ইরানে রাষ্ট্রপতি ও বিচার বিভাগের সংঘর্ষে হোয়াটসএ্যাপ, লাইন এবং ট্যাঙ্গো ঝুঁকির মুখে রয়েছে

ইরানের জাতীয় বিচার বিভাগ যখন থেকে ঘোষণা প্রদান করে যে হোয়াটএ্যাপ, লাইন এবং ট্যাঙ্গো নামক এ্যাপসসমূহকে ফিল্টার করা হবে, তখন থেকে এই মেসেজ সেবা প্রদানকারী এ্যাপস সমূহের ভবিষ্যৎ দেশটিতে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ৭ জানুয়ারির এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে দেশটির সংস্কৃতি এবং ইসলামিক পথ অনুসরণ নির্দেশনা মন্ত্রণালয় কোন মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থার সংবাদ অনুসারে, ৭ জানুয়ারি তারিখে বিচার বিভাগের প্রদান করা এই ঘোষণার মানে হচ্ছে, সাথে সাথে এই নির্দেশ বাস্তবায়নে কাজ শুরু করা। ইরানের বিচার বিভাগ রাষ্ট্রপতির দপ্তর থেকে স্বাধীন, বিচার বিভাগ কেবল দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লাহ খোমেনই-এর কাছে রিপোর্ট করতে বাধ্য।

১৭ জানুয়ারি তারিখে জনতার উদ্দেশ্যে প্রদান করা এক বিবৃতিতে সংস্কৃতি মন্ত্রী আলি জান্নাতি এই বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে অস্বীকার করে যে সরকার এই তিনটি মেসেজ সেবা প্রদানকারী সংস্থার প্রতি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পরিকল্পনা করছে কিনা, তবে তিনি এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যে ইরানের নাগরিকরা এখনো এগুলো ব্যবহার করতে পারছে। একই সাথে জান্নাতি এই বিষয়ে রাষ্ট্রপতি হোসাইন রোহানীর অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন এই বলে যে ইরানের নাগরিকদের এই সকল মেসেজ আদান প্রদানকারী সাইটের সেবায় বিনে বাঁধায় পাবার ব্যবহারের অধিকার রয়েছে, বিশেষ করে যখন এগুলো বেশ জনপ্রিয়।

হোয়াটএ্যাপ, লাইন এবং ট্যাঙ্গো ইরানের নাগরিকদের স্বল্প ব্যায়ে রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত টেলিফোন এবং মেসেজ সেবাকে পাশ কাটিয়ে এই ধরনের সকল সেবা ব্যবহারের সুযোগ প্রদান করে, যার মধ্য দিয়ে ইরানের নাগরিকরা স্বদেশে এবং বিদেশে বিভিন্ন নাগরিকদের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখতে সক্ষম হয়।

তেহরানের প্রধান সরকারী কৌসুলি আব্বাস জাফরি দৌলতাবাদি এই বিষয়টি জানিয়েছেন যে এই সমস্ত এ্যাপসের ফিল্টার করার বিষয়ে সরকার এবং বিচার বিভাগ একমত নয়, কিন্তু তিনি সাথে এই বিষয়টিও নিশ্চিত করেছেন যে পুলিশ দেশটির বিচার বিভাগের আদেশ পালন করবে। মেহের নিউজ সংবাদ প্রদান করেছে যে বিচার বিভাগ এই আদেশ পালন করার জন্য দেশটির তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে, কিন্তু এই মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছে সরকার এবং বিচার বিভাগ এই বিষয়ে ঐক্যমতে না আসা পর্যন্ত এই আদেশ বাস্তবায়ন করা হবে না।

ফার্স সংবাদ সংস্থার সংবাদ অনুসারে জান্নাতি বিবৃতি প্রদান করেছেন “এই সকল এ্যাপসের বেআইনি কন্টেন্ট-এর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আমাদের স্মার্ট বা গোছানো এক ফিল্টার ব্যবস্থা ব্যবহার করা দরকার, তবে সামগ্রিক ভাবে এই সকল এ্যাপসের ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া হবে এক ভুল সিদ্ধান্ত।

ইরানে স্মার্ট-ফিল্টার ব্যবহার নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে কন্টেন্ট ভিত্তিক ফিল্টারের ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত বাঁধার বিষয়টিকে সামনে রেখে বলা যায়, এ ধরনের মনোভাব ইরানে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়ে পরা আমলাতন্ত্রের পক্ষে বর্তমান এই দ্বন্দ্ব দূর করা সম্ভব নয়। যদিও ইরানে ইউটিউব, টুইটার এবং ফেসবুক বন্ধ করে রাখা হয়েছে, তারপরেও ইরানের অনেক নাগরিক এই এই সকল সাইট প্রবেশে জন্য প্রক্সি–সার্ভার ও এই নিষেধাজ্ঞা পাশ কাটানোর অন্য উপাদান ব্যবহার করে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .