এই পোস্টটি প্রথমে আরশে শেভম-এ ছাপা হয় এবং লেখা বিনিমিয় চুক্তি অনুসারে এটা এখানে প্রকাশ করা হয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরসমূহে, ইরানের পশ্চিম এবং উত্তরের প্রদেশগুলোয় মরুঝড় প্রচণ্ড এক পরিবেশ বিষয়ক উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা ইরান এবং এই অঞ্চলের লক্ষ লক্ষ নাগরিকের স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ বিপন্ন করছে।
খুজেস্তান শ্বাস নিতে পারছে না (# খুজেস্তানকান্টব্রেথ) নামক হ্যাশট্যাগ এর মাধ্যমে ইরানের খুজেস্তান প্রদেশের এই সমস্যার প্রতি সবার মনোযোগ আকর্ষণ করার চেষ্টা করা হয়েছে যেখানে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর আহওয়াজ-এর অবস্থান। বিশ্বের তাৎক্ষনিক প্রদর্শিত (রিয়াল টাইমে) বায়ুপ্রবাহ মানচিত্র দেখাচ্ছে যে ইরাক, সৌদি আরব ও দক্ষিণপশ্চিম আফ্রিকার-এর মত বিভিন্ন স্থান থেকে বায়ু ইরানের দক্ষিণপশ্চিম প্রান্তে এসে হাজির হচ্ছে।
আহওয়াজ এফসি ফুটবল দল সম্প্রতি একটি ছবি টুইট করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে খেলোয়াড়রা দূষিত বায়ুতে অনুশীলন করছে :
اینجا #اهواز است #KhuzestanCantBreathe pic.twitter.com/Kn6DWIJbuc
— Foolad FC (@FooladFC) February 10, 2015
এই হচ্ছে আহওয়াজ।
দক্ষিণপশ্চিম ইরানের এই সমস্যাকে তুলে ধরে এগারোটি এনজিও জাতিসংঘের কাছে চিঠি লিখেছে, যাতে সংস্থাটি এই সমস্যার প্রতি সাড়া দেওয়ার জন্য সরকারের উপর প্রতি চাপ সৃষ্টি করে। তাদের লেখা এই চিঠিটা পাঠ করুন এখানে।
স্যাম খোসরাভির সাক্ষাৎকার
ভারী ধূলিঝড় ইরানের দক্ষিণ পশ্চিমের আহওয়াজ-এর মত শহরের আকাশ ঢেকে ফেলেছে ভূমিকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে। এই ঝড় বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর হিসাবে আহওয়াজকে পরিণত করার ক্ষেত্রে অবদান রেখেছে।
আরশে শেভম এর পক্ষ থেকে পরিবেশবাদী গবেষক শ্যাম খোশরাভিকে এই ধূলিঝড়-এর উৎপত্তিস্থল এবং ভারী মাত্রার দূষণ কারণ সম্বন্ধে মন্তব্য করার জন্য আহবান জানানো হয়েছিল। আমরা তাকে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন করেছিলাম। খুজেস্তান কি তেহরানের মত শিল্প দূষণের শিকার? কেন সাম্প্রতিক বছরগুলোয় এই ধূলিঝড়ের পরিমান এবং তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে?
এই বালি এবং ধূলিঝড়ের উৎপত্তির কারণ সম্বন্ধে আমাদের কি জানাতে পারেন?
আসলে, বিভিন্ন উৎস থেকে ধূলিঝড়ের উৎপত্তি হতে পারে, একই সাথে শিল্প স্থাপন ও প্রাকৃতিক কারণে ঘটতে পারে। যা ঘটছে এই বিষয়ে বর্তমান প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে হঠাৎ করে ধূলিঝড়ের আগমন-এর পেছনে শিল্পায়ন কারণ নয়।
এই ধূলিঝড়ের উৎপত্তির অবশ্যই কোন এক কারণ থাকার কথা
যতদূর পর্যন্ত জানা যায়, প্রাকৃতিক এবং মানব সৃষ্ট তিনটি বিষয়কে এই বিপর্যয় কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ভু-উপগ্রহ থেকে তোলা ছবিতে দেখা যাচ্ছে যে সিরিয়া এবং ইরাক বিশেষ এই সময়ে এই ধরনের ধূলিঝড় সৃষ্টিতে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। উত্তর আফ্রিকার মরুভূমিও বালি এবং ধূলি ঝড়ের আরেকটি উৎস। তেহরান বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা যাচ্ছে যে ক্রমশ জলাভূমি কমে আসতে থাকার কারণে এই ধরনের ঝড় সৃষ্টি হচ্ছে। এর সুনিদিষ্ট কারণ নিশ্চিত করার জন্য আমাদের এই বিষয়ে আরো নিবিড় গবেষণা পরিচালনা করা দরকার।
ধূলিঝড় এই অঞ্চলে নতুন নয়। তাহলে কেন সাম্প্রতিক সময়ে এই সমস্ত ঝড় এ অঞ্চলের মানুষদের জন্য বিপর্যয়কর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে?
পানির উৎস ক্রমশ কমে আসা এবং প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা দেওয়াল ক্রমশ অদৃশ্য হতে থাকার সাথে আবহাওয়ার পরিবর্তন এই ঝড়কে আরো বিপর্যয়কর করে তুলেছে। কয়েকটি মডেলে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে আগামীতে আরো এ ধরনের ঝড় হতে থাকবে।
কি ভাবে এই পরিবেশ বিপর্যয় সমস্যার সমাধান করা যায়?
অনেক আগে থেকে ইরানে আমরা এই ধরনের ঝড় বয়ে আসতে দেখছি, যেমন, দেশের দক্ষিণ অংশে বয়ে যাওয়া “নাসি” নামক বায়ুপ্রবাহের কথা ভাবুন। সমস্যা হচ্ছে অতীতের তুলনায় এই সমস্ত ঝড়ের প্রচণ্ডতা বেড়ে গেছে।
এর কোন স্বল্প মেয়াদি সমাধান নেই। রাতারাতি এই সকল সমস্যার সৃষ্টি হয়নি এবং রাতারাতি এগুলোর সমাধান সম্ভব নয়। দ্রুত আমাদের এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যগত বিষয় নিয়ে ভাবতে হবে এবং তাদের সেই সকল উপাদান সরবরাহ করতে হবে যা দিয়ে এই ঝড়ের প্রভাব সৃষ্ট সমস্যা দূর করতে পারে। এই এলাকায় সরকারি সংগঠন যে সময় ধরে কাজ করে তার পরিমাণ কমিয়ে আনা, এবং এই অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ সরবরাহকারী দলের সক্রিয় হয়ে ওঠা উচিত এবং গৃহে বায়ু চলাচলের জন উপযুক্ত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা উচিত।
এই সমস্যার দীর্ঘ মেয়াদি সমাধান বেশ কঠিন। এর জন্য সময় এবং টাকা দরকার। মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান পরিস্থিতি বিশেষ করে সিরিয়া, ইরাক এবং ইরানের দৃষ্টিভঙ্গির মাঝে মনে হয় না কোন কিছু করা সম্ভব।
মৃত পরিবেশ ব্যবস্থাকে আবার সজীব করার জন্য বেশ কিছু ধারাবাহিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। বিষয়টি যদিও বেশ কঠিন তবে আমি করি তা করা সম্ভব।
ফার্সি ভাষার এই লিঙ্ক থেকে এটি অনুবাদ করা হয়েছে: http://www.arsehsevom.net/fa/