেছে:
#YoSoyCrudoEcuador @CrudoEcuador mi apoyo incondicional hacia ti…
— Noboita (@SuaMer14) enero 29, 2015
আমি নিজে এক ক্রুডোইকুয়েডোর, আর এর প্রতি আমার নিঃশর্ত সমর্থন প্রদান করছি।
অনেকে সরকারের সমালোচনা করার জন্য এই মুহূর্তটি বেছে নিয়েছে। :
Volvió @CrudoEcuador y en la cara de @FAlvaradoE @SomosMasEc y todos esos trolls verdes, pero de tanto billete que roban. — No soy Müller!✗ (@Mucha_Huevada) enero 29, 2015
@CrudoEcuador is back and in the face of @FAlvaradoE @SomosMasEc and all those nasty trolls who steal money.
ক্রুডোইকুয়েডোর ফিরে এসেছে এবং সেই সকল নোংরা ব্যক্তিদের মুখে চপেটাঘাত করে যারা টাকা চুরি করে।
ইতোমধ্যে গায়ক এইউ-ডি হাস্যরসাত্মক ভাবে টুইট করেছে :
No estaba muerto sólo andaba crudo jajaja @CrudoEcuador — AU-D (@el_audiman ) enero 29, 2015
আমি মাতালদের মৃত নই। হাহাহা।;
এইউ-ডি-এর এই মীম গত কয়েক দিন ধরে তার অনুসারীদের মাঝে ঘুরছে:
@CrudoEcuador tu meme lo desquicio @MashiRafael pic.twitter.com/06Vk9pbU5b
— Virus ( @viruZr) enero 29, 2015
১৮৭৫ঃ “আমার কলম আমাকে হত্যা করেছে”। ২০১৫ঃ “আমার মীম আমার মাঝে পেরেক ঠুকে দিয়েছে”।
ক্রুডোইকুয়েডোরে-এর মীম মাশিরাফায়েলকে আহত করেছে
ইকুয়েডোরের ইন্টারনেট ব্যবহারকারী এবং ফান্ডামিডিওস নামের সংগঠনগুলো রাষ্ট্রপতি কোরেয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যেন তিনি মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং নাম গোপন রেখে লেখার অধিকারের প্রতি আরো শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন, যে অধিকার ইকুয়েডোরের সংবিধান রয়েছে।