সার্বিয়াতে বিরোধীদল প্রতিনিধির “ভয় থেকে স্বাধীনতা” আইন প্রস্তাব

সার্বিয়ান জাতীয় সংসদের উনিশ জন প্রতিনিধি একটি নতুন আইন পাসের প্রস্তাব করেছেন। নতুন এই আইনটি সার্বিয়ান নাগরিকদের স্বাধীনতাকে যেকোন ধরনের ভয়ের হাত থেকে সুরক্ষিত রাখার নিশ্চয়তা দিবে। যদিও সার্বিয়া প্রজাতন্ত্রের সংবিধানে স্বাধীনতাকে ভয়ের উর্ধ্বে রাখার অধিকার নিশ্চিত করে থাকে। তারপরও আপাতদৃষ্টিতে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন কয়েকজন রাজনীতিবিদ গত কয়েক মাসে এ বিষয়টিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছেন।

Screenshot of a page of the official proposal of the Law on Freedom from Fear, as posted by Deputy Speaker of the Serbian National Assembly Gordana Čomić on Slideshare, used with permission.

ভয় থেকে স্বাধীনতা আইনটির আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবনার একটি পাতার স্ক্রিনশট। সার্বিয়ান জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার গরডানা কোমিক স্লাইডশেয়ারে এটি পোস্ট করেছেন। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে এটি পোস্ট করা হয়েছে।

বিরোধীদলীয় সংসদ প্রতিনিধি অর্থাৎ ডেমোক্রেটিক পার্টি (ডেমোক্রাটস্কা স্ট্রানকা – ডিএস) এবং নিউ পার্টির (নোভা স্ট্রানকা – এনএস) সদস্যদের কাছ থেকে এই প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। ২০১৪ সালের মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত আগাম সার্বিয়ান সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত ২৫০ জন সংসদ প্রতিনিধির মধ্যে ১৫৮ জন সার্বিয়ান প্রগতিশীল দলের (এসআরপিএসকা নাপ্রেদনা স্ট্রানকা – এসএনএস) সদস্য। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সান্ডার ভুসিক এ দলের প্রধান নেতা। ২০১৪ সালের পুরোটা জুড়ে প্রধানমন্ত্রী ভুসিক এবং তাঁর সহযোগীরা প্রচার মাধ্যম এবং বিভিন্ন ব্যক্তি বিশেষকে চাপে রাখার জন্য বিভিন্ন খবরের শিরোনাম তৈরি করেছেন। ভুসিক এসব অভিযোগ অস্বীকার করলেও তাঁর মন্ত্রী পরিষদের কিছু কিছু কাজ স্পষ্টভাবেই প্রকাশ পেতে শুরু করেছে।

সাংবাদিক মিলেনা নেজেভিক ২০১৪ সালের শুরুতে সেন্সরশিপ সূচকের জন্য লিখেছেনঃ

বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার শুরু থেকেই সূচকটি সার্বিয়াতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা পরিস্থিতিকে একপেশে করে রেখেছে। ফেসবুক পোস্ট শেয়ার করার জন্য পুলিশ একজন সাংবাদিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন বলে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। অনেক সময় শারিরীকভাবে এবং কথার বাণে এমনকি আঘাত করার ঝুঁকি না থাকা সত্ত্বেও তারা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়েছেন। তবে প্রচার মাধ্যমকে পরোক্ষভাবে নিয়ন্ত্রণ করা, অপপ্রচার চালানো এবং “মৃদু সেন্সরশিপ” চালানোর জন্য লুকায়িত অন্যান্য পন্থা অবলম্বন করা সার্বিয়ান প্রেস স্বাধীনতার জন্য এক মারাত্মক চ্যালেঞ্জে পরিনত হয়েছে। বেকোভিক [একজন প্রসিদ্ধ সাংবাদিক] বলেছেন, “মিলোসেভিক কখনও প্রচার মাধ্যমকে দুরাচারী পন্থায় স্বাধীন মতামত প্রকাশে বাঁধা দেননি। তাঁর বাঁধা দেয়ার প্রক্রিয়াটি ছিল পরিশীলতা বর্জিত এবং সবকিছুই প্রকাশ্যভাবে করা হয়েছে। এক্ষেত্রে মনে হয় তাঁর সহকর্মীরাও একমত হবেন যে প্রচারমাধ্যমের উপর সেন্সরশিপ চালানো হচ্ছে। সাম্প্রতিক এক জরিপে অংশ নেয়া শতকরা ৯০ শতাংশ সাংবাদিক বলেছেন, সেন্সরশিপ এবং আত্ম-সেন্সরশিপের প্রচলন সার্বিয়ান প্রচার মাধ্যমে রয়েছে। তাদের মধ্যে শতকরা ৭৩ ভাগ সাংবাদিক বলেছেন, প্রচার মাধ্যমগুলো বস্তুনিষ্ঠভাবে সংবাদ পরিবেশন করতে পারে না এবং শতকরা ৯৫ ভাগ বলেছেন, তারা সমালোচনার দৃষ্টিতে সংবাদ পরিবেশন করতে পারেন না। 

ভয় থেকে স্বাধীনতা আইনটি প্রণয়নের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তাবনা গত ২০ নভেম্বর, ২০১৪ তারিখে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। ডেমোক্রেটিক দলের সদস্যরা এবং সার্বিয়ান জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার গরডানা কোমিক তাঁর ব্যক্তিগত স্লাইডশেয়ার একাউন্টে সম্পূর্ণ প্রস্তাবনাটি পোস্ট করেছেন। প্রস্তাবনাটি সামনে নিয়ে আসার কারনগুলো ব্যাখ্যা করতে জমা দেয়া নথিপত্রের একাংশঃ

II Razlozi za donošenje zakona

Razlozi za donošenje ovog zakona sadržani su, pre svega, u potrebi da se zaštite Ustavom zajemčeni slobode građana u slučajevima kada su te slobode ugrožene od strane organa javne vlasti[…] Smatramo da niko, a naročito organi javne vlasti, ne smeju da zloupotrebom ovlašćenja prilikom obavljanja poslova iz svoje nadležnosti zastrašuju građane Republike Srbije, i stvaraju stanje straha i neizvesnosti, pri čemu se građani prisiljavaju protiv svoje volje da nešto čine ili ne čine.

আইনটি পাস করার দুইটি কারন

আইনটি পাস করার স্বপক্ষে যতগুলো কারন রয়েছে তাঁর মধ্যে সবকিছুর উর্ধ্বে রয়েছে নাগরিক স্বাধীনতা সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা, যা সংবিধানে নিশ্চিত করা হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সরকারি কর্তৃপক্ষ […] এসব স্বাধীনতা লঙ্ঘন করে থাকে। সেসব ক্ষেত্রে নাগরিক স্বাধীনতাকে সুরক্ষিত রাখতে এ আইনের প্রয়োজন রয়েছে। আমরা মনে করি যে কেউ এমনকি কোন সরকারি কর্তৃপক্ষও সার্বিয়া প্রজাতন্ত্রের জনগণের মাঝে ভয় উস্কে দিতে পারেন না। কর্তৃপক্ষ তাদের আইনগত অধিকার প্রয়োগ করে দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে জনগণের মাঝে ভীতি অথবা ভীতিজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারেন না। আমরা মনে করি, তাদের অনিশ্চয়তায় রাখা, নাগরিকদের তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন কিছু করতে বা না করতে জোর করার অনুমোদন কর্তৃপক্ষের নেই।

২২ নভেম্বর, ২০১৪ তারিখে গ্লোবাল ভয়েসেসের সাথে এক সংক্ষিপ্ত কথোপকথনে ডেপুটি স্পীকার গরডানা কোমিক বলেছেন, তিনি আশা করছেন জাতীয় সংসদের সকল প্রতিনিধি শুধুমাত্র আইনটি পাস করার গুরুত্বই বুঝবেন না, বরং তাঁর সাথে সাথে যত শীঘ্রই সম্ভব এটি সংসদের সামনে তুলে ধরে আলোচনা করার গুরুত্বও বুঝবেন। সংসদীয় প্রক্রিয়া অনুযায়ী প্রস্তাবিত আইনটি নথিভুক্ত করার ১৫ দিনের মধ্যে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে আলোচনার জন্য উপস্থাপন করতে হয়। মিস কোমিক এ সময় আশা ব্যক্ত করে বলেছেন, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৪ তারিখে প্রস্তাবিত আইনটি সংসদে আলোচনার জন্য উত্থাপন করা হবে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .