
প্রাইভেট স্কুলে পড়ুয়া কোরিয়ান শিশু। ছবি নেয়া হয়েছে নিটিম্যারি'র ফ্লিকার অ্যাকাউন্ট থেকে। সিসি বিওয়াই-এসএ ২.০।
বাচ্চাদের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার খ্যাতির চেয়ে কুখ্যাতিই বেশি। এখানকার পড়াশোনা খুব প্রতিযোগিতামূলক। ছোট ছোট বাচ্চাদের জোর করে সেই ভোরে স্কুলে পাঠানো হয়। আর ফেরে বেশ রাত করে। অফিসিয়াল সময় সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা হলেও প্রাইভেট স্কুলে পড়ুয়া ছেলেমেয়েরা স্কুল থেকে অনেক রাত করে ফেরে।
আর তাই বাচ্চাদের আরো একটু ঘুমানোর সুযোগ করে দিতেই আগস্ট মাসের মাঝামাঝিতে দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েনজি প্রদেশ স্কুলের সময় এক ঘণ্টা পিছিয়ে দেয়। নতুন নিয়মে স্কুল শুরু হয় সকাল ৯টায়। তবে এই সিদ্ধান্ত সারাদেশ জুড়ে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। আরো কয়েকটি প্রদেশ স্কুল শুরুর নতুন এই নিয়ম চালুর বিষয়টি বিবেচনা করছে।
অনলাইন বিতর্ক দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। এক পক্ষ পুরোনো নিয়মে স্কুল চালুর পক্ষে মতামত দিচ্ছেন। আরেক পক্ষ বলছেন, কিছু অভিভাবক নতুন নিয়মের অপব্যবহার করবেন। দেখা যাবে, তারা সকালবেলায় তাদের সন্তানদের জন্য গৃহশিক্ষক রাখছেন।
9시 등교 논란은 고속도로에서 100km/h 지키자는 사람한테 과속하던 운전자들이 미쳤냐고 따지는 꼴
— 알이z웰! 스카이콩콩 (@FugioErgoSum) August 26, 2014
সকাল ৯টায় ক্লাস শুরু নিয়ে বিতর্ক করছেন তারাই, যারা প্রতি ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতির রাস্তায় গাড়ি চালিয়ে হাইওয়েতে ১০০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চালানোর সমালোচনা করেন।
নিচের দুটো পোস্ট-ই ১৩০০ বারের বেশি রিটুইট হয়েছে।
개소름인게 9시 등교한다니까 그럼 애들 학습 능률 떨어진다고 7시 전에 깨워서 한시간 두시간동안 구몬 학습지 같은거 풀게할거라고 아줌마들이 웃으며 밖에서 이야기하고 있음 미친 것 같다…
— 십만온 가고싶다 공삼 (@roree03_u) August 16, 2014
দেরিতে সকাল ৯টায় স্কুল চালু নিয়ে মায়েদের আলোচনা আমার গায়ে হুল ফোটায়। দেরিতে স্কুল শুরু হওয়ায় পড়াশোনায় কী যে ক্ষতি হচ্ছে বাতাসে ভেসে আসা সেসব আলোচনার অংশবিশেষ শুনি, তাদের গুঞ্জন শুনি। এখন তাদের সকাল ৭টার আগে ঘুম থেকে উঠতে হবে। বাচ্চাদের বইপত্র গুছিয়ে তৈরি করে দিতে হবে। তারা এক একটা উন্মাদ ব্যক্তি।
의외로 9시등교를 안달가워하는 애들이 많더라구요.. 늦게 시작해서 늦게 끝나면 안그래도 모자라는 개인시간이 더 부족해지니까. 주5일제 시행할때는 수업시수를 맞추느라 방학을 줄였고, 정말 필요한건 과한 수업시수를 줄이는 거라고 생각하는데ㅋㅋㅋ
— 브라운하엘 (@HAPPY_LOVEGAZER) August 20, 2014
সকাল ৯টায় স্কুলে যাওয়ার ব্যবস্থা অনেক বাচ্চাই প্রত্যাখান করেছে। এটি স্কুলের নিয়মিত সময়টাকেও দেরিতে নিয়ে যাবে। আর এতে করে শিক্ষার্থীদের সীমিত পরিমাণ যে মুক্ত সময় রয়েছে, সেটাও কমে যাবে। সপ্তাহে ৬ দিনের থেকে স্কুল যখন ৫ দিনে যাবে, তখন ছুটির সময়ও সংকুচিত হবে। কারণ তখন বাধ্যতামূলকভাবে স্কুলের সময় বেশি হবে। বাধ্যতামূলকভাবে স্কুলের দিনের পরিমাণ কমানো দরকার।
দেরিতে স্কুল শুরু করলে বাচ্চাদের ভালো হবে, শুধু সেই কারণে বিতর্ক শুরু হয়নি। বিতর্ক ওঠার আরো অনেক কারণ রয়েছে। এর একটি হলো বাবা-মায়েদের অফিস সময়ের ঠিক রাখা। অনেক বাবা-মা'ই উদ্বিগ্ন, তারা তাদের সন্তানের নতুন সময়ের সাথে অফিসের সময় মিলাতে পারবেন কি না, তা ভেবে। যদিও এক জরিপে দেখা গেছে, ৭৩% বাচ্চা নতুন সময় নিয়ে খুশি। তাছাড়া ৫৬% বাবা-মা নতুন সময়ের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
9시 등교를 하게 되면 맞벌이 부부가 곤란하다는 건 알겠는데 뉴스 인터뷰에서 ‘맞벌이라 반대'라고 말하는 엄마를 보자 난감한 느낌. 일찍 등교해야 하는 아이를 위해 보완책을 세워 달라든가 요구를 해야지 자신의 사정 때문에 ‘반대'라니 이상하지 않나
— 살 빼야 날으는 원더우먼 (@artemizhb) August 18, 2014
আমি বুঝতে পেরেছি, যেসব বাবা-মা দ্বিগুণ আয় করেন, তাদের পক্ষে নতুন সময় মিলিয়ে নেয়া একটু কঠিন হবে বৈকি। যদিও সকালের খবরে এক মায়ের বক্তব্য শুনে আমি কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে গেছিলাম। তিনি সাংবাদিকের কাছে চাকরি করার কারণে নতুন ব্যবস্থা প্রত্যাখানের কথা বললেন। তাছাড়া স্কুল শুরু হওয়ার আগেই বাচ্চাদের জন্য কিছু খুঁজে বের করার দাবি জানালেন। আর অসুবিধা তৈরি করার কারণে একে প্রত্যাখান করলেন।