
সিনেটর পিয়া কায়েটানো, রিজাল স্মৃতিস্তম্ভের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছে, যাতে এই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে উক্ত আবাসিক ভবন এই ঐতিহাসিক এলাকার পেছনের দৃশ্যকে কি ভাবে ম্লান করতে যাচ্ছে। ছবি সিনেটর পিয়ার ফেসবুকের পাতা থেকে নেওয়া হয়েছে।
ফিলিপাইনসের অনেক নাগরিক ম্যানিলার এক আবাসিক ভবন নির্মাণের বিরোধীতা করছে এই দাবীতে যে, এই ভবন দেশটির জাতীয় বীর হোসে রিজালের স্মৃতিস্তম্ভের দৃশ্যকে ম্লান করে ফেলবে।
রিজাল ছিলেন একজন লেখক এবং ডাক্তার, যিনি ১৮০০ শতকের শেষের দিকে স্পেনের শাসনাধীন ফিলিপাইনসের সংস্কারের দাবীতে শহীদ হন। ঘটনাক্রমে,তার জীবন এবং লেখনি, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মকে উৎসাহিত করেছে দেশের প্রতি আরো ভালবাসা প্রদর্শনে এবং ফিলিপিনো হিসেবে গর্ব অনুভব করতে। স্বাধীনতার পর রিজালকে জাতীয় বীর হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং দেশের অজস্র পার্কে তার মূর্তি দেখা যায়। কিন্তু তার সবচেয়ে বিখ্যাত মূর্তিটি ম্যানিলার লুনেতা পার্কে অবস্থিত।
রিজালের অনুসারী এবং এমনকি সাধারণ ফিলিপিনো নাগরিক ডিএমসিআই নামক প্রতিষ্ঠানের তৈরী–এর এই যৌথ মালিকানাধীন প্রকল্পের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করছে। ডিএমসিআই হচ্ছে ম্যানিলার এক প্রধান গৃহনির্মাণ প্রতিষ্ঠান, যা ঠিক লুনেতা পার্কের ঠিক পেছনে অবস্থিত। সমালোচকদের মতে ৪৯ তলা ভবন বিশিষ্ট ডিএমসিআই–এর টোরে ডে ম্যানিলা, রিজাল স্মৃতিস্তম্ভের ছবি তুলতে চাওয়া পর্যটক এবং বাসিন্দাদের জন্য এর দৃশ্যকে ম্লান করে দেওয়ার এক উপাদান।
স্থানীয় কর্মকর্তাদের কাছে লবিং করা ছাড়াও এই প্রকল্পের বিরোধিতাকারীরা তাদের যৌথ মালিকানাধীন নির্মাণ কাজ বন্ধের প্রচারণায় জনগণকে সমর্থন করতে বলছে, যাকে তারা টোরে ডে ম্যানিলা বলে অভিহিত করার বদলে টেরর ডি ম্যানিলা (ম্যানিলার সন্ত্রাস) বলে অভিহিত করছে। #নোটুটেররডিম্যানিলা নামক হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ছবি পোস্ট করছে, যা প্রমাণ করেছে যে রিজাল স্মৃতিস্তম্ভের পেছনে এই টাওয়ার মোটেও মানসই নয়:
Thanks to our brothers from Laguna, Pasay, Quezon City and Marikina. #NoToTerrorDeManila pic.twitter.com/i3LZdaO8gU
— Knights of Rizal (@kor_ihq) August 27, 2014
কুয়েজান সিটির পাসাই-এর লাগুনা এবং মারিকিনায় বাস করা আমাদের ভ্রাতাদের ধন্যবাদ।
“@ANCALERTS: Before & after: Controversial Torre de Manila construction near Rizal monument. pic.twitter.com/lJCB9ei13y” #NoToTerrorDeManila
— Janssen Cabrera (@jansjens) August 27, 2014
রিজাল-এর কাছে বিতর্কিত টোরে ডি ম্যানিলা টাওয়ার তৈরী হওয়ার আগে ছবি এবং এবং ভবন তৈরী হওয়ার পরে তার চেহারা কেমন হবে তার দৃশ্য।
ডিএমসিআই দাবী করেছে প্রদর্শিত ওই সকল ছবির কয়েকটি ফটোশপে তৈরী করা। প্রতিষ্ঠানটি কিছু ছবি প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে যে ফ্লাট মালিকদের নিজেদের হয়ে যাওয়া এই ভবনকে পেছনে না রেখেও রিজাল-এর ছবি তোলা যায়। প্রতিষ্ঠানটি নাগরিকদের উপদেশ দিয়েছে যদি তারা রিজালের পেছনে টাওয়ারের ছবি দেখতে না চায়, তাহলে যেন বিশেষ কোন থেকে ছবি তোলে।
সিনেটর পিয়া কায়েটানো, যিনি এই প্রকল্পের বিরোধিতা করছে, সে অভিযোগ করছে ডিএমসিআই ফিলিপিনোদের অপমান করছে।
এখন সকল ফিলিপিনো, বিদেশী পর্যটক,বিশিষ্ট জন এবং বাস্তবে এখন থেকে আগামীর সকল প্রজন্মকে আহত করছে, যারা রিজাল স্মৃতিস্তম্ভের পছন্দসই দৃশ্যকে গ্রহণ করতে চায়, আর যা গত বছর পর্যন্ত টিকে ছিল, গর্বের সাথে ও ১০০ বছর ধরে কোন ধরনের চ্যালেঞ্জ ছাড়াই এখনো সেখানে আছে। কতটা সুন্দর!

সিনেটর পিয়া তার ফেসবুকের পাতায় এই ছবিটা প্রকাশ করেছে এই বিষয়টি প্রমাণে যে উক্ত টাওয়ার কি ভাবে রিজাল স্মৃতিস্তম্ভের দৃশ্যকে ম্লান করছে।
একটিভিস্ট সারাহ মারামাগ লিখেছে যে টোরে ডে ম্যানিলা বিষয়টি এই শহরের অপরিকল্পিত উন্নয়নের কারণে সৃষ্টি কিছু সমস্যার প্রতি আলোকপাত করেছে::
টোরে ডে ম্যানিলাই প্রথম এবং এটাই শেষ নয়। আমরা এমন এক সময় বাস করছি, যখন পর্যটন “ফিলিপাইনসে আরো বেশী মজার”। যখন লাভজনক বিনিয়োগ-এর কারণে আবাসন এবং পুনর্নিমাণ-এর ছদ্মাবরণে ধ্বংস সাধন হচ্ছে। যখন জীবন এবং জীবিকা বিলুপ্ত হচ্ছে বিশালাকায় শপিং মল এবং বহুতল বাণিজ্যিক ভবনের জন্য স্থান ছেড়ে দেওয়ার কারণে।
এই ভবন নির্মাণ বন্ধের আবেদনের জবাবে ডিএমসিআই পুনর্ব্যক্ত করেছে যে এই কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য তারা নগর পরিষদের কাছ থেকে সকল প্রকার কাগজ এবং অনুমোদন লাভ করেছে।
এদিকে টোরে ডে ম্যানিলা নামক এই স্মৃতিস্তম্ভ ছবি তোলার ক্ষেত্রে স্থায়ী ভাবে ম্লান হওয়ার আগে এখন আরো বেশী ফিলিপিনো নাগরিক এখন রিজালের সামনে সেলফি তুলছে।