- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

এটা কোন রসিকতা নয়ঃ সৌদি আরবে তুষার মানব তৈরীর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে নতুন ফতোয়া প্রদান

বিষয়বস্তু: মধ্যপ্রাচ্য ও উ. আ., সৌদি আরব, কৌতুক, তাজা খবর, ধর্ম, নাগরিক মাধ্যম
A Saudi having coffee with snowman. Photograph shared by @Aalthekair on Twitter [1]

সৌদি আরবের এক ব্যক্তি তুষার মানবের সাথে কফি পান করছে। ছবি টুইটারে প্রদান করেছে @আলতেহকাইয়ার

সৌদি আরবের এক ইমাম ঘোষণা প্রদান করেছেন যে তুষার মানব এবং বরফের উট নির্মাণ ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয়। মোহাম্মদ সালেহ আল মিনিজেদ-এর প্রদান করা ফতোয়াকে (ধর্মীয় মতামত) অনেকে আনন্দ মাটি করার বিষয় হিসেবে দেখছে, বিশেষ করে সৌদি আরবের উত্তরের নাগরিকরা বরফ দিয়ে তৈরী করা তাদের শৈল্পিক সামগ্রীর ছবি অনলাইনে তুলে ধরার পর।

যা আল মিনিজেদ-এর ওয়েবপেজে-এর পাতায় প্রকাশিত এই ফতোয়া [2] অনুসারে [আরবি ভাষায়] যারা ভাস্কর্য নির্মাণ করে তাদের শাস্তি পাওয়া উচি। তিনি বলেন তুষার মানব নির্মাণ নিষিদ্ধ কারণ “তাদের মানবের মত চেহারা প্রদান করা হয়, যাদের চোখ নাক এবং মাথা থাকে”। তিনি এর সাথে যোগ করেন যদি কেউ তুষার মানব গড়তে চায়, তাহলে অবশ্যই তার মাথা থাকা উচিত নয়।

এই ফতোয়ায় যা বলা হয়েছে :

“ বরফ দিয়ে ভাস্কর্য বানানো নিষিদ্ধ, এমনকি আনন্দ এবং বিনোদনের জন্য হলেও। মানুষকে যা করতে চায় সৃষ্টিকর্তা তাকে তাই বানানোর সুযোগ করে দিয়েছে, তিনি মানবকে আত্মা ছাড়া তা বানানোর সুযোগ করে দিয়েছেন, যেমন গাছ, জাহাজ, ফল, ভবন এবং এ রকম কিছু।”

সৌদি ব্লগার আহমেদ আল ওমরান দ্রুত আমাদের স্মরণ করিয়ে দেন যে এই একই ইমাম ওয়াল্ট ডিজনির মিকি মাউসকে হত্যা করার ডাক দিয়েছিল:

দ্রুত মনে করিয়ে দেই:যে সৌদি ইমাম বলেছে তুষার মানব গড়া হারাম, সে সেই একই ব্যক্তি যে মিকি মাউসকে হত্যা করার আহ্বান জানিয়েছিল।

২০০৮ সালে ঘটনা, সে সময় এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে মিনিজেদ সকল প্রকার ইঁদুর (তীক্ষ্ণ দন্ত) জাতীয় প্রাণী [4] হত্যার ডাক দেন, যার মধ্যে মিকি মাউসও ছিল।

এই ফতোয়া সৌদি নাগরিকদের বরফের তৈরী সৃষ্টিশীল কাজ অনলাইনে তুলে ধরার বিষয়টিকে থামাতে পারেনি। টুইটারে আরওয়া ফ্লেমবান দুটি ছবি প্রদর্শন করছে, যার একটি উটের, অন্যটি এক তুষার মানবের:

সৌদি তুষার মানব, এবং সৌদি উট।

ওম বাসেইয়াল৩বিএল নামের একজন ব্যবহারকারী আমাদের দেখাচ্ছে যখন এক সৌদি নাগরিক তুষার মানব তৈরী করে তখন কি ঘটে:

যখন এক সৌদি নাগরিক তুষার মানব তৈরী করে।

এবং আহমেদ আল তেহকিয়ার এক তুষার মানব ও মানবীর ছবি প্রদর্শন করেছেন এবং তাদের স্বামী ও স্ত্রী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে :

সৌদি আরবের বিবাহিত তুষার মানব এবং মানবী।

ফিলিস্তিনি ব্লগার আইয়াদ এল বাগদাদি এক সিরিজ টুইটে মিনিজেদকে এমন এক ব্যক্তি হিসেবে উল্লেখ করেছে যে “অন্যের আনন্দ মাটি করে”। সে লিখেছে:

সৌদি আরবের উত্তর প্রান্তে প্রবলভাবে বরফ পড়ছে, কাজে কিছু পণ্ডিত তুষার মানব তৈরীর বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করেছে।

“ইসলামপন্থী”, আনন্দ মাটি করা ব্যক্তি আল মুনজিদের মতে, তুষার মানব গড়া পশ্চিমের অনুকরণ এবং প্রতিমা পূজার কাছাকাছি।

কারণ আপনি জানেন, আমাদের বিশ্বাস এত দূর্বল যে যদি আমরা একটি তুষার মানব তৈরী করি, তাহলে এটিকে আমরা দেবতা বলে ভুল করব এবং তার পূজা বা এরকম কিছু করব।

আমি একই সাথে তার এই অংশটি পছন্দ করেছি যে কি ভাবে আমরা পশ্চিমের ভাল বিষয় যেমন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুকরণ করব, কিন্তু হুম …তুষার মানবের মত খারাপ বিষয় নয়

আর এই বিষয়টি বলার প্রয়োজন নেই যে সকল সৌদি নাগরিক এটাকে ভালভাবে গ্রহণ করেনি

ফ্যাশান স্লেভ উল্লেখ করেছে :

যখন কয়েকজন ব্যক্তি ফ্রান্সে এবং অন্যেরা গোল্ডেন গ্লোব কি ঘটেছে তা নিয়ে ব্যস্ত ছিল, তখন এক ইমাম এক ফতোয়া নিয়ে হাজির হয়, যেটিতে সে বলছে যে তুষার মানব গড়া নিষিদ্ধ। নিজের গর্তে ফিরে যান। আপনি কেবল মনোযোগ আকর্ষণ করতে চাইছেন।

আবীর নামক ভদ্রমহিলা এতে এতটাই ক্রুদ্ধ যে তার মতে সৌদি আরবে সব নিষিদ্ধ হয়ে যাক, সে বলছে:

এই দেশে সকল কিছু নিষিদ্ধ। ঘটনাক্রমে এক সময় তুষার মানব গলে যায়। আপনারা চান না, আমরা মজা করি। এখন আমরা মস্তকবিহীন তুষার মানব বানাবো যাতে তারা খুশি হয়।

আরেকজন ব্যক্তি যৌক্তিক হওয়ার চেষ্টা করেছে :

কি? তুষার মানব গড়া নিষিদ্ধ এই ফতোয়া কে জারি করল? আমাদের প্রতি দয়া করুন। আপনারা সকল কিছু নিষিদ্ধ করছেন। ধর্ম এ রকম নয়। আর এর মধ্যে আপনার জন্য কি এমন ক্ষতিকর বিষয় রয়েছে, যার ফলে একে আপনারা নিষিদ্ধ করতে চাইছেন। এটা কেবল বিনোদনের এক বিষয়।

যদি এক তুষার মানব গড়ায় তা সৌদি আরবে ভ্রূকুঞ্চন সৃষ্টি করে, তাহলে তাদের ক্ষেত্রে কি হবে যারা আইএস-এর তথাকথিত রাজধানী সিরিয়ার আর রাক্কাতে তুষার মানব গড়ার দুঃসাহস প্রদর্শন করেছে বলে সংবাদ পাওয়া গেছে। অনলাইনে পাওয়া ছবি আমাদের দেখাচ্ছে এক তুষার মানব আইএস-এর পতাকা নাড়ছে:

A snowman allegedly in Ar-Raqqa in Syria

সম্ভবত সিরিয়ার শহর আর-রাক্কার তুষার মানব