বাহরাইনে আন্দোলনের অগ্রভাগে রয়েছে আল খাজা পরিবার। ২০১১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারিতে তথাকথিত আরব বসন্ত যখন এই ছোট দ্বীপ রাজ্যটিতে ঝড় তোলে তখন থেকেই পরিবারটি সেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে।
সুপরিচিত মানবাধিকার সক্রিয় কর্মী আব্দুল হাদি আল খাজা বর্তমানে কারাগারে আছেন। আন্দোলনে জোড়ালো ভূমিকা রাখার কারণে তিনি যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত হয়েছেন।
তাঁর দুই মেয়ে মরিয়ম [1] এবং জয়নব আল খাজা [2], যাদের বয়স যথাক্রমে ২৭ এবং ৩১ বছর। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা দুই জন বেশ সক্রিয়। তারা টুইটারে তাদের গল্প শেয়ার করতে মুখর হয়ে উঠেছেন। আর তাদের দেশে কি ঘটছে তা সারা বিশ্বের হাজার হাজার অনুসারীর সাথে শেয়ার করছেন। মরিয়ম এবং জয়নবের টুইটারে যথাক্রমে ১০২,০০০ এবং ৪৮,৮০০ অনুসারী রয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সোচ্চার হয়ে ওঠার জন্য দেশটির কর্তৃপক্ষ মরিয়ম এবং জয়নবকে নানাভাবে জর্জরিত করে আসছে।
আদালতে বাদশাহের ছবি ছিঁড়ে ফেলার অপরাধে জয়নব বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন [3]। আর মরিয়ম তাঁর বাবার সাথে দেখা করতে বাহরাইন এসে পৌছানোর পর বিমানবন্দরেই তাকে শাস্তি প্রদান করা হয়। তাকে বাহরাইন ছাড়তে বলা হয়েছে। বিমানবন্দরে মরিয়মকে গ্রেপ্তার করার পর তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশ বাহিনীর একজন সদস্যের গাঁয়ে হাত তোলার অভিযোগ আনা হয়। মরিয়ম তাঁর বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। কারাবন্দী থাকা অবস্থায় তিনি আমরণ অনশন শুরু করেছেন। তাকে ১৯ সেপ্টেম্বর তারিখে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়েছে [4]এবং তাঁর পর তিনি দেশ ছেড়েছেন। তাঁর বাবা এখনও কারাবন্দী। মরিয়ম মানবাধিকার সংস্থার উপসাগরীয় শাখার উপ-পরিচালক।
জিভি অভিব্যক্তির এই পর্বে আমরা মরিয়ম আল খাজার সাথে কথা বলেছিঃ
একটি জনপ্রিয় গনজাগরণের [5]মাধ্যমে ঘটে যাওয়া বিপ্লবের পর বাহরাইন এখন তৃতীয় বছরে পদার্পন করেছে। আন্তর্জাতিক প্রচার মাধ্যমগুলো তাদের প্রতিবেদনে এটিকে বাহরাইনে সুন্নি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে শিয়া সম্প্রদায়ের নেতৃত্বে চলা একটি আন্দোলন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। তবে অনেকেই মনে করেন, বিপ্লবটিকে এভাবে আখ্যায়িত করা দোষের কিছু নয়। এতে বিপ্লবটি বেশ সাধারণ হয়ে যায় এবং প্রকৃতপক্ষে যা ঘটছে তা প্রকাশিত হয় না। বিপ্লবটি স্বীকার করতে ব্যর্থ হয়েছে, যেসব বাহরাইনি তাদের শাসনতন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছিলেন তারা দেশের স্বার্থে এমনটি করেছিলেন। কেননা তারা ছিলেন শিয়া অধ্যুষিত এবং তাদের শাসনতন্ত্র ছিল সুন্নি সম্প্রদায়ের।
বাহরাইনে উপদলীয়তা কি ধরনের ভূমিকা রেখেছিল এবং কীভাবে এটি আন্দোলনকে প্রভাবিত করে সে সম্পর্কে আমরা মরিয়ম আল খাজার সাথে কথা বলেছি। এ আন্দোলনে কারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এবং কারা উপদলীয়তার শোষক ছিলেন? উপদলীয়তা বাহরাইনে শাসন ব্যবস্থায় কীভাবে নিপীড়ন চালিয়ে আসছিল? আর কেনইবা বাহরাইনি বিপ্লবকে উপদলীয়তার কলঙ্কে কলঙ্কিত করা হল?