ব্রাজিলের উত্তরাঞ্চলে পরিচালিত অনলাইন ঘৃণাকে কলঙ্কিত করেছে টাম্বলার একাউন্ট

Woman from the northeastern state of Piauí. At her door, a poster from a Worker's Party candidate. Image by Otávio Nogueira

ব্রাজিলের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য পিয়াই এর একজন নারী। তার দরজায় ওয়ার্কাস পার্টির একজন রাজনীতিবিদের পোস্টার। ছবিঃ অটাভিয়া নগুরিয়া সিসি বাই ২.০।

ব্রাজিলিয়ান একটি টাম্বলার একাউন্ট বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত অহেতুক ভয় বা ঘৃণা সম্পর্কিত বার্তা সংগ্রহ করছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চূড়ান্ত পর্যায় অতিক্রম করার পথে বর্তমান প্রেসিডেন্ট দিলমা রুসেফকে উদ্দেশ্য করে এসব বার্তা লেখা হয়েছে।

দেশটির উত্তর এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের দারিদ্র্য পীড়িত অঞ্চলে ওয়ার্কারস পার্টির প্রার্থীরা বিপুল সংখ্যক ভোট পেয়েছেন। এ অঞ্চলের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জনসাধারণ নগদ অর্থ স্থানান্তর এবং “বোলসা ফ্যামিলিয়ার” মতো সামাজিক কার্যক্রম থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে থাকেন। ওয়ারকার্স পার্টির সমালোচকেরা ২০০৬ সাল থেকে নগদ অর্থ স্থানান্তরকে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কাছ থেকে “ভোট কেনার” একটি উপায় বলে এটির সমালোচনা করে আসছেন।

“ইসেস নরদেসতিনোস…” অথবা “উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয়রা” নামে টাম্বলার একাউন্টের মাধ্যমে যারা নেতিবাচক এসব বার্তা পোস্ট করছেন, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে ব্যবহারকারীদের ইংরেজী ভাষাতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। কেননা কেন্দ্রীয় পাবলিক মন্ত্রণালয় নামে পরিচিত পাবলিক প্রসিকিউটর এর দপ্তর সম্পর্কে এ ধরনের নেতিবাচক বার্তা পোস্ট করা সাম্প্রদায়িক অপরাধ আইনের অধীনে একটি দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়। ২০১০ সালে রুসেফের বিজয়ের পরপরেই আইন বিষয়ের শিক্ষার্থী মায়ারা পেত্রুসোকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয়দের সম্পর্কে টুইটারে সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করার অপরাধে অপরাধী মামলায় শাস্তি ভোগ করতে হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে তাকে ২০১৩ সালে ১ বছর ৫ মাসের কারাদন্ডে দন্ডিত করা হয়। পরবর্তীতে তাকে বিভিন্ন জনকল্যাণ মূলক কাজ করিয়ে এবং জরিমানা নিয়ে তাঁর শাস্তি কমানো হয়।  

অনলাইন ব্যবহারকারীদের অনেককেই টাম্বলার একাউন্টের মাধ্যমে নিরীক্ষণ করা হয়েছে। তারা পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত তাদের লেখাগুলো মুছে ফেলেছেন। তবে “ইসেস নরদেস্তিনস…” এসব আইন লঙ্ঘনকারী বিভিন্ন মন্তব্যের স্ক্রিনশট সংগ্রহ করছেঃ

Eleição devia ser feita só no sul e sudeste

নির্বাচন কেবলমাত্র দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অনুষ্ঠিত হওয়া উচিৎ।

Engraçado: Nós estados responsáveis pelo trabalho e pela economia nacional, em sua maioria (salvo MG e RJ) o Aécio ganhou da Dilma. Já naqueles com baixo índice de desenvolvimento econômico a Dilma vence. Desse jeito começo a pensar em um movimento separatista… se vocês gostam tanto do bolsa família, ótimo, fiquem com o PT e o retrocesso que ele representa… it is up to you! Aqui para baixo e para o centro-oeste nós vamos trabalhar para ter o que comer e produzir. Só não acho que precisamos ficar vinculados a esse atraso econômico e comodismo social….

মজারঃ যে প্রদেশটি প্রকৃতপক্ষে কাজ করে এবং জাতীয় অর্থনীতির প্রগতির জন্য অবদান রাখে সেখানে দিলমাকে আসিও নেভেস পরাজিত করেছেন। রাষ্ট্রের বেশিরভাগ (মিনাস জেরাইস এবং রিও ডি জেনিরো ব্যতীত) অংশে আসিও নেভেস বিজয়ী হয়েছেন। আর রাষ্ট্রের যে অংশে অর্থনৈতিক উন্নয়ন একেবারেই নিম্ন সেখানে দিলমা জয়ী হয়েছেন। সত্যিকার অর্থে এটিকে আমি একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন বলে মনে করতে শুরু করেছি। আপনার কাছে যদি ‘বোলসা ফ্যামিলিয়া’ এতোটাই পছন্দনীয়, দারুণ মনে হবে তবে আপনি পিটি [ওয়ারকার্স পার্টি] এবং তাদের ঘোষিত সব নিশ্চলতার সাথে থাকুন… এটি সম্পূর্ণ আপনার ব্যাপার! ঠিক এখানে এবং মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলে কি খেতে হবে তা অর্জন করতে আমরা কাজ করতে যাচ্ছি। আমি শুধু মনে করি, অর্থনৈতিক পতন এবং অলসতার জন্য আমাদের দৈবের হাতে জিম্মি হয়ে থাকা উচিৎ নয়… 

সাবেক প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা ২০০৩ সালে বোলসা ফ্যামিলিয়া প্রকল্পটি প্রথম বাস্তবায়ন করেন। এই প্রকল্পের অধীনে যেসব পরিবারের মাথাপিছু মাসিক আয় ৫৬ মার্কিন ডলারের কম অর্থাৎ দারিদ্র সীমায় বসবাস করে, সেসব পরিবারকে মাসিক ভাতা প্রদান করা হয়। এদের মাঝে সেসব পরিবারের প্রতিষেধক প্রদান করা হয়েছে এবং বিদ্যালয়গামী (সর্বোচ্চ ৫ জন সন্তান) এমন ১৬ বছরের নিচের বয়সী প্রত্যেক শিশুর জন্য ১৩ মার্কিন ডলার মাসিক হারে ভাতা এবং ১৬ বা ১৭ বছর বয়সী বিদ্যালয়গামী (সর্বোচ্চ ২ জন সন্তান) প্রতিটি শিশুর জন্য মাসিক ১৫ মার্কিন ডলার ভাতা প্রদান করা হয়। যেসব পরিবারের মাসিক মাথাপিছু আয় ২৮ মার্কিন ডলারের নিচে অর্থাৎ চরম দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করে সেসব পরিবারকে এই কার্যক্রমের অধীনে শিশু ভাতার পাশাপাশি মাসিক ৩০ মার্কিন ডলারের “মৌলিক সুবিধা” প্রদান করা হয়।

এই ধরনের মন্তব্য দীর্ঘদিন ধরে ব্রাজিলের উত্তর এবং দক্ষিণের মধ্যে যে অর্থনৈতিক ব্যবধান রয়েছে তার প্রমাণ বহন করে। উনিশ শতকের শেষে যখন থেকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কেন্দ্র উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উপকূলীয় অঞ্চল থেকে সরিয়ে রিও ডি জেনিরো এবং সাও পাওলোতে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন থেকেই মূলত এই অর্থনৈতিক ব্যবধানের শুরু হয়েছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .