- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

নারী অধিকারকর্মী: কিরঘিজস্তানে আমাদের নিজস্ব গল্পগুলো

বিষয়বস্তু: মধ্য এশিয়া-ককেশাস, কিরগিজস্তান, নাগরিক মাধ্যম, প্রযুক্তি, মানবতামূলক কার্যক্রম, রাইজিং ভয়েসেস

রাইজিং ভয়সেস ক্ষুদ্রঋণপ্রাপ্ত প্রকল্পের সংবাদ

First workshop. Photo courtesy of Girl Activists of Kyrgyzstan and used with permission.

প্রথমবারের মতো কর্মশালা অনুষ্ঠিত হলো। গার্লস অ্যাক্টিভিটিজ অব কিরঘিজস্তানের সৌজন্যে ছবিটি প্রকাশিত। অনুমতি নিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে।

আমরা কিরঘিজস্তানের নারী অধিকারকর্মী। আমরা ছেলেমেয়েদের মধ্যে সমানাধিকার দাবিতে আন্দোলন করছি। সারা পৃথিবী থেকে সহিংসতা, ঘৃণা, বৈষম্য, অবিচার দূর করতে লড়াই করছি।

মধ্য এশিয়ার পাহাড়ঘেরা দেশ কিরঘিজস্তানের [1] রয়েছে হাজার সমস্যা। দেশের অনেক মানুষই মনে করেন, সরকার তরুণদের দাবি-দাওয়ার প্রতি উদাসিন। তবে তাদের নেয়া সিদ্ধান্ত তরুণদের ওপর ভালোই প্রভাব ফেলে।

তাছাড়া দেশের খুব কম লোকই জানেন গ্রামের নারীরা কী ধরনের কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে জীবনধারণ করেন। আর এই কারণেই আমাদের এই প্রজেক্ট- আমাদের একান্ত গল্পগুলো। কিরঘিজস্তানের বিভিন্ন প্রান্তের গ্রামের মেয়েরা এই প্রজেক্টে কাজ করছেন। তারা ব্লগ পোস্ট, ছবি এবং ভিডিও'র মাধ্যমে তাদের জীবনের গল্পগুলো বলবেন।

গত জুলাই মাসে আমরা আমাদের প্রজেক্টে কিরঘিজস্তানের তিনটি গ্রামের নারীদের অংশ গ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। এরপরেই আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা করি। আমরা বিশকেক-এর নারীদের কখন, কোথায় প্রশিক্ষণ দিবো, সেটার উদ্যোগ নিই। প্রশিক্ষণে আমাদের ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটে তাদের গল্পগুলো কীভাবে ব্লগ পোস্ট আকারে, অথবা ভিডিও এবং ছবি আকারে দেয়া যাবে, তা আমরা তাদের শিখাবো। তাছাড়া স্মার্টফোনে কীভাবে নোট লিখতে হয়, তাও শেখাবো। ফেসবুক এবং টুইটারে পোস্ট কীভাবে শেয়ার করতে হয়, সেটাও দেখাবো।

যদিও দু'টি গ্রামের নারীরা কর্মশালায় অংশ নিতে পারেননি। এই নারীদের মা-বাবা পিতৃতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী। তাছাড়া তারা তাদের সন্তানদের ব্যাপারে খুবই রক্ষণশীলও। কিছু বাবা-মা তাদের সন্তানদেরকে শহরে এসে প্রশিক্ষণ নেয়ার ব্যাপারটি অনুমোদন করেননি। এটাকে তারা অপ্রয়োজনীয় ভেবেছেন। আমরা এই বাবা-মা'দের সাথে কথা বলেছি। তাদের বোঝাতে চেষ্টা করেছি, এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ তাদের মেয়েদের জন্য কতো গুরুত্বপূর্ণ।

অনেক নারীই অর্থ উর্পাজনের মাধ্যমে সংসারে সহযোগিতা করতে প্রতিদিন কাজ করেন। অনেকে আবার বাধ্য হয়ে করেন। কেউ আবার ঘরদোর পরিষ্কার কাজে সাহায্য করে। কেউ আবার ছোট ভাইবোনদের দেখাশোনা করেন। কেউ আবার গরুর পাল দেখাশোনা করেন। কিন্তু তারা কি এগুলো করতে চায়?

কেউ-ই তাদের কাছে এটা জানতে চায়নি।

গ্রামের টেকসই জীবনযাত্রা টিকিয়ে রাখতে নারীরা সাহায্য করছে।

আমরা গল্প নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা তাদের কাছে জানতে চেয়েছি, তারা কি তাদের গল্পগুলো সবার সাথে শেয়ার করতে চায়?তাদের কাছে কোন বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ, তারা কোন বিষয়ে উদ্বিগ্ন? তাদের জীবন কেমন, প্রতিদিন তারা কী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে?

নারীদের সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়ার বিষয়টি বেশ ভালো ছিল। এটা তাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। তারা নিজেদের জন্য নতুন কিছু যোগ করতে চেয়েছিল, চেয়েছিল কিছু বিষয়ের পরিবর্তন আনতে।

আমার ধারনা, এই বৈঠক থেকে আমাদের সবচে’ গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হলো কিছু নতুন বন্ধু পাওয়া। আমরা একে অপরকে সাহায্য করেছি। পুরো বিষয়টি খুবই মজার ছিলো।

বিশকেক-এর আমাদের দলও অংশ নিয়েছিল। আমরা ওয়ার্ডপ্রেসের অনেক কিছুই শিখেছি, যা আগে জানতাম না। তাছাড়া আমাদের স্মার্টফোনে যে অনেক বুদ্ধিদীপ্ত ফাংশন রয়েছে, সেগুলো সম্পর্কেও জেনেছি। গ্রামের নারীদের পাশাপাশি এই কর্মশালা আমাদের কাছেও মজার ছিল। এখানে আমরা সবাই শিক্ষক, আমরা সবাই ছাত্র।