- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

জাপানের প্রয়োজন বর্ণবাদ, বলেছেন দেশটির এক প্রভাবশালী রক্ষণশীল লেখিকা

বিষয়বস্তু: পূর্ব এশিয়া, জাপান, আইন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, জাতি-বর্ণ, নাগরিক মাধ্যম, প্রচার মাধ্যম ও সাংবাদিকতা, মানবাধিকার, রাজনীতি, লিঙ্গ ও নারী, শিক্ষা, শ্রম
"Who is Ayako Sono really?" Image courtesy Kikatarou Yamazaki (originally from Shukan Kinyobi Jan. 24, 2014 issue)

এই আয়াকো সোনো আসলে কে? ছবি কিকাতারো ইমাজাকির (মূল ছবিটি নেওয়া হয়েছে শুকান কিনাইয়োবির,২৪ জানুয়ারি, ২০১৪-সংখ্যা থেকে)।

সানকেই শিনবান [1] নামক সংবাদপত্রের কাগজে ছাপা সংখ্যায় লেখা প্রবন্ধে জাপানের প্রখ্যাত লেখিকা এবং রক্ষণশীল রাজনৈতিক একটিভিস্ট আয়াকো সোনো [2] এই বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করেন যে জাপানে আসা অভিবাসীদের বর্ণের ভিত্তিতে আলাদা করে তাদের বাধ্যতামূলক ভাবে বিশেষ এলাকায় বাস করতে দেওয়া উচিত। .

জাপানে ক্রমশ বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে থাকার ফলে দেশটিতে অভিবাসীদের হার বাড়ানো হবে কি না এই বিতর্কের মাঝে সোনোর লেখা এই প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রাক্তন জাপান বিষয়ক সংবাদদাতা হিরোকো তাবুচি লিখেছে:

বর্ণবাদ নিয়ে জাপানের এক আলোচনার প্রয়োজন (২) সানকেই-এর সম্পাদকীয়তে অনেকটা দক্ষিণ আফ্রিকার মত বর্ণবৈষম্যের সুরে কেবল অভিবাসীদের আলাদা করতে বলা হয়েছে।

এদিকে স্বাস্থ্য সেবার পরিচর্যা বিভাগ যে শ্রম ঘাটতির মত কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে তা কমিয়ে আনার জন্য জাপানকে অভিবাসীদের দেশটিতে প্রবেশ করতে দিতে হচ্ছে। সানকেই – এর প্রবন্ধে সোনো বলছে ওই সকল কর্মীদের কঠোর ভাবে অভিবাসী মর্যাদা বজায় রাখার জন্য জাপানের এক আইনগত কাঠামো নির্মাণ করা প্রয়োজন এবং তাদেরকে এখানে একীভূত হওয়ার কোন সুযোগ প্রদান করা যাবে না।

ভদ্রমহিলা এরপর বর্ণবাদের প্রয়োগের ক্ষেত্রে এক ভাল উদাহরণ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন বর্ণবাদ পদ্ধতির বিষয়টি উদ্ধৃত করেন।

জাপানের অনলাইনে সানোর প্রবন্ধ বিরক্তির কারণ ঘটাচ্ছে এই বিষয়টি খেয়াল করার পর নিপ্পন.কম –এর সম্পাদক এবং লেখক পিটার ডারফি [5] লেখিকার সানকেই-এ প্রকাশিত পুরো প্রবন্ধ অনুবাদ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

এই প্রবন্ধ সম্বন্ধে জাপানী নাগরিকদের কাছ থেকে আসা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ক্ষুব্ধ মন্তব্যের কারণে কেবল এটিকে খেয়াল করেছি এবং এর অনুবাদ করেছি।

ডারফি দ্বারা অনুবাদকৃত সানকেই শিম্বুন –এ প্রকাশিত আয়াকো সোনোর প্রবন্ধের অনুবাদ থেকে খানিকটা অংশ : [9]

এখন থেকে ২০ থেকে ৩০ বছর আগের দক্ষিণ আফ্রিকার পরিস্থিতি সম্বন্ধে যখন আমি জানতে পারলাম, তাতে আমি আশ্বস্ত হলাম যে ভিন্ন ভিন্ন বর্ণের জনগোষ্ঠীর আলাদা ভাবে বাসবাস করার সেটাই ছিল সেরা উপায়, যেভাবে সে দেশে সাদা, এশীয় এবং কালোরা বাস করত।

আয়াকো সোনোর সানকেইতে প্রকাশিত প্রবন্ধটির পিটার ডারফিকৃত পুরো অনুবাদ [9] পাঠ করুন এখানে [9]

জাপানে সোনোর বিতর্ক তৈরী করা নতুন কিছু নয়:

সানকেইর সাথে সম্পর্কিত নয়, তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সম্বন্ধে ইতিবাচক ভাবনা সম্বলিত সোনোর লেখা এক নতুন প্রবন্ধ খুঁজে পেয়েছি…

সবচেয়ে উপরের শিরোনাম, যুদ্ধের ৭০ বছর পর, কেবল সাধারণকৃত “মানবতার” ভিত্তিতে যুদ্ধ বিরোধী আবেগ পরবর্তী প্রজন্মের কাছে হস্তান্তর করা যথেষ্ট নয়।

পরের শিরোনাম “যুদ্ধের বিয়োগান্তক ঘটনার বাইরে, জাতী হিসেবে এখন থেকে আমরা যে জ্ঞান অর্জন করেছে আমাদের সে সব বিষয়ও স্মরণ করার আছে”

বর্ণবৈষম্য নিয়ে সোনোর করা মন্তব্য এখানে উল্লেখযোগ্য বিষয়, কারণ ১৯৩১ সালে জন্ম নেওয়া সোনো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী জাপানের এক প্রখ্যাত লেখিকা এবং রাজনৈতিক একটিভিস্ট, সে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের শিক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছে, সে জাপানের শিক্ষা বোর্ডের পদে আসীন ছিল, পাশাপাশি সে জাপানের জাতীয় প্রচার মাধ্যম এনএইচকে-এর বোর্ডের পদেও আসীন ছিল [15]

সোনো একই সাথে পেরুর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি কুখ্যাত আলবার্টো ফুজিমোরির সমর্থক এবং ৯০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে [16] সে বিতর্কিত নিপ্পন ফাউন্ডেশনের [17] সভাপতির পদে আসীন ছিল।

আয়াকো সোনো-কে নিয়ে সমস্যা হচ্ছে তিনি জাপানের প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সংস্কার কমিটির [20] এক সদস্য। এই কাজে আবে সরকার তার উপর দারুণ রকম নির্ভরশীল। এই বিষয়টি জেনে নেওয়া একটা ভাল চিন্তা যে তার ভাবনার সাথে সরকারের নীতির মিল আছে কি না।

অন্য নেট নাগরিকরা বিস্মিত যে আসলে সোনো কি ভাবছে। উল্লেখযোগ্য ওয়েব বিষয়ক বিনিয়োগকারী এবং অনলাইনে প্রভাব সৃষ্টিকারী তাকাফুমি হোরিয়ে বলছে:

চিন্তায় সে খানিকটা মজাদার!

Others point out that such comments are parochial at best, especially অন্যেরা উল্লেখ করছে, বিশেষ করে ২০২০ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের কথা বিবেচনা করলে তার এই মন্তব্যকে বড়জোর সংকীর্ণমনা বলা যেতে পারে:

আগামী অলিম্পিকের কথা মাথায় রেখে লেখিকা বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরার চেষ্টা করছে।

দক্ষিণ আফ্রিকার একজন মন্তব্যকারী তার মন্তব্যে বিরক্তির এই অনুভুতি রেখে গেছে:

এমনকি এই ধরনের লেখা দক্ষিণ আফ্রিকায় ছাপা হয় না, কারণ এটা আমাদের সংবাদপত্রের নীতিমালা ভঙ্গ করে এবং বৈষম্যকে প্ররোচিত করে।