অনলাইনে সম্প্রচারিত হচ্ছে আচুয়ার এবং শোর সম্প্রদায়ের কণ্ঠস্বর

রাইজিং ভয়েসেসের অনুদান প্রকল্পের হালনাগাদ

Photo provided by project.

ছবিঃ প্রকল্প থেকে নেওয়া

একজন আচুয়ার বন্ধুকে আমি বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে বললাম, “দ্যাখো, আমাজনিয়ান সম্প্রদায়ের কোন অনলাইন বেতার কেন্দ্র নেই”। তিনি আমাকে বললেন, এটা সত্যি। আর এটি যদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জন্য না হতো, তবে আদিবাসী লোকজন যে কমিউনিটি বেতার কেন্দ্র পরিচালনা করে থাকেন তা আমাজন অঞ্চলের বাইরে বসবাসকারী লোকদের অজানা থাকত। আমরা আমাদের নিজেদের ভাষায় বেতার কার্যক্রম পরিচালনা করছি। তিনি আরও বলেছেন, “চলুন, একটি অনলাইন বেতার কেন্দ্র চালু করি!”

এভাবে আমাজনিয়ান সাম্প্রদায় বেতার কেন্দ্রটিকে সাহায্য করার ভাবনা থেকেই আমরা রাইজিং ভয়েসেসের কাছে এসে পৌছেছি। আমাজনিয়ান সম্প্রদায় বেতার কেন্দ্রের নিজস্ব ওয়েবসাইট থাকবে এবং সেখানে বিরতিহীনভাবে অনলাইন কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে, এমন ভাবনাকে রূপান্তরিত করার ছোট সংকল্প নিয়ে আমরা রাইজিং ভয়েসেসের শরণাপন্ন হয়েছি।

আরুটাম বেতার কণ্ঠস্বর, এনএই বেতার কণ্ঠস্বর এবং জলপ্রপাত বেতার কণ্ঠস্বরের মাধ্যমে  প্রকল্পটি ইকুয়েডোরিয়ান আমাজন অঞ্চলে বসবাসরত আদিবাসী আচুয়ার এবং শোর জনগণের কণ্ঠস্বর প্রচারে সাহায্য করতে চায়। এগুলো এফএম বেতারে সম্প্রচারিত হবে, যেন ইন্টারনেটে তাদের বিভিন্ন তথ্য, গল্প এবং তাদের নিজস্ব ভাষার গানগুলো শেয়ার করা যায়।

এ কারনে আদিবাসী জনগণ, বিশেষত তরুণদের জন্য আমরা একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালনা করব। সেখানে তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরির জন্য, অনলাইন সম্প্রচার এবং পডকাস্টিং এর জন্য বিনামূল্যে পাওয়া বিভিন্ন সম্ভারের ব্যবহার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। এতে করে শোর এবং আচুয়ারদের নানা প্রজন্মের মাঝে নিজস্ব ভাষায় কথোপকথন আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে।

আরুটাম বেতার কণ্ঠস্বর হচ্ছে আমাজনের সবচেয়ে পুরনো বেতার কেন্দ্রের একটি। শোর কেন্দ্রের আন্তপ্রদেশীয় জোটের সাংগঠনিক প্রক্রিয়ার একটি অংশ হিসেবেও এটি কাজ করে থাকে। বেতারটি এখন পর্যন্ত এমন একটি ওয়েবসাইটে সম্প্রচারিত হয়ে এসেছে, যেটি কখনও হালনাগাদ করা হয়নি। এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য বাস্তবতা, সংগ্রাম, সংস্কৃতি এবং শোর জনগণের পরিচিতিকে প্রতিফলিত করে না। 

এনএই বেতার কণ্ঠস্বর একটি নতুন বেতার কেন্দ্র এবং ইকুয়েডরের প্রথম আচুয়ার বেতার কেন্দ্র। প্রাথমিকভাবে তাইশা’তে বেতার কেন্দ্রটির সদরদপ্তর স্থাপন করা হয়েছে। পেরুর সীমান্তে অবস্থিত ঘন জঙ্গলে এই ছোট এনএইসম্প্রদায়ের বসবাস। প্রযুক্তিগত কারণে এখানকার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা আস্থা স্থাপনের অযোগ্য। তাই বেতার কেন্দ্রটি মাকাস শহরে স্থানান্তর করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যে সব লোকজন তাদের পরিবারের কাছে নিজেদের খবরাখবর জানাতে বেতার কেন্দ্রটিতে আসেন তাদের কণ্ঠস্বর সেখান থেকে সম্প্রচার করা হয়। তারা তাদের নিজস্ব ভাষায় কথা বলে অথবা তাদের জাতীয়তা বিশিষ্ট শিল্পীদের গান শেয়ার করে অথবা তাদের দাদা-দাদিদের গানগুলোকে আরও বেশি পূর্ণতা দিয়ে এখান থেকে জঙ্গলের ভিতরে তাদের বার্তা পৌঁছে দেন।

কাসকাডেসের বেতার কণ্ঠস্বর একটি নতুন বেতার কেন্দ্র। শোর আরুটাম সম্প্রদায়ের লোকজনের প্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বেতার কেন্দ্রটি তৈরি করা হয়েছে। এটি টিউইনজা গোষ্ঠীতে অবস্থিত। বেতারটির কোন ইন্টারনেট সংযোগ নেই। তবে এই প্রকল্পের জন্য আমরা সুকুয়া থেকে অনুষ্ঠান সম্প্রচার করব। কেননা এটি একটি বেতার সদরদপ্তর। শোর সম্প্রদায়ের অনেক তরুণ ওয়েবসাইটে তাদের লেখা প্রকাশ করতে চান। সম্প্রদায়ের লোকেদের নিত্য দিনের কাজ নিয়ে তারা একটি নতুন প্রচার সূচী তৈরি করতে চান। 

শোর এবং আচুয়ার সম্প্রদায়ের লোকজন পরস্পর ভাই ভাই। তাদের কণ্ঠস্বরগুলো আশেপাশের গ্রামগুলোর গল্প আমাদের বলে থাকে। উপনিবেশ স্থাপনের প্রক্রিয়া চলতে থাকা সত্ত্বেও এখনও তারা তাদের ভাষা, তাদের গল্প, তাদের ভূখন্ড এবং তাদের জীবন টিকিয়ে রেখেছেন।

ওয়াম্ব্রা বেতারে প্রকল্পটিকে অনুসরন করুন।    

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .