অস্ট্রেলিয়াঃ আশ্রয় প্রার্থী ইরানি বন্দীর মৃত্যুতে রাত্রি জেগে প্রার্থনা

ইরানি আশ্রয় প্রার্থী হামিদ কেহাজাই ব্রিসবেনের একটি হাসপাতালে ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ তারিখ রোজ শুক্রবারে মারা গেছেন। তাঁর পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, লাইফ সাপোর্ট বন্ধ করে দেয়ার পর তিনি মারা যান। পাপুয়া নিউগিনির ম্যানাস দ্বীপের উপকূলে সাজা প্রাপ্ত অবস্থায় থাকার সময়ে তিনি রোগে সংক্রমিত হন। এই সংক্রমণ থেকে তিনি পরবর্তীতে সেপটিসিমিয়াতে আক্রান্ত হন। সেপটিসিমিয়াতে কিছুদিন রোগ ভোগের পর তাকে “ডাক্তারিভাবে মৃত” ঘোষণা করা হয়।

এ ঘটনায় অনেক অস্ট্রেলীয় নাগরিক সমবেদনা এবং ক্রোধের সাথে তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। কেউ কেউ তাঁর জন্য ধারাবাহিকভাবে রাত জেগে প্রার্থনাও করেছেন।

যেসব স্থানে তাঁর জন্য রাত জেগে প্রার্থনা করা হয়েছেঃ

নিউ সাউথ ওয়েলসের সিডনিতে:

Candlelight vigil for Iranian asylum seeker Hamid Kehazaei - Sydney Photo by Sergio Leyva Seiglie, CC Demotix (4 Sep 2014)

সিডনীতে ইরানি আশ্রয়প্রার্থী হামিদ কেহাজাই এর জন্য প্রার্থনায় রাত জেগে মোমবাতি প্রজ্বলন। ছবিঃ সারজিও লিয়েভা সিজেলি, সিসি ডেমোটিক্স (৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪) 

পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার পার্থেঃ

হামিদ কেহাজাই এর জন্য রাত জেগে প্রার্থনা করে বলা হয়েছে “জাতির চারপাশে প্রজ্বলিত মোমবাতিগুলো যেন আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে যে আশাই জয়ী হয়।” #অন্ধকারকেআলোকিতকর 

দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার এডেলেইডে 

#এডেলেইডে’এর #অন্ধকারকেআলোকিতকর শিরোনামে হ্যাশট্যাগ থেকে নেয়া ছবি। @জেগেওঠো পিং বলেছেন, “অন্ধকার দিয়ে অন্ধকারকে দূর করা যায় না, কেবলমাত্র আলোই পারে অন্ধকারকে দূর করতে”।  

হামিদ কেহাজাই’এর জন্য #অন্ধকারকেআলোকিতকর ফেসবুক এ্যালবাম থেকে ছবিটি নেয়া হয়েছে। স্বাগতম কেন্দ্রের স্বেচ্ছাসেবক দিয়াকো ছবিটি পোস্ট করেছেন।

#LightTheDark for Hamid Kehazaei Courtesy: The Welcome Centre volunteer Dyako (Facebook)

হামিদ কেহাজাই এর জন্য #অন্ধকারকেআলোকিতকর
সৌজন্যে: স্বাগতম সেন্টারের স্বেচ্ছাসেবক দিয়াকো (ফেসবুক) 

মিশেলা ম্যাকগুয়েরে মাসিক ব্লগে শেয়ার করা তীব্র মনঃকষ্ট প্রকাশ করেছেনঃ 

সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হচ্ছে, ২৪ বছর বয়সী ইরানি ছেলে হামিদ কেহাজাইকে ডাক্তারি ভাষায় মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে যা যা করা যেতঃ তাকে বাঁচাতে শুধুমাত্র একজোড়া জুতা লাগতো, অথবা কিছু প্রাথমিক চিকিৎসা। হয়তবা শুধুমাত্র একটি ব্যান্ডেজেই কাজ হয়ে যেত। 

নৌকায় চড়ে তীরে পৌঁছানো একজন সাহায্য প্রার্থীকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করার বিষয়টি বেশ বিতর্কিত হয়েছে। টনি এ্যাবোটের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার এবং লেবার পার্টির সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেভিন রাড এবং জুলিয়া গিলার্ড সকলের অধীনেই বিষয়টি বেশ বিতর্কিত হয়ে উঠতো। ডেভিড লেগে টুইট করেছেনঃ 

@টনিএ্যাবোটএমএইচআর এবং @স্কটমরিসনএমপি গৃহীত দূরবর্তী কঠোর কারাগার নীতি বিষয়ক ভবিষ্যৎবাণীর ফলাফলই হচ্ছে হামিদ কেহাজাই এর মৃত্যু। 

আশ্রয় প্রার্থী সম্পদ কেন্দ্র এটির দীর্ঘদিনের অবস্থানের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছেঃ 

আমরা #হামিদকেহাজাই’কে ভুলতে পারব না। আর #আশ্রয়প্রার্থীরা যতক্ষণ পর্যন্ত উপকূলবর্তী অঞ্চলে কারাদন্ড থেকে মুক্তি না পাবেন ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা থামব না। #অন্ধকারকেআলোকিতকর

অভিবাসন মন্ত্রী স্কট মরিসন ম্যানাস উপকূলে কারাবন্দীদের প্রদান করা স্বাস্থ্য সেবার পক্ষ অবলম্বন করেছেন। 

প্রকাশিত হয়ে পরা এই মর্মান্তিক ঘটনার একটি ইতিবাচক দিক সৃষ্টি হওয়ার আশা ছিলঃ 

সত্যিকার উদারতা – হামিদ কেহাজাই এর পরিবার তাঁর বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এমন একটি দেশে দান করেছেন যে দেশটি তাকে কখনও বাড়িতে ফিরতে দেয়নি। 

স্পষ্টভাবেই সেপ্টিসিমিয়ার কারণে এখন আর তা কিছুতেই সম্ভব নয়। 

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .