- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

ভেনেজুয়েলাঃ খসড়া ই-কমার্স আইন কর্তৃপক্ষকে অনলাইন সেন্সরশিপ আরোপের নতুন রাস্তা খুলে দেবে

বিষয়বস্তু: ভেনেজুয়েলা, আইন, নাগরিক মাধ্যম, ব্যবসা ও অর্থনীতি, জিভি এডভোকেসী
https://www.flickr.com/photos/venex/2155768540

ভেনিজুয়েলান ভিইএফ। ছবি জর্জ আন্দ্রেস পাপারনির ফ্লিকার পাতা থেকে নেওয়া (সিসি বাই এসএ-২.০)।

ই-কমার্স বিষয়ে তৈরী করা নতুন এক খসড়া আইন [1] ভেনিজুয়েলার টেলিযোগাযোগ কমিশন বা কোনটেলকে [2] যে কোন ওয়েবসাইট ব্লক করে দেওয়ার ক্ষমতা প্রদান করতে যাচ্ছে, দি উক্ত ওয়েবসাইট নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ ভাঙ্গার মত কাজ করে থাকে।

ভেনিজুয়েলায় যে সমস্ত ব্যক্তি বা কোম্পানী ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করে, তাদের ক্ষেত্রে এই খসড়া আইন কিছু নতুন ধারাবাহিক বাধ্যবাধকতা তৈরী করবে, যার মধ্যে “ইলেট্রনিক চালান সরবরাহ করার” বিষয়টিও অর্ন্তভুক্ত রয়েছে, যা সেনিয়াট [3] ( জাতীয় আয়কর বিভাগের)–এর প্রতিষ্ঠিত নিয়ম “ইলেট্রনিক সার্টিফিকেট ব্যবহারের” প্রয়োগের মাধ্যমে করতে হবে, এই বিষয়টি জারি করেছিল “ইলেট্রনিক সার্ভিস সেবা বিভাগের প্রধান [4]”। ভেনেজুয়েলার অভ্যন্তরে যে সব ই-কমার্স ভিত্তিক লেনদেন হবে তার সবগুলোর হতে হবে জাতীয় মুদ্রা বলিভারে মাধ্যমে। ভেনেজুয়েলা এমন একটি রাষ্ট্র যা কিনা তার কঠোর মুদ্রা বিনিময় নিয়ন্ত্রণের একাদশতম বছরে পা দিল, সেই রাষ্ট্রে এই খসড়া আইন অর্থনৈতিক এবং অনলাইন অধিকারের ক্ষেত্রে অজস্র জটিলতা তৈরী করবে:

৬০ নং ধারাঃ কোনাটেল, সামাজিক-অর্থনৈতিক অধিকার রক্ষায় বিভাগীয় প্রধানের রিপোর্টের ভিত্তিতে বলিভারিয়ান রিপাবলিক নামে পরিচিত ভেনেজুয়েলায় পণ্য বা সেবা প্রদান করতে থাকা যে কোন ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেওয়ার অধিকার রাখে, বিশেষ করে যখন ওই সকল ওয়েবসাইট এই অধ্যাদেশ-এর প্রয়োজনীয় শর্তাবলী পূরণে ব্যর্থ হবে, প্রশাসনের অন্য কোন শাখার কোন ধরনের পূর্ব ধারণা ছাড়াই, আইন ও বর্তমান আইনগত পদ্ধতির মাধ্যমে, ফৌজদারী এবং অপরাধ আইনের ধারায় এদের শাস্তি প্রদান করা হবে।

ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের বছরে ৩০০ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে লেনদেন করার অধিকার রয়েছে। নতুন এই আইন দেশটির অভ্যন্তরে অর্থনৈতিক এবং অনলাইন স্বাধীনতাকে আরো একবার সীমাবদ্ধ করতে যাচ্ছে।

এই বিশেষ খসড়া আইন সেই তথাকথিত অর্থনৈতিক যুদ্ধের একটা অংশ, যা ভেনেজুয়েলার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আনুষ্ঠানিক ডাটা অনুসারে এ বছর ঘটা ৬৩ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি [5] এবং বাজারে তৈরী হওয়া আতঙ্কের কারণে পণ্যের অন্যায্য মূল্যের বিরুদ্ধে লড়াই-এর উদ্দেশ্যে করা। সাধারণ বাজারে ওষুধ এবং স্বাস্থ্যসেবার পণ্যসমূহ এখন দুষ্পাপ্য, এখন ইলেকট্রনিক কমার্স ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের জীবনরক্ষার এক মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ই-কমার্স তাদের এমন সব পণ্য কেনার সুযোগ করে দেয়, যা হয় দুষ্প্রাপ্য অথবা এগুলোর দাম আকাশ ছোঁয়া। নতুন আইন কর্তৃপক্ষকে সেই সমস্ত সাইট বন্ধ করার সুযোগ করে দেবে যা ইলেট্রনিক মাধ্যমে পণ্য বিক্রয় করার চেষ্টা করে।

Venezuela e-commerce law

বছর জুড়ে দোকানের অনেক তাক খালি রয়েছে। ছবি এস ফিগুয়েরোয়ার [6], উইকিমিডিয়া কমন্সের মাধ্যমে পাওয়া (সিসি বাই-এসএ ২.০)।

২০১০ সালে রেডিও, টেলিভিশন এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সামাজিক দায়বদ্ধতা আইন [7] পাশ হবার পর লেখার উপাদান সহ যদি কোন ওয়েবসাইট ক্রমান্বয়ে একে একে প্রয়োজনীয় শর্তাবলী পূরণে ব্যর্থ হয়, তাহলে সেটি বন্ধ করে দেওয়ার ক্ষমতা কোনাটেল পুনরায় অর্জন করে। গতবছর রাষ্ট্রপতি নিকোলাস মাদুরোর আদেশ অনুসারে [8] কালোবাজারে বৈদেশিক মুদ্রা সম্বন্ধে তথ্য সরবরাহের কারণে ৩০০ ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই বছর আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত সংবাদসাইট, মোবাইল বান্ধব যোগাযোগ মাধ্যম এ্যাপস যেমন জেলো [9] এবং নিষেধাজ্ঞা পাশ কাটিয়ে ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার মাধ্যম যেমন টানেলবিয়ার [10] বন্ধ করার ক্ষেত্রে এই ক্ষমতা প্রয়োগ করা হয়েছে।