জুতুজিল মায়া ভাষাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চালু করার ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জ

রাইজিং ভয়েসেস ক্ষুদ্র অনুদান প্রাপ্ত প্রকল্পের সর্বশেষ খবর

San Juan La Laguna, Guatemala. Photo by imsbildarkiv and used under a CC BY-NC-ND 2.0 license.

সান জুয়ান লা লাগুনা, গুয়াতেমালা। ছবিঃ ইমসবিলডারকিভ এবং একটি সিসি এনসি-এনডি ২.০ লাইসেন্সের আওতায় ব্যবহৃত।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে মায়া ভাষায় লেখার জন্য আরও লোক অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্য পূরন করা সত্যিই একটি বড় ধরণের চ্যালেঞ্জ। বিদ্যমান এই চ্যালেঞ্জগুলোই আমি তুলে ধরতে চাই। দেশীয় বিভিন্ন ভাষা এবং মায়া জুতুজিল ভাষার প্রসার ঘটানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে স্প্যানিশ ভাষার সার্বজনীন ব্যবহার।

বহুল ব্যবহৃত ভাষাগুলোতেই সব প্রচার মাধ্যমগুলো তাদের অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে থাকে। তাদের এমন আচরনের কারন, বিজ্ঞাপনদাতারা এসব অনুষ্ঠানের জন্য বিপুল পরিমান অর্থ বিনিয়োগ করে থাকেন। কেউ কেউ আবার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনকেও এর কারন হিসেবে দায়ী করে থাকেন। অনেক লোক যখন একটি ভাষায় কথা বলে, তখন সেই জনগোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রন করার সুবিধার্থে এমনটি করা হয়। দেশীয় ভাষাগুলোর ব্যবহার বাড়ানোর কোন সুযোগ নেই। বরং এসব ভাষার ব্যবহার কমে যাওয়ার একটি প্রবণতা দেখা যায়। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, এমন অনেক ভাষা আছে যেগুলো এখন কেবল বাড়িতে কথা বলতেই ব্যবহৃত হয়।

তথ্যের ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রচার মাধ্যমগুলোতে এক ধরনের ভোগবাদী সংস্কৃতি পরিলক্ষিত হয়। তবে সাম্প্রদায়িক ভাষাগুলোর ক্ষেত্রে এমনটি দেখা যায় না। দীর্ঘকালীন পরিসরে এই ভাষাগুলোর স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতেও কোন চেষ্টা করা হচ্ছে না। গুয়াতেমালার জনগণের বিপুল তথ্যের ভান্ডার খুব বেশি নয়। যেগুলো আছে সেগুলোও অচল হয়ে আছে এবং এগুলোকে “বেআইনিভাবে” প্রচারকৃত বেতার কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। কেননা রাষ্ট্র এমন কিছু আইন তৈরি করেছে যা দ্বারা শুধুমাত্র বড় বড় প্রচার মাধ্যম কোম্পানিগুলোই উপকৃত হচ্ছে। তাই কোন স্থানীয় বেতার কেন্দ্র প্রচারে আসার পর খুব দ্রুতই তা নিশ্চুপ হয়ে যায়। অন্যান্য চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছে জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থা। এই শিক্ষা ব্যবস্থার প্রাথমিক উদ্দেশ্য হচ্ছে, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য এবং ঐতিহ্যের দিক থেকে সমৃদ্ধশালী একটি দেশে সমরূপ সমাজ তৈরি করা।

মায়া ভাষায় কথা বলা একজন লোকের জন্য শুধুমাত্র স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলা হয় এমন একটি বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করা বেশ সহজ হয়ে যায়। কেননা তাদের নিজস্ব ভাষার চেয়ে এই স্প্যানিশ ভাষাটি পড়া বেশ সহজ। এক্ষেত্রে মনে হয়, মায়া ভাষা পড়ার ক্ষেত্রে এক ধরনের মানসিক ছাঁচ কাজ করে। কারন স্প্যানিশ ভাষায় মানুষের মনের মধ্যেই তাঁর ভাষাগত সাজানো পদ্ধতি বিদ্যমান থাকে।

দেশীয় ভাষার ক্ষেত্রে যেসব আত্ম-বৈষম্য বিরাজ করে আমরা সেগুলো নিয়েও কথা বলতে পারি। এই বৈষম্য এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যেখানে একজন মানুষ তাঁর নিজস্ব পরিচয়কেও অস্বীকার করতে পারে। অনেকেই এসব দেশীয় ভাষাকে অতীত বিষয় বলে মনে করেন। তারা মনে করেন এই অতীত বর্তমান উন্নয়নকে বাঁধাগ্রস্ত করে। মায়া ভাষাভাষী বাবা-মাকে যখন তাদের সন্তানের সাথে আমরা স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলতে দেখি তখন যেন প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে মায়া ভাষার সংযোগ ভেঙ্গে যেতে দেখছি বলে মনে হয়। ভাষার জন্য এটি একটি সুদূর প্রসারী বিষয়।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .