নাসানএঙ্গপাঙ্গুলো নামক হ্যাশট্যাগ, টাগালোগ ভাষায় যার অর্থ হচ্ছে “ রাষ্ট্রপতি কোথায়” তা বিশ্বজুড়ে টুইটারে সবচেয়ে আলোচিত ধারার একটিতে পরিণত হয়েছে, বিশেষ করে যখন ফিলিপাইনের নাগরিকরা বিশেষ অভিযানে নিহত বাছাইকৃত বিশেষ শ্রেণীর পুলিশ সদস্যদের সম্মাননা অনুষ্ঠান এড়িয়ে যাওয়ার [2]কারণে রাষ্ট্রপতি পিনয়ের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশে এই হ্যাশট্যাগটিকে ব্যবহার করে।
নিহত পুলিশ সদস্যদের সম্মানে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার বদলে একুইনো (পিনয়) লাগুনার (ম্যানিলার দক্ষিণের এক প্রদেশ) মিৎসুবিশি নামক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের এক নতুন গাড়ি নির্মাণ কারখানা উদ্বোধন অনুষ্ঠানের [3] প্রতি কৃপা প্রদর্শন করলেন। দক্ষিণ ফিলিপাইনের মামাসাপানোর-এর মাগুইন্দানাও শহর থেকে বয়ে আনা কফিন রাখা নিহত পুলিশ সদস্যদের লাশ ভিলামোর বিমান ঘাঁটিতে এসে উপস্থিত হয়।
মরো বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহী দ্বারা পরিচালিত মামাসাপানো এলাকায় রাষ্ট্র বনাম মরো বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মাঝে চলা ১১ ঘণ্টার এক ব্যর্থ সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানে [4] ফিলিপাইনের ন্যাশনাল পুলিশ-স্পেশাল এ্যাকশন ফোর্স (পিএনপি-এসএএফ) নামক বাহিনীর ৪৪ জন সদস্য নিহত হয়।
নিহত এই সকল সদস্য সেই ৪০০ পুলিশের এক অংশ ছিল, যারা ২০০২ সালে বালি দ্বীপে সংঘঠিত বোমা বিস্ফোরণের মূল হোতা এই এলাকায় লুকিয়ে আছে এই সংবাদের ভিত্তিতে তাকে ধরার অভিযানে অংশ নিতে এখানে এসে উপস্থিত হয়। উক্ত সন্দেহভাজন অভিযুক্ত জুলকিফলি বিন হির ওরফে মারওয়ানকে ধরার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকার ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে।
এই সকল নিহত পুলিশ সদস্যদের লাশ আগমন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি একুইনোর অনুপস্থিতিকে বিদ্রূপ করে তৈরী করে বেশ কিছু ধারাবাহিক মীম (ইন্টারনেট বিদ্রূপ) ফেসবুক এবং টুইটারের মত স্যোশাল সাইটে প্রদর্শিত হয়েছে।
ফিলিপিনো নেট নাগরিকরা সেই বিষয়টি স্মরণ করেছে, রাষ্ট্রের জন্য জীবন উৎসর্গকৃত অনেক বড় ধরনের বেদনাদায়ক ঘটনায় উপস্থিত না হয়ে বরং কি ভাবে রাষ্ট্রপতি একুইনো বড় বড় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও সেলিব্রেটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছে।
Attendance of our president! #NasaanAngPangulo [5] pic.twitter.com/yh7hCmaGh7 [6]
— PAPA JACK ® (@PapaJackQuote) January 29, 2015 [7]
যে সকল অনুষ্ঠানে আমাদের রাষ্ট্রপতির উপস্থিতি দেখা যায়।
#NasaanAngPangulo [5] okay pic.twitter.com/MT2gjNbTiS [8]
— Ariane (@arinormously) February 4, 2015 [9]
অনেকে রাষ্ট্রপতির এই বক্তব্য তুলে ধরেছে যেটিতে তিনি বলেন “ আমি যাদের চিনি না, এমন ব্যক্তির মৃত্যুর অনুষ্ঠানে আমি শরীক হই না”। এই প্রেক্ষাপটে তাকে প্রশ্ন করা হয় কেন সে হিজড়া নারী জেনিফার লুউডের [10] শেষকৃত্যে শরীক হয়নি, অভিযোগ রয়েছে গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা তাকে এক হত্যা করেছে।
লেখিকা ক্যাটরিনা-সান্তিয়াগো তার এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে [11] নিহত এই বিশেষ শ্রেণীর পুলিশ সদস্যদের সম্মান প্রদর্শন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি একুইনোর অনুপস্থিতি বিপরীতে একই ধরনের ঘটনায় অন্য রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধানদের গুরুত্ব প্রদানের বিষয়টি তুলে ধরেছেন:
যখন এমএইচ১৭- নামক বিধ্বস্ত মালয়েশীয় বিমানের যাত্রীদের লাশ নেদারল্যান্ডে এসে পৌঁছালো, এবং দেশটির সরকারি কর্মকর্তা ও রাজ পরিবারের বাকী সদস্য সহ রাজা উলিয়াম আলেকজান্ডার ও রাণী মাক্সিমা অনুষ্ঠানে বসে থাকেন এবং দৃশ্যটি দেখেন ও জাতির সাথে কান্নায় এবং শোকে অংশগ্রহণ করেন যখন তাদের লাশগুলোকে বিমানে করে শাবযানে নিয়ে আসা হয়। মৃতদের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কিছুই হতে পারে না।
শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে প্রদান করা ভাষণে নিজের কথা বেশী এবং নিহত কর্মকর্তাদের কথা কম উচ্চারণ করার কারণে সেটিও অনলাইন রসিকতার বিষয়ে পরিণত হয়। জর্জ লুকাসের স্টার ওয়ারর্স-এর শুরুর দৃশ্যের একটি মীম প্রদর্শন করছে একুইনো সবসময় কি ভাবে তার বক্তৃতা শুরু করে থাকে।
শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে প্রদান করা ভাষণে নিজের কথা বেশী এবং নিহত কর্মকর্তাদের কথা কম উচ্চারণ করার কারণে একুইনোর বক্তৃতা [12] অনলাইন রসিকতার বিষয়ে পরিণত হয়। জর্জ লুকাসের স্টার ওয়ারর্স-এর শুরুর দৃশ্যের একটি মীম প্রদর্শন করছে সবসময় একুইনোর বক্তৃতা শুরুর মেজাজ কেমন হয়ে থাকে।
নিহত পুলিশ সদস্যদের লাশ এনে হাজির করার অনুষ্ঠানে একুইনোর অনুপস্থিতির বিষয়টির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে [14] রাষ্ট্রপতির মুখপাত্র জানান যে এটি তার নির্ধারিত অনুষ্ঠান সূচির মধ্যে ছিল। রাষ্ট্রপতি ভবনে এই বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি নেট নাগরিকদের খানিকটা সমালোচনা করেন [15], এতে তিনি উল্লেখ করেন যে সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিকদের দৃষ্টিভঙ্গি এতে প্রতিফলিত হয়নি।