- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

“বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই”: আফগানিস্তানের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি… আশরাফ গণি?

বিষয়বস্তু: আফগানিস্তান, নাগরিক মাধ্যম, নির্বাচন, রাজনীতি
Ashraf Ghani trailed Abdullah Abdullah in the first round but found his second wind in the form of a few million votes to claim victory.

প্রথম দফা ভোটে আশরাফ গণি আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ'র চেয়ে এগিয়েছিলেন। আর দ্বিতীয় দফায় আশরাফ গণি কয়েক মিলিয়ন বেশি ভোট পেয়ে বিজয়ী হওয়ার দাবি করেছেন। ছবি নেয়া হয়েছে কাবুলে অবস্থিত মার্কিন দুতাবাসের ফ্লিকার অ্যাকাউন্ট থেকে।

যদি প্রাথমিক ফলাফলকে সত্যি বলে ধরে নেয়া হয়, তবে বিপক্ষ প্রার্থীর ভোট কারচুপির অভিযোগ সত্ত্বেও আশরাফ গণি আহমাদজাই পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। আফগানিস্তানের স্বাধীন নির্বাচন কমিশন আজ বিবৃতি [1] দিয়েছে, ১৬ জুনের নির্বাচনে দুই প্রার্থী সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী আশরাফ গণি মিলে আট মিলিয়ন ভোটারের ভোট পেয়েছেন।

প্রতিযোগিতায় বিজয়

পশতু সম্প্রদায়ের নেতা ড. গণি ৫৬% ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। আর আধা পশতু, আধা তাজিক নেতা আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ অল্প ভোটের ব্যবধানে দ্বিতীয় হয়েছেন। যদিও তিনি অ-পশতু আদিবাসী সম্প্রদায়ের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়। প্রথম দফা নির্বাচনে গণি ১৪% বেশি ভোট পেয়ে এগিয়েছিলেন। বিবিসি ফার্সি'র সাংবাদিক জামাল মৌসুভি টুইট করেছেন:

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী আশরাফ গণি আহমাদজাই আফগানিস্তানের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন। তিনি ৫৬% ভোট পেয়েছেন। যদিও চূড়ান্ত ফলাফল এখনো ঘোষণা করা হয়নি।

তবে গণি'র সমর্থকরা বিজয়ী হওয়ার জন্য পরস্পরকে অভিন্দন জানাচ্ছেন। লুত্ফুল্লাহ স্টানিকজাই টুইট করেছেন:

২০১৪ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয়লাভ করায় ড. আশরাফ গণি এবং তার দলকে অভিনন্দন!

স্বাভাবিকভাবেই আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ'র মুখপাত্র ফলাফল প্রত্যাখান করেছেন। টোলো নিউজ টুইট করেছে:  

আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ'র মুখপাত্র টোলো নিউজের কাছে বলেছেন, আজকে সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন যে ফলাফর ঘোষণা করেছে, তারা সেটা মেনে নেবেন না।

নির্বাচনের জালিয়াতি নিয়ে ড. আবদুল্লাহ'র সমর্থকরা নিন্দা জানিয়েছে। ইয়ার মোহাব্বত নামের একটি সমর্থক লিখেছেন:  

জালিয়াতির ফলাফল আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। জালিয়াতির নির্বাচনে বিজয়ী রাষ্ট্রপতি আমার রাষ্ট্রপতি নন।

আজিজ তাহের নামে আবদুল্লাহ'র আরেকজন সমর্থক ভোট গণনার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন:

মাত্র দু'মাসের ব্যবধানে ড. গণি'র ভোট ১৫০% বেড়ে যাবে, এটা বিস্ময়করের চেয়ে কম নয়!

কাবুলের অধিবাসী হায়দার সাদেকি বিবিসি'র একটি পোস্টে লিখেছেন:

আশরাফ গণি কয়েক মিলিয়ন ভুয়া ভোটার নিয়ে দেশের মানুষের ওপর শাসন কায়েম করতে চান। কিন্তু জনতা এটা সহ্য করবে না।

সাংবাদিক আহমাদ মুখতার আবদুল্লাহ সমর্থকদের প্রতি “আঙুর ফল টক” উল্লেখ করে লিখেছেন:

ব্রেকিং নিউজ: আবদুল্লাহ'র সমর্থকরা বলছেন পুরো নির্বাচনটিই জালিয়াতিপূর্ণ। ২ মিলিয়নের বেশি ভুয়া ভোটার গণিকে ভোট দিয়েছেন।

এদিকে ভোট জালিয়াতির অভিযোগের কারণে কয়েক জেলায় ভোট নতুন করে গণনা করা হবে। আমেরিকান-আফগান লেখক ফেরেশ্তা কাজেমি এক-চতুর্থাংশ ভোট পুণরায় গোনা হতে পারে বলে জানিয়েছেন।

সমঝোতা নয়?

নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণার আগে গণি এবং আবদুল্লাহ তার সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন। দু'দলের সমর্থকরাই সোশ্যাল মিডিয়ায় পরস্পরের প্রতি কাদা ছোঁড়াছুড়িতে লিপ্ত হয়েছিল। নির্বাচন কমিশনের প্রধান জিয়া উল-হক আমরখেইল আবদুল্লাহ'র টিমকে একটি অডিও রেকর্ডিং অনলাইন থেকে নামিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। আবদুল্লাহ'র সমর্থকরা দাবি করেছিলেন, এই অডিও বার্তায় তিনি গণি'র প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন।

A truck states its support for Abdullah Abdullah (picture tweeted by @alibomaye)

আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ সমর্থকদের পরিবহনের জন্য ট্রাক। ছবিটি টুইট করেছেন আলিবোমায়ি। ছবির মাঝখানের জন আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ।

জুলাইয়ের ৭ তারিখ সকালে আশরাফ গণি একটি বিবৃতি দেন। সেখানে তিনি জনগণের ভোটাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করার আহবান জানান:

আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ অনুরূপ বার্তা ইস্যু করেন। তবে তিনি পরিচ্ছন্ন ভোটাধিকারের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন।

আমি আবারো আফগানিস্তানের জনগণের পরিচ্ছন্ন ভোটাধিকার রক্ষার প্রতি আমার অঙ্গীকার ঘোষণা করছি।

তিনি পরিচ্ছন্ন ভোটাধিকারের বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, পরিচ্ছন্ন ভোটাধিকার হলো “ভৌতিক” ভোট থেকে আলাদা।

ভৌতিক ভোট ছাড়াই নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করতে হবে। তা না হলে সেটা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।

বিবিসি'র সাবেক সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী রামিন আনোয়ারের মনে করেন, সহিংসতা এড়াতে আশরাফ গণি'র উচিত আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ'র সাথে সমঝোতা করা।

আশরাফ গণি'র শিবির দাবি করেছে, তারা যেকোনো ধরনের আলোচনার জন্য প্রস্তুত, সহিংসতা এড়াতে তারা সবকিছু করতে প্রস্তুত।

এদিকে টুইটারে ব্যাপক গুজব ছড়িয়ে পড়েছে যে, আফগানিস্তানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত নির্বাচন কমিশনের নানা ব্যাপারে সাহায্য করেছেন এবং প্রচারণা পরিচালনাকারী দলের মধ্যস্থতাকারীর ভুমিকা পালন করেছেন। যদিও তিনি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত নির্বাচন কমিশন নন।

 আবদুল্লাহ'র পরাজয়ের পরে
এই নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে আফগানিস্তানে প্রথমবারের মতো গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ক্ষমতার পালাবদল ঘটছে। তবে এই পরিবর্তন প্রাসঙ্গিক হবে কি না এই প্রশ্ন [25]গত এপ্রিলে প্রথম দফা নির্বাচনের সময়ে গ্লোবাল ভয়েসেস তুলেছেন। সেই প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে, আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ ও তার সমর্থকরা কী করবেন, তার উপরে নির্ভর [26] করছে।