গত মাসে ইন্দোনেশীয় পুলিশের হাতে নিহত অল্পবয়স্ক সাধারণ নাগরিকদের জন্য পশ্চিম পাপুয়ার একটিভিস্ট এবং স্বাধীনতার আওয়াজ তোলা নাগরিকরা ন্যায় বিচার দাবী করছে।
৮ ডিসেম্বর, ২০১৪ তারিখে ইন্দোনেশীয় নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে পানিয়াই জেলার ৮০০ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীর প্রতি সামনাসামনি গুলি করার অভিযোগ উঠেছে, সে সকল বিক্ষোভকারীর মধ্যে নারী ও শিশুও ছিল। আগের রাতে পুলিশ পাপুয়ার শিশুদের প্রহার করেছে এমন এক সংবাদের প্রতিক্রিয়ায় এই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সংবাদ [2] অনুসারে, এই ঘটনায় পাঁচজন নিহত হয় এবং অন্তত ১৭ জন বিক্ষোভকারী আহত হয়, উক্ত সংস্থা ব্যাখ্যা করছে যে এখানে মানবাধিকার লঙ্ঘন খুব সাধারণ এক ঘটনা:
ইন্দোনেশিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী, এই দ্বীপরাষ্ট্রের একেবারে পশ্চিমে অবস্থিত পাপুয়ায় মানবাধিকার লঙ্ঘন করেও যে পার পেয়ে যায় ৮ ডিসেম্বরের গুলি বর্ষণের ঘটনা তার এক প্রতীক। বিগত ১৫ বছর ধরে, হিউম্যান রাইট ওয়াচ এমন শত শত ঘটনা নথিবদ্ধ করেছে, যেখানে পাপুয়ার নাগরিকরা যখন কোন বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে, তখন তা মোকাবেলায় সেখানে পুলিশ, সামরিক বাহিনী, গোয়েন্দা কর্মকর্তা এবং কারারক্ষীরাও অপ্রয়োজনীয় অথবা বাড়াবাড়ি রকমের শক্তি প্রয়োগ করেছে। দিকে পাপুয়ায় নিরাপত্তা বাহিনীতে কর্মরত ব্যক্তির ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে সামান্য যে কয়টি সামরিক আদালত স্থাপন করা হয়েছে, তাতে অভিযোগের উপযুক্ত প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী সেনা তার দায়িত্ব পালন করে গেছে।
খনিজ সমৃদ্ধ মেলেনেশিয়া অঞ্চলের এক অংশ পশ্চিম পাপুয়া, ১৯৬০-এর দশকে ইন্দোনেশিয়ার সামরিক শাসক আত্মসাৎ করে নেয় [3], যার ফলে এলাকার বাসিন্দার বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়ে, তাদের কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয় এবং আদিবাসী নাগরিকরা মৃত্যুর মুখে পতিত হয়। ভয়াবহ রকমের মানবাধিকার লঙ্ঘন [4] এবং স্থানীয় সংস্কৃতিকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে পরিশুদ্ধ করার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও উপনিবেশিক শক্তি নাগরিকদের আত্ম-নিয়ন্ত্রণ এবং স্বাধীনতার দাবীকে দমিয়ে রাখতে পারেনি।
পশ্চিম পাপুয়ার স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা বেনি ওয়েন্ডা [5], যিনি যুক্তরাজ্যে নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছেন, তিনি সাধারণ নাগরিকদের হত্যার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন:
“We are blamed for violence we did not create and persecuted for expressing our desires to be free.”… http://t.co/NmDn4AaUXp [6]
— Benny Wenda (@BennyWenda) January 9, 2015 [7]
যে সহিংসতা আমাদের হাতে সংঘঠিত হয়নি তার জন্য আমাদের অভিযুক্ত করা হচ্ছে, আর স্বাধীন হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করার কারণে আমাদের বিচার করা হচ্ছে।
ওয়েন্ডা তার ওয়েবসাইটে [8], পশ্চিম পাপুয়ার তিমিকায় সংঘঠিত নির্মমতার জন্য ইন্দোনেশিয়ার সামরিক বাহিনীকে অভিযুক্ত করেছে :
আমি এই আবেদন জানাচ্ছি যে নিষ্পাপ এবং প্রতিরক্ষা বিহীন নাগরিকদের বিরুদ্ধে সংঘঠিত পুলিশের এই রকম নির্মমতা নজর এড়িয়ে যেতে পারে, বিশেষ করে বিশ্বের সর্ববৃহৎ সোনার খনির খুব কাছের এক এলাকায় ঘটা ঘটনা, যে স্বর্ণখনি ইন্দোনেশিয়া সবচেয়ে বেশী ট্যাক্স প্রদান করে।
টুইটারে, পশ্চিম পাপুয়ার নাগরিকদের কষ্টভোগ করার বিষয় নিয়ে মন্তব্য করেছে:
If you have ever lost a love one spare a though for the people of West Papua suffering murder rape and torture almost daily inhuman TNI
— Anthony Craig (@justicehealth) February 3, 2015 [9]
যদি আপনি কখনো ভালবাসা হারিয়ে ফেলেন তাহলে আপনার চিন্তার খানিকটা একবার পশ্চিম পাপুয়ার নাগরিকদের যন্ত্রণার বিষয়টি উপলব্ধির জন্য ব্যয় করুন, যারা প্রতিদিন এক অমানবিক জীবন যাপন করছে ইন্দোনেশিয়ার সামরিক বাহিনীর খুন, ধর্ষণ এবং অত্যাচারের মাঝে।
So is no one going to talk about West Papua? #Genocide [10] — Amen Oyiboke (@Amen2dat) February 2, 2015 [11]
তাহলে কেউ আর পশ্চিম পাপুয়া নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছেন না?
#WestPapua [12] It is not war, it is not a conflict, it is an #OCCUPATION [13], and it is one that receives all around international consent.
— non quis sed quid (@PurePapua) February 2, 2015 [14]
পশ্চিম পাপুয়ায় কোণ যুদ্ধ চলছে না, এখানে কোন সংঘর্ষ নেই, এখানে দখলদারিত্ব চলছে এবং আর তা সকল আন্তর্জাতিক সম্মতি লাভ করেছে।
#WestPapua [12] situation did not improve in 2014 – human rights abuse continued. Business as usual under Jokowi http://t.co/JO9D0L3u96 [15]
— Jen Robinson (@suigenerisjen) January 19, 2015 [16]
২০১৪ সালেও পশ্চিম পাপুয়ার মানবাধিকার লঙ্ঘন পরিস্থিতির তেমন কোন উন্নতি ঘটেনি। পরিস্থিতি জোকোই-এর সময় একই রকম রয়েছে।
ইন্দোনেশীয় সরকার এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে এক তদন্তের [17] প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছে। এই ঘটনার বিষয়ে এক মানবাধিকার তদন্তকারী দল এক বিবরণ [18] প্রকাশ করবে।