সারা ইউরোপ জুড়ে নাগরিকরা ‘সেটা’ (সমন্বিত অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্য চুক্তি) এবং ‘টিটিআইপি’ (আন্ত- আটলান্টিক বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ অংশীদারিত্ব) নামক চুক্তির বিরুদ্ধে দরখাস্ত প্রদান করে যচ্ছে। ইউরোপীয় কমিশন-এর মতে সেটা “ ইউরোপীয় ইউনিয়ন–এর বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে কানাডায় আরো উন্নত বাণিজ্য প্রদান করবে এবং ইউরোপে আরো চাকুরী সৃষ্টির সুযোগ তৈরী করবে,অপরদিকে টিটিআইপির উদ্দেশ্য হচ্ছে বিস্তৃত এক অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে আরোপিত বাণিজ্যিক বাঁধা অপসারণ করা যাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মাঝে পণ্য ক্রয় বিক্রয় এবং সেবা প্রদান সহজতর করা যায়”।
তবে ব্লগার, সামাজিক নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারী এবং স্বাধীন সংবাদপত্রের মত অনুসারে, এই উভয় চুক্তির উদ্দেশ্য হচ্ছে “সামাজিক অবস্থাকে অস্বস্থিকর এবং প্রতিযোগিতা নীতিকে নিম্নমুখী করা “,আর এটি করা হবে বড় ধরনের ব্যবসাকে আনুকূল্য প্রদানের মাধ্যমে এবং সমগ্র সমাজের সুরক্ষা নীতিকে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে।
#টিপিপিটুইসেডে, #টিটিআইপি এবং #সিয়েট হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে টুইটার এবং ফেসবুকে উভয় জায়গায় আপনি এই বিষয়ে আরো অনেক তথ্য এবং মতামত পাবেন:
Have you heard of the #TPP yet? If not, ask WHY? http://t.co/rXO3KsUyy8 #TPPTuesday
— Celeste Drake (@CDrakeFairTrade) December 17, 2014
আপনি কি #টিটিপি সম্বন্ধে এখনো কোন কিছু শুনেননি? উত্তর যদি না হয়, তাহলে প্রশ্ন করুন কেন?
ইউরোপীয় কমিশন যদিও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রচারণা এক সহযোগীর গত বছরের সেপ্টেম্বরে টিটিআইপি এবং সেটার বিরুদ্ধে আনা ইউরোপীয় নাগরিকদের উদ্যোগ (ইসিআই বা ইউরোপীয়ান সিটিজেন ইনিসিয়েটিভ) স্থগিত করার প্রস্তাবনা খারিজ করে দেয়, অপরদিকে সারা ইউরোপ জুড়ে স্বাধীন সংস্থাগুলো এই দুই চুক্তির বিরুদ্ধে তাদের তদবির চালিয়ে গেছে। বর্তমানে ৩৩৩টি সংগঠন, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রচারণা এবং মানবাধিকার উদ্যোগ, টিটিআইপি এবং সেটার বিরুদ্ধে ইউরোপীয় নাগরিক উদ্যোগকে সমর্থন প্রদান করেছে।
এই প্রচারণাকারীদের মূল প্রস্তাবনা পাঠ করুন
আমরা টিটিআইপি এবং সেটা চুক্তি প্রতিরোধ করতে চাই কারণ এ সব চুক্তিতে বেশ কিছু সমালোচিত বিষয় অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে, যেমন বিনিয়োগকারী-রাষ্ট্র বিষয়ক দ্বন্দ্বের সমাধান এবং নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতার বিষয়ে আইন জারী করা, যা গণতন্ত্র এবং আইনের শাসনের এক হুমকি হয়ে দেখা দেয়। আমরা চাকুরি, সমাজ, পরিবেশ, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা এবং গ্রাহক সেবার আদর্শ নিম্নমান এবং সরকারী সেবার হাত থেকে রক্ষা করতে চাই (যেমন পানীয় জল) এবং স্বচ্ছ নয়, এমন আলোচনার মাধ্যমে সংস্কৃতিক সম্পদকে অনিয়ন্ত্রিত করতে চাই না। ইউরোপীয় ইউনিয়ানের কাছে ইউরোপীয় কমিশন এক বিকল্প বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ নীতির প্রস্তাব করেছে।
বিশেষ ভাবে, এই বাণিজ্যচুক্তির বিরোধিতাকারীরা এই তথ্যে উদ্বিগ্ন যে টিটিপিআই বিদেশী বিনিয়োগকারীদের লাভ বা ক্ষতির বেলায় এক অস্থায়ী সালিশি আদালতের কাছে সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করার অধিকারের অনুমোদন প্রদান করতে যাচ্ছে, যা হয়ত ঘটেছে গণ নীতি বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণের কারণে যা নাগরিকদের স্বার্থে গ্রহণ করা হয়েছে (এই বিষয়ে ওয়ার অন ওয়ান্ট ব্লগে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে)।
কিন্তু ইউরোপীয় কমিশন, ইউরোপের ক্ষেত্রে এই সকল চুক্তি কি ধরনের সুবিধা প্রদান করবে সে বিষয়ে ক্রমাগত উদ্ধৃত করে যাচ্ছে। এই চুক্তিগুলোকে সবার সামনে তুলে ধরার উদ্দেশ্যে সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য কমিশনার সিসিলিয়া মালস্ট্রম প্যারিসের দ্যুপিন বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করে, যেখানে তিনি ছাত্রছাত্রীদের বলেন, “টিটিপিআই-এর সবচেয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষী চুক্তি” যার মধ্যে সকল কিছু থাকবে এবং আরো চাকুরী, বিনিয়োগ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির তৈরীর ক্ষেত্রে এক সুযোগের প্রতিনিধিত্ব করবে যার মাধ্যেমে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাগরিকরা সুবিধা লাভ করবে।
সেটা এবং টিটিআইপি নিয়ে চলমান এই দ্বন্দ্ব ইউরোপীয় ইউনিয়ানের তথাকথিত “গণতন্ত্রের ঘাটতিকে” তুলে ধরছে স্বাধীন সংবাদপত্র,একটিভিস্ট এবং নিয়মিত নাগরিকরা এই দুই চুক্তির বিরোধিতায় যৌথভাবে সচেতন একদল নাগরিকের অংশে পরিণত হয়েছে, যাকে তারা নাগরিকদের স্বার্থের এক নির্ধারক হিসেবে দেখছে, কিন্তু ইউরোপীয় কমিশন–যারা নির্বাচিত কোন সদস্যের এক কাঠামো নয়- তারা দুটি চুক্তি নিয়ে ক্রমাগত আলোচনা করে যাচ্ছে এবং এগুলোকে সবার সামনে তুলে ধরার নির্বিশেষ চেষ্টা চালিয়েছে যাচ্ছে।
CETA: Time to admit it’s an oversold, underhanded deal http://t.co/2O7meJQbKR #canlab
— Angella MacEwen (@AMacEwen) December 17, 2014
সেটা: এখন সময় এসেছে এই বিষয়টি স্বীকার করে নেওয়া যে এটা বেশী দামে বিক্রি হয়েছে, এবং এক অনৈতিক চুক্তি।
২০১৫ সালে, সেটা এবং টিটিআইপি সম্পর্কিত অগ্রগতি গ্লোবাল ভয়েসেস ক্রমাগত পর্যবেক্ষণ করে যাবে।