
নুর মিডিয়া সেন্টারের শেয়ার করা উদ্ধার কার্যক্রমের ইউটিউব ভিডিওর স্ক্রিনশট।
আজকাল যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়া থেকে কদাচিৎ কোন ভালো খবর পাওয়া যায়। কেবল গত সপ্তাহেই জাতিসংঘ দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে তাদের পরিসংখ্যানে সংশোধন এনেছে। প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের প্রতি বিশ্বস্ত বাহিনী এবং তাঁর শাসনের বিরোধীতা করা চক্রান্তকারী গোষ্ঠীদের মাঝে সংঘটিত এই রক্তাক্ত দ্বন্দ্বে এ পর্যন্ত ১৯১,০০০ জনেরও বেশি লোক মারা গেছেন। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার নাভি পিল্লাই শোক প্রকাশ করে বলেছেন, “এই বিপুল পরিমাণ মৃত্যুর যেন শেষ নেই”।
পরিস্থিতি খুব নির্মম হওয়া সত্ত্বেও চলুন অন্যতম একটি দূর্লভ মূহুর্তে আবার চলে যাই। গত বছর সিরিয়া থেকে উঠে আসা সেই মূহুর্তে যাওয়ার কথা বলছি যে মূহুর্তটি আমাদেরকে নৈতিক অনুপ্রেরণা দেয়। যারা অলৌকিক ঘটনায় বিশ্বাস করেন না তাদের জন্য ঘটনাটি এখানে উল্লেখ করা হল।
ভিডিওটি ইউটিউবে বিভিন্ন একাউন্টের মাধ্যমে দশ লক্ষেরও বেশি বার দেখা হয়েছে। এতে হাঁটতে শেখা একটি সিরিয় শিশুকে বেঁচে যেতে দেখা যায়। সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পোতে পিপা বোমা হামলা চালিয়ে বিস্ফোরণ ঘটানোর কারণে শিশুটির বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়। এই ধ্বংসাবশেষে আরেকটি শিশু মারা গেলেও তাকে অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
নুর মিডিয়া সেন্টার আরবি ভাষায় প্রকৃত ভিডিওটি পোস্ট করেছে। অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়ার ভিডিওটি সংবাদের ওয়েবসাইট ইউরোনিউজ এবং ইউটিউব ব্যবহারকারী কামটুট্রুথ গত ২৪ জানুয়ারি, ২০১৪ তারিখে শেয়ার করেছেন।
২৯ জানুয়ারি, ২০১৪ তারিখে শিশুটিকে উদ্ধারের এক সপ্তাহ পর সুখবরটি জানা যায়। আটজেহ সাইবার ওয়ারিওর ইংরেজী ভাষান্তর করা ভিডিওটি শেয়ার করেছেন। ঘিনা নামের শিশু কন্যাটিকে চিহ্নিত করে ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছেঃ
ইট পাথরের ধ্বংস স্তূপ থেকে ঘিনাকে বের করে নিয়ে আসার পর দেখা যায় সে বেঁচে আছে। যুদ্ধবিমান থেকে দালানগুলোর উপর বোমা বর্ষণ করা হয়। কিন্তু মানুষ এবং শিশুরা এতে আক্রান্ত হয়েছে। বোমা হামলার কারণে ধ্বংস স্তূপের নিচে সপরিবারে চাপা পড়ার সময় ঘিনা তাঁর মাকে হারিয়েছে। ঘিনা সৌভাগ্যবতী হলেও তাঁর মা সৌভাগ্যবতী ছিল না। ঘিনা এখন ঘরবাড়ি হারিয়ে অন্য জায়গাতে তাঁর বাবা এবং অন্যান্য ছয় ভাইবোনের সাথে বসবাস করছে। এখানে তারা জীবন ধারণের নূন্যতম চাহিদা পূরণের সুযোগ সুবিধাও পাচ্ছে না।
হাজার হাজার সিরিয় শিশুর মতো ঘিনাও একজন, যাকে এই গৃহযুদ্ধের চরম মূল্য দিতে হচ্ছে। গৃহযুদ্ধটি বর্তমানে তৃতীয় বছরে পদার্পণ করল। সিরিয়ার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে সমর্থনকারী বাহিনী এবং তাঁর শাসন বিরোধী চক্রান্তকারীদের মধ্যকার এই রক্তাক্ত যুদ্ধে এ পর্যন্ত ১৯১,০০০ লোকেরও বেশি নিহত হয়েছে। সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে যখন আরব বসন্ত বিক্ষোভের ঢেউ লাগে, তখন এই বিরোধী শক্তি প্রথম মাথা চাড়া দিয়ে উঠে। ঘিনা এই নিষ্ঠুর পিপা বোমায় আক্রান্ত একজন। আন্তর্জাতিক নিন্দা সত্ত্বেও বেসামরিক এলাকাতে সরকার এসব পিপা বোমা নিক্ষেপ করে যাচ্ছে।
আপনি কি সিরিয়ার শিশুদের সাহায্য করতে চান ? কিভাবে সাহায্য করবেন তা জানতে চাইলে আমাদের পোস্ট করা “সিরিয়াতে শিশুরা সংকটে” লেখাটিতে চোখ রাখুন।