রাইজিং ভয়েসেসের অনুদান প্রকল্পের হালনাগাদ
মানবাধিকার এবং সামাজিক পরিবর্তন সম্পর্কে বলিষ্ঠ কথোপকথন শুরু করতে কম্বোডিয়ান ব্লগার তথা ক্লগারদের মাঝে ইন্টারনেটের ব্যবহার ক্রমবর্ধমানভাবে বেড়েই চলেছে। তাদের মাঝে এক দল ক্ষমতাসীন নারী আছেন, যারা ক্লঘার নামে পরিচিত। তাদের মতামত প্রকাশ করতে তারা ব্লগের ব্যবহার চালিয়ে যাছেন।
সিসিএইচআর এর ক্লঘারদের ক্ষমতায়ন প্রকল্প কম্বোডিয়ান নারীদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকে। বিশেষ করে, যারা নমপেনে পড়াশুনা করছেন। এ প্রশিক্ষণে তাদের নিজস্ব ব্লগ শুরু করতে প্রয়োজনীয় দক্ষতা প্রদান করা হয়ে থাকে। প্রারম্ভিক প্রশিক্ষণের পরপরই কয়েকজন ক্লঘার এবং তাদের ব্লগ আপনাদের কাছে উপস্থাপন করতে পেরে আমরা বেশ আলোড়িত।
কম্বোডিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে তাদের স্বপ্নগুলো শেয়ার করতে এই ক্লঘারেরা তাদের ব্লগগুলো ব্যবহার করছেন। উদাহরণস্বরূপ কাং ভিলায় দাবি করেছেন, “ন্যায়বিচারকে উন্নীত করা এবং মানবাধিকার, বিশেষ করে ন্যায় বিচারের অধিকার রক্ষার তীব্র অনুরাগ আমার আছে”। আর তা অর্জন করতে তিনি তাঁর ব্লগকে ব্যবহার করছেন। শিক্ষা হচ্ছে এমন আরেকটি ইস্যু যার সম্বন্ধে ক্লঘাররা বেশ অনুরাগী। উং মেয়লেন বলেছেন, “আমি শিক্ষায় বিশ্বাস করি, এটি ছাড়া আমরা বিশ্বকে সাহায্য করতে পারব না। শিক্ষা সবার জন্য উন্মুক্ত হওয়া উচিৎ।” তাদের বৈচিত্র্যময় স্বপ্ন থাকা সত্ত্বেও এটি স্পষ্ট যে উন্নততর কম্বোডিয়া তৈরি করতে ক্লঘাররেরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ক্লঘারদের মাঝে অনেককেই বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার জন্য তাদের গ্রামের বাড়ি থেকে নমপেনে চলে আসতে হয়েছে। তারা বিভিন্ন প্রদেশের নানা অঞ্চল থেকে এসেছেন। তারা পড়াশুনার জন্য বিভিন্ন বিষয় বেছে নিচ্ছেন। পাশাপাশি অনেকেই নারীদের প্রচলিত ধারার ভূমিকাকে অগ্রাহ্য করছেন। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, ক্লঘার বো ব্রান্ডা তথ্য প্রযুক্তি বিষয়টি বেছে নিয়েছেন। এ বিষয়ে নারীদের পড়াশুনা বেশ বিরল। আরেকজন ক্লঘার সাম ড্যানি তাঁর প্রতিবেশীর কথা স্মরণ করেছেন, যিনি মেয়েদের পড়াশুনা করতে নিরুৎসাহিত করতেন। এত বাঁধা সত্ত্বেও তিনি এখন রয়েল আইন এবং অর্থনীতি বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রধানত আইন বিষয়ে তাঁর লেখাপড়া সম্পন্ন করছেন।
কর্মক্ষেত্রেও ক্লঘারদের যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে তরুণ ভিকনির কথা উল্লেখ করা যায়। তিনি তরুণ সম্পদ উন্নয়ন কার্যক্রমের অধীনে একটি জলবায়ু পরিবর্তন প্রকল্পে কাজ করেছেন। বিভিন্ন নির্বাচন, মানবাধিকার এবং শান্তি সপক্ষতা বিষয়ে বিভিন্ন এনজিওর সাথে সেং স্রিয়াংঘং কাজ করেছেন। ক্লঘারদের এই বিচিত্র অভিজ্ঞতা এবং জ্ঞান এটাই প্রমাণ করছে যে সকল পটভূমি থেকে আসা নারীরাই তাদের সমাজের ভিতরে নানা পরিবর্তন আনতে ইতিবাচক ভূমিকা পালনের ক্ষমতা রাখেন।
ব্লগ লেখা নিয়ে এই ক্লঘারেরা আরও বেশি আবেগপ্রবণ। হং সোখেয়াং গবেষণা করতে এবং “কম্বোডিয়া এবং সারা বিশ্বজুড়ে থাকা অন্যান্য দেশ সম্পর্কিত বিভিন্ন সংবাদ শেয়ার করতে” বেশ উপভোগ করেন। সকল ক্লঘার যে বিশেষ গুণের অধিকারী হতে চান সে সম্পর্কে স্রেয়াংঘং তাঁর হৃদায়নুভূতি প্রকাশ করেছেন। সে সময় তিনি বলেছেন, “আমি পড়াশোনার ক্ষেত্রে কঠোর পরিশ্রম করব এবং ভবিষ্যতে একজন ভালো ব্লগার হব”।
সর্বোপরি এই ক্লঘারেরা এমন এক কম্বোডিয়ান তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব করেন, যারা সামাজিক পরিবর্তন এবং মানবাধিকার নিয়ে বেশ আবেগপ্রবণ। আমরা সকল কম্বোডিয়ানদের তাদের ব্লগগুলো পড়ে দেখার এবং উদ্ভূত আলোচনাতে অবদান রাখতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। কেননা কম্বোডিয়াতে মানবাধিকারের ভবিষ্যতের জন্য এসব আলোচনা অত্যন্ত মৌলিক বিষয়।
ক্লঘারদের ব্লগগুলো আপনারা এখানে অনুসরণ করতে পারবেনঃ