২৫ বছর আগে মার্কিনীদের চালানো এক হামলায় সৃষ্ট ক্ষত সারিয়ে তুলতে জাতীয় মীমাংসার একটি প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে পানামা। এটি এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা,যা সামরিক সমর্থকদের মনে ক্ষত সৃষ্টি করেছিল। দাপ্তরিকভাবে দাবি করা হয়েছে, এই হামলাতে ৫০০ জন (যদিও মানবাধিকার সংস্থাগুলো দাবি করেছে যে এই সংখ্যা কয়েক হাজার ছাড়িয়ে গেছে) লোকের প্রাণহানি ঘটেছে। পানামানিয়ানদের ক্ষতিপূরণের পক্ষে যারা সোচ্চার ছিলেন,তাঁদের বিরুদ্ধে এই সামরিক আক্রমণ চালানো হয়।
পানামানিয়ান স্বৈরশাসক ম্যানুয়েল নোরিয়েগার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাস্তবায়ন করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০ ডিসেম্বর, ১৯৮৯ তারিখে “অপারেশন জাস্ট কজ” শুরু করে। এক সময় এই স্বৈরশাসক যুক্তরাষ্টেরের ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিলেন। তাকে মিয়ামি আদালত আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৮৮ সালে মাদক পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত করে। অপারেশন চালানোর সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অত্যন্ত অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সজ্জিত বিমান এবং ২৪ হাজার সৈন্য দেশটিতে মোতায়েন করে, যেখানে দেশটির সেনাবাহিনী নিউইয়র্ক শহরের পুলিশ বিভাগের চেয়েও ছোট।
25 years ago today the new “sole superpower” US invaded Panama, killing more people than were killed on 9/11. http://t.co/Eorq4Byqv6
— Dave Winer ☮ (@davewiner) December 20, 2014
২৫ বছর আগে আজকের নতুন “একমাত্র অত্যন্ত শক্তিশালী জাতি” মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পানামা আক্রমণ করে। তাঁরা সে সময় ৯/১১ তে নিহত লোকের চেয়েও বেশী মানুষ হত্যা করেছিল।
পানামার প্রেসিডেন্ট জুয়ান কার্লোস ভ্যারেলা গত মাসে মার্কিন আক্রমণের স্মৃতি উদযাপন অনুষ্ঠানের সময় গত মাসে জাতীয় সমঝোতা প্রচারাভিযানের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনিই প্রথম পানামানিয়ান প্রেসিডেন্ট, যিনি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপে ক্ষতিগ্রস্তদের সম্মানে শ্রদ্ধা জানাতে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেছেন।
ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসাবেল ডি সেইন্ট মালোকে আমরা নিযুক্ত করেছি, যেন জাতীয় সমঝোতা এবং ক্ষত নিরাময়ে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে এই মূহুর্ত থেকে আমরা একটি গুরুতর প্রচেষ্টা এবং প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কাজ শুরু করতে পারি।
তার এই ঘোষণাতে জনগনের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। পানামানিয়ানদের অনেকেই জাতির যন্ত্রণাগ্রস্ত অতীতকে পিছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। অপরদিকে প্রায় ১০০ জন মানুষকে অমীমাংসিতভাবে হত্যা করা এবং গুম করায় অন্যান্য পানামানিয়ানরা এখনও নোরিয়েগার নিন্দা করেন। কেননা তার শাসনামলেই এসব হত্যাকান্ড ও গুমের ঘটনা ঘটেছে।
#Panama remembers 25th anniversary of US invasion, Nation prospering as #Noriega, now 80, sits in prison in homeland http://t.co/J5nCp16kL8
— Christina Hoag (@ChristinaHoag) December 21, 2014
মার্কিন আগ্রাসনের ২৫ তম বার্ষিকী পানামা স্মরণ করছে। এ উপলক্ষে পানামিয়ানরা #নোরিয়েগা হাশট্যাগ ব্যবহার করছে। তাঁর বয়স এখন ৮০। তিনি স্বদেশের কারাগারে বন্দি আছেন।
yesterday was 25 yr anniversary of operation “Just Cause,” US invasion to restore democracy to #Panama and keep the canal away from Noriega.
— Eric Farnsworth (@ericfarns) December 21, 2014
গতকাল ছিল “জাস্ট কজ” অপারেশনের ২৫ বছর বার্ষিকী। সেটি ছিল #পানামায় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য এবং নোরিয়েগার কাছ থেকে খাল দূরে রাখতে এক মার্কিন আগ্রাসন।
বলা হয় যে, পানামাতে মার্কিন আক্রমণ পানামানিয়ান জনগনের মনে এক অমোচনীয় চিহ্ন রেখে গেছে। কেউ কেউ এ ঘটনায় জাতীয় শোক দিবস পালনের দাবি জানান। মার্কিনীরা এই আক্রমণের জন্য কোন রকম ক্ষমা প্রার্থনা করেনি বা মার্কিন সেনাদের হাতে নিহতদের গণকবরগুলোর অবস্থানও তাঁরা প্রকাশ করেনি, এ বিষয়টি লক্ষ্য রেখে এ দাবি জানানো হয়।
#LRT: Panama invasion is one of the most senseless and ruthless invasions in US history, even if not as grand in scale
— nu-metal dad (@YakovPettersson) December 27, 2014
#এলআরটিঃ মার্কিন ইতিহাসে সবচেয়ে বিবেকহীন এবং নির্মম আগ্রাসন ছিল পানামা আক্রমণ।
‘আক্রমণের স্মৃতি থেকে’ ব্লগ পানামানিয়ান লেখক ম্যানুয়েল ওরেস্টেস নিয়েটোর উদ্ধৃতি দিয়েছেঃ
La vejación a la patria es una página que no se puede pasar. 25 años después es ya demasiado tiempo; al país se le debe una respuesta a la severa y amarga pregunta que sigue en pie y que es un reproche para el invasor y, quizás, más terrible para nosotros los panameños: ¿Cuántos murieron en la invasión a Panamá? Los cadáveres volatilizados no se podrán recuperar, pero sí los que fueron tirados a fosas comunes. ¿Cuántos son, quiénes son y dónde están? Los asesinados no pueden quedar en la bruma y el olvido.
দেশটির এই অপমানকর পরিণতি কখনই ভুলবার নয়। পঁচিশ বছর খুব দীর্ঘ সময়। সেই হানাদারদের সামনে জিজ্ঞাসা করা তিক্ত প্রশ্নের প্রতিক্রিয়া জানাতে আমরা বাধ্য। কেননা সেই তিক্ত প্রশ্নগুলো এখনও আমাদের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং তাড়া করে বেড়ায়ঃ পানামাতে চালানো হামলায় কতজন মারা গেছেন? হাওয়ায় মিলিয়ে যাওয়া মৃতদেহগুলো আবার ফিরে পাওয়া যাবে না, তবে যাদের গণকবরে ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে সে সব মৃতদেহগুলো খুঁজে বের করা সম্ভব। কতজনকে গণকবরে কবর দেয়া হয়েছে? তারা কে এবং তারা কোথায় আছেন? এই খুন হওয়া মানুষগুলো কুয়াশায় ঢেকে যেতে কিংবা বিস্মৃতিতে পরিণত হতে পারেন না।