ক্লগহারদের দ্বারা ক্ষমতার বিনির্মাণ!

রাইজিং ভয়েসেস টীকাঃ পোস্টটি লিখেছেন সোপহিপ চাক। আমাদের অনুমোদিত প্রকল্পের প্রেক্ষাপট থেকে লেখা ব্লগ পোস্টের ধারাবাহিকতায় পোস্টটি লেখা হয়েছে। পোস্টটি কম্বোডিয়ার নমপেনে চলমান ক্লগহার প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে লেখা পোস্টগুলোর থেকে নেয়া হয়েছে।

কম্বোডিয়ার মানবাধিকার কেন্দ্রের (সিসিএইচআর) তত্ত্বাবধায়নে ক্লগহার প্রকল্পটির উন্নয়নে কাজ শুরু করা হয়েছে। এটি অত্যন্ত সাড়া জাগানিয়া একটি উদ্যোগ। কম্বোডিয়াতে নারীদের মাঝে প্রকৃত অর্থে পরিবর্তন আনতে প্রকল্পটি বেশ সম্ভাবনাময়। তাঁর পাশাপাশি সবার জন্য মানবাধিকারের উন্নয়ন ঘটাতে এটি এক কর্মশক্তি। ক্লগহার হচ্ছে কম্বোডিয়ান ব্লগারদের দল। স্থানীয়ভাবে নারী ব্লগারদের বলা হয় “ক্লগহার”… এভাবেই তৈরি হয়েছে “ক্লগহার”।

প্রকল্পটির অধীনে গ্রামাঞ্চল থেকে নমপেনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসা তরুনীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। তারা যেন আইসিটি এবং যোগাযোগ দক্ষতা বাড়িয়ে তাদের নিজস্ব ব্লগকে আরও উন্নত করতে পারে সে বিষয়ে তাদেরকে সাহায্য করা হবে। এতে করে তারা বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করতে, চিন্তা-ভাবনা শেয়ার করতে এবং মানবাধিকার ও/অথবা সামাজিক পরিবর্তনকে সমর্থন জানাতে নিজেদের একটি অনলাইন ফোরাম গড়ে তুলতে সক্ষম হবেন। বিশেষকরে নমপেনের বাইরে অবস্থিত প্রদেশগুলোতে বেড়ে ওঠা তরুণী হিসেবে তাদের অর্জিত নানা অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে এসব ফোরামে তারা কথা বলতে পারবেন।

কম্বোডিয়ার অনেক অংশে, বিশেষকরে গ্রামাঞ্চলে গৎবাঁধা কিছু লিঙ্গ বিষয়ক সংস্কৃতি এবং আশা-আকাংখা প্রচলিত রয়েছে। এই সংস্কৃতি নারীদের শুধুমাত্র নিজেদের প্রকাশ করার সুযোগই সীমাবদ্ধ করে দেয় না, বরং তাদের মতামত এবং দৃষ্টিভঙ্গির মাঝেও মূল্যবোধের একটি সীমাবদ্ধতা তৈরি করে। আর এ কারনেই আমরা গ্রামাঞ্চল থেকে আসা তরুনীদের সমর্থন জানানোর উদ্দেশ্যেকে প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হিসেবে বেছে নিয়েছি। এটি কম্বোডিয়ার সবচেয়ে প্রান্তিক কিছু জনগণের অনলাইন কণ্ঠস্বর প্রতিষ্ঠা করা এবং তাদের ক্ষমতায়ন করার একটি উপায়।

Indigenous youths coming from difference provinces attended the training on “Video Journalism” organized by CCHR’s at Sithi Hub in June 2014. (photo provided by CCHR)

২০১৪ সালের জুন মাসে সিথি হাবে সিসিএইচআর এর উদ্যোগে আয়োজিত “ভিডিও সাংবাদিকতা” প্রশিক্ষণে বিভিন্ন প্রদেশ থেকে আসা আদিবাসি যুবকরা অংশগ্রহণ করেছে। (ছবিঃ সিসিএইচআর)

যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বাধা বিপত্তি অতিক্রম করার একটি দারুণ উপায় হচ্ছে ইন্টারনেট। এটি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক উভয় পর্যায়েই নতুন নতুন লোকের কাছে নানা চিন্তা ভাবনা এবং মূল্যবোধ নিয়ে পৌঁছে যাচ্ছে। কম্বোডিয়াতে, বিশেষকরে গ্রামাঞ্চলে ইন্টারনেটের প্রবেশ এখনও বেশ ধীর গতির। তবে তরুণ কম্বোডিয়ানদের মাঝে এটি সবচেয়ে বেশি বিস্তৃত হচ্ছে, বিশেষভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। আমাদের নিজেদের ব্যবহৃত কিছু অনলাইন টুল, যেমন ফেসবুক, ইউটিউব এবং দ্যা সিথি ব্লগ থেকে আমরা এর বিস্তার সম্পর্কে জেনেছি। আমরা এসব অনলাইন টুল থেকে জেনেছি যে তরুণ প্রজন্ম কম্বোডিয়ার মানবাধিকার পরিস্থিতিতে পরিবর্তন দেখতে চায়। আর এই পরিবর্তন আনতে আমরা যে উদ্যোগ গ্রহণ করবো তাতে তারা সমর্থন জানাতে অনলাইনে যেকোন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। ক্লগহার ক্ষমতায়ন প্রকল্পটি এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আর প্রকল্পটি তরুনীদেরকে এই পরিবর্তনের চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করার একটি সুযোগ দিচ্ছে।

ক্লগহার ক্ষমতায়ন প্রকল্পটি শুরু হতে যাচ্ছে এবং আমরা বর্তমানে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী তরুনীদের বাছাই করার কাজ করছি। এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত তরুণীদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। এই বিপুল সংখ্যক তরুনীর নিজেদের কণ্ঠস্বর শোনানোর এবং কম্বোডিয়ান সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনে প্রভাব বিস্তারকারী এই নতুন পন্থাটি শেখার আগ্রহ দেখে আমরা বেশ উত্তেজিত বোধ করছি। প্রশিক্ষণ কার্যক্রমটি খুব শীঘ্রই শুরু হয়ে যাবে। পাঁচটি সেশনে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। আমাদের প্রশিক্ষনার্থীরা বিরাজমান ক্লগহার সম্প্রদায়ের সাথে যুক্ত থাকবেন। তাঁর সাথে সাথে তারা তাদের নিজস্ব ব্লগ তৈরি করবেন, যেন প্রকল্পটি শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও তারা তাদের ক্লগিং চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে আজীবন সমর্থন পেতে পারেন। তাদের প্রশিক্ষণের একটি অংশ হিসেবে তারা দ্যা সিথি ব্লগের জন্যও কলাম লিখতে পারবেন। ভবিষ্যতে আমরা তাদেরকে অতিথি ক্লগহার হিসেবে আমাদের বিভিন্ন কার্যক্রমে আমন্ত্রণ জানাব।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .