আরসালে প্রাণঘাতী সংঘর্ষে অধিবাসীরা ঘর ছাড়া

লেবানিজ শহর আরসালে লেবানিজ সশস্ত্র বাহিনী এবং ইসলাম পন্থি জঙ্গীদের মাঝে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। শহরটি সিরিয়ার সীমানার কাছে পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত। লেবাননে একটি আকস্মিক হামলা চালিয়ে জঙ্গিরা ১৯ জন সৈন্যকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ইসলামিক স্টেটের এই সব জঙ্গিরা এখন সিরিয়া এবং ইরাকের সোয়াত উপত্যকায় তাদের প্রভাব বিস্তার করেছে। খবরের প্রতিবেদনে জানা গেছে, লেবাননের কারাগারে বন্দী যেসব ইসলাম পন্থী জঙ্গি আছে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হলে এই ১৯ জন সৈন্যকে মুক্তি দেওয়া হবে বলে তারা জানিয়েছে।

গত ২ আগস্ট তারিখে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত অনেক অধিবাসী এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। তবে অন্যান্য যারা এখানে থেকে গেছেন তারা এই পাঁচ দিনের সহিংসতার শিকার হয়েছেন।

ডেইলি স্টার সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কমপক্ষে ১৭ জন সৈন্য, ৫০ জন জঙ্গি এবং ৪০ জনেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

জঙ্গিদের পিছনে ফিরে যাওয়ার পর এবং ৮ আগস্ট, ২০১৪ তারিখে লেবানিজ সেনাবাহিনীর শহরটির দখল নেয়ার পর সাংবাদিক কারিম শাহিন শহরের বর্তমান পরিস্থিতি জানিয়ে টুইট করেছেন। বিপুল সংখ্যক সিরিয়ান শরনার্থীসহ স্থানীয় অধিবাসীদের দুর্দশা তিনি তুলে ধরেছেন।

আরসাল শহরের একজন ডাক্তার আমাকে বলেছেন, তাঁর হাসপাতালে ৪০০ জন আহত বেসামরিক নাগরিক চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে বিপুল সংখ্যক শরনার্থী রয়েছেন।

ডাক্তার বলেছেন, শরনার্থীরা এক দেশের প্রতি অন্য দেশের যুদ্ধকালীন অন্যায়ের সমুচিত জবাব দিতে ভয় পান। আর তারা আরসালের ঘটনার পরিনতিতে পরিস্থিতি আরও উত্তেজিত হয়ে ওঠা নিয়েও ভয় পাচ্ছেন।

লেবানন সীমান্তে ২ হাজার সিরিয় শরনার্থী আশ্রয় নিয়েছেন। কারন আসাদ শাসনতন্ত্রে ফিরে যাওয়ার চেয়ে তারা আরসালে বাস করাটাই বেশি নিরাপদ মনে করেন। বিষয়টি নিয়ে দয়া করে এক মূহুর্ত ভাবুন। 

কয়েক ডজন পরিবার এই মূহুর্তে ধীরে ধীরে আরসালে ফিরতে শুরু করেছে। যদিও নিরাপত্তা বাহিনী সাংবাদিকদের সেখানে যেতে দিচ্ছে না। 

শাহিনের দেয়া তথ্য মতে, নিরাপত্তার খাতিরে অধিবাসীরা এখনই তাদের বাড়িঘরে ফিরে যেতে পারছেন না।  

অধিবাসীরা যারা আরসালে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন, সেসব পরিবারকে লেবানিজ সেনাবাহিনী আরসালে প্রবেশ করতে না দিয়ে আবার ফেরত পাঠিয়েছে। কেননা তারা বুঝতে পারছেন নিরাপত্তা ব্যবস্থা এখনও সম্পূর্নভাবে তাদের নিয়ন্ত্রণে আসেনি। 

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকা বিষয়ক সহকারী পরিচালক নাদিম হুরি চলমান ঘটনা প্রবাহ বিষয়ক আলোচনাতে এই এলাকার বেসামরিক অধিবাসীদের যে ব্যাপকভাবে অবহেলা করা হয়েছে সে চিত্রটিই তুলে ধরেছেন। 

#লেবাননঃ সেনাবাহিনী সমর্থিত বর্তমান পরিস্থিতিতে গত সপ্তাহে সংঘটিত যুদ্ধের প্রভাব আরসালের বেসামরিক নাগরিকদের উপর কতটুকু পড়েছে, সে সম্পর্কে প্রচার মাধ্যমগুলোতে খুব কমই আলোচনা করা হয়েছে।   

যেহেতু লেবানিজরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেনাবাহিনীর প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে এসেছেন, তাই নিঃসন্দেহে লেবানিজ সেনাবাহিনী সকল অনলাইন কথোপকথনের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এ্যান ইনিশিয়েটিভ টু সাপোর্ট দ্যা আর্মিঃ শিরোনামের একটি অনুষ্ঠানে তারা দল-মতের বিভেদ ভুলে জাতীয় ঐক্য প্রদর্শন করেছেন। অনুষ্ঠানটিতে ঐক্যের নিদর্শন হিসেবে জনগণকে তাদের সাধ্যমত দান করতে অথবা তাদের দক্ষতা অনুযায়ী স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করতে আহ্বান জানানো হয়েছে। একটি টেলিকম কোম্পানি ফেসবুকে এই পোস্টটির মতোই যুদ্ধে নিহত সৈন্যদের ছবিগুলো অনলাইনে ছড়িয়ে দিয়েছে। এমনকি স্থানীয় একজন খবর পাঠক টেলিভিশনে নিউজ বুলেটিন উপস্থাপন করার সময়ে সামরিক বাহিনীর জন্য নির্ধারিত পোশাক পড়েছিলেন।  

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .