- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

ভারতীয় নেট নাগরিকরা ‘জিহাদি” উপাদানের অনলাইন সেন্সরশিপের সমালোচনা করছে

বিষয়বস্তু: দক্ষিণ এশিয়া, ভারত, ডিজিটাল অ্যাক্টিভিজম, নাগরিক মাধ্যম, প্রযুক্তি, বাক স্বাধীনতা, জিভি এডভোকেসী

Mock-up of a blocked URL

একটি ব্লক করে রাখা ইউআরএল নিয়ে উপহাস (ছবিঃ শুভাশিস পানিগ্রাহী-এর,সিসি-বাই-এসএ ৩.০)


ভারত সরকার ২০১৪ সালের শেষ সপ্তাহে দেশটির ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে (আইএসপি) ৩২ টি ওয়েবসাইট বন্ধ করে দিতে বলে, যার মধ্যে কোড সংরক্ষক গিটহাব [1], ভিডিও স্ট্রিমিং করা সাইট ভিমেও [2]ডেইলিমোশন [3], অনলাইন সংরক্ষণকেন্দ্র ইন্টারনেট আর্কাইভ [4], বিনে পয়সায় সফটওয়্যার পাওয়ার সাইট সোর্সফর্জ [5] এবং অন্য অনেক ওয়েবসাইট, মূলত আইএসআইএস নামে পরিচিতি প্রচণ্ড উগ্রবাদী সংগঠনের ভারত বিরোধী উপাদান রাখার কারণে এসব সাইট ব্লক করতে বলা হয়।

অনেক তথ্যসমৃদ্ধ সাইটকে এই ভাবে গণহারে বন্ধ করার বিষয়টি ভারতের স্যোশাল মিডিয়া এবং ব্লগে দারুণ ভাবে সমালোচিত হয়েছে, যা গোআইব্লক হ্যাশটাগকে পুনরায় সক্রিয় করে করা হয়, যে হ্যাশট্যাগ অতীতে সরকারের ইন্টারনেট সেন্সরশিপের সময় আবির্ভুত হয়েছিল।

বিকৃত মস্তিষ্ক! ইন্টারনেট আর্কাইভ, ভিমেও, গিটহাব, পেস্টবিন সহ ৩২টি ইন্টারনেট সাইট সরকার বন্ধ করে দিয়েছে।

মিডিয়ানামাতে, নিখিল পাহাওয়া [14] উল্লেখ করেছে যে এবার অনেক আইএসপি প্রতিষ্ঠান ব্লক করা সাইটের তালিকা প্রকাশ করেছে। :

সাধারণত কোন কোন ওয়েবসাইট ব্লক করা হয়েছে ব্যবহারকারীকে এই তথ্য প্রদান করা হয় না, কাজে এটা আইএসপিদের তরফ থেকে এটা একটা স্বাগত আচরণ।

Say No to Censorship. #GOIBlocks

“সেন্সরশিপকে না বলুন। # গোআইব্লক” ( তামিলনাড়ুর ফ্রি সফটওয়্যার ফাউন্ডেশনের [15] ফেসবুক পাতা থেকে নেওয়া)

২০১২ সালে সে সময়কার বিরোধী দলের নেতা নরেন্দ্র মোদি [16] ( যিনি এখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী) তখনকার শাসক দল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস [17] কর্তৃক ইউআরএল ব্লক করার বিরুদ্ধে টুইট করেছিল [18] যখন সে সময়কার যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী কপিল সিবাল [19] ৩০০ ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেওয়ার আদেশ প্রদান করে। এবার যখন মোদি এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটালো তখন অনেকে ভ্রু কুঁচকিয়েছেন।

একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে আমি বাক স্বাধীনতার প্রতি হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে যোগ দিয়েছি! আমার প্রদর্শিত ছবি পরিবর্তন করেছেন। ভগবান সবাইকে সুমতি প্রদান করুন।-নরেন্দ্র মোদি

রাহুল শর্মা-যখন ইউপিএ সরকার কিছু ওয়েবসাইট ব্লক করে দিয়েছিল তখন সে সময় বিরোধী দলে থাকা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উপরের টুইটটি করেছিল।

১৯৯৯ সালে যখন কারগিল যুদ্ধ [25] পরবর্তী ভারত বিরোধী দৃষ্টিভঙ্গীর কারণে বিদেশী সঞ্চার নিগম লিমিটেড যখন পাকিস্তানের সংবাদপত্র ডন [26] ব্লক করে দেয়, তখন থেকে ভারতে ইন্টারনেট সেন্সরশিপ [27] ক্রমশ পরিচিত হয়ে উঠছে। নেট নাগরিকরা এই ঘটনার প্রচণ্ড সমালোচনা করে, বেশীরভাগ ক্ষেত্রে #ইডিয়টকপিলসিবাল [28] হ্যাশট্যাগের অধীনে। এরপর থেকে অনেক সরকারের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপে অনেক সাইট সেন্সর করা হয়েছে বিশেষ করে ভারতীয় তথ্য প্রযুক্তি আইন ২০০০ [29] এর কার্যকারিতার মাধ্যমে।

ভারতের শাসক দল ভারতীয় জনতা পার্টির তথ্য প্রযুক্তি প্রধান অরবিন্দ গুপ্তা টুইট করেন এই বিষয়টি পরিস্কার কার জন্য যে সন্ত্রাস বিরোধী স্কোয়াডের পরামর্শে এই সমস্ত সাইট বন্ধ করা হয়েছিলঃ

যে সমস্ত ওয়েবসাইট বন্ধ করা হয়েছিল তা সন্ত্রাস বিরোধী স্কোয়াডের পরামর্শে করা হয় এবং এগুলো আইএসআইএস-এর ভারত বিরোধী কন্টেন্ট ধারণ করেছিল।

আইএসআইএস-এর সাথে সম্পৃক্ত এমন কিছু একাউন্টের পোস্ট করা ভারত বিরোধী উপাদান সরিয়ে নিতে একমত হওয়ার পর ওয়েবলি.কম [31], ভিমেও.কম [32], পেস্টবিন [33], ডেইলিমোশান.কম [34] এবং জিস্ট.গিটহাব.কম [35] খুলে দেওয়া হয়েছে

এই সমস্ত ওয়েবসাইট এই মর্মে মুচালেকা প্রদান করেছে যে তারা তাদের ওয়েবসাইটে এই সমস্ত প্রচারণামূলক তথ্য পেস্টিং করার সুযোগ দেবে না এবং যে দেশে এই সাইট ব্যবহার হবে সেই দেশের আইন অনুসারে এই সমস্ত উপদান অপসারণে তারা সরকারের সাথে কাজ করে যাবে।
যোগাযোগ এবং তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ভারত সরকার (বিজনেস স্টান্ডার্ডে [36] প্রকাশিত)

ওয়েবলি.কম, ভিমেও.কম, ডেইলিমোশন.কম সাইট খুলে দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।