- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

বাহরাইনের ব্যঙ্গ – রচয়িতা ব্লগার তাকরুজ গ্রেপ্তার

বিষয়বস্তু: মধ্যপ্রাচ্য ও উ. আ., বাহরাইন, ডিজিটাল অ্যাক্টিভিজম, নাগরিক মাধ্যম, প্রচার মাধ্যম ও সাংবাদিকতা, রাজনীতি

বাহরাইনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা দিয়েছে, “শাসনতন্ত্রের বিরুদ্ধে তীব্র ঘৃণা উস্কে দেয়ার” অভিযোগে এ পর্যন্ত আরও একজন নেটিজেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এই ব্যঙ্গ – রচয়িতা মাইক্রো-ব্লগারের ডাকনাম তাকরুজ। থাইল্যান্ড থেকে দেশে ফেরার সময় বাহরাইন আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত নেটিজেনের নাম প্রকাশ না করে ১৮ জুন, ২০১৪ তারিখে [1] দেয়া একটি বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় এ কথা বলেছে।

এই গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে একদিন পর অনেক বাহরাইনি টুইটারে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বলেছেন, যেহেতু এই গ্রেপ্তারের কোন সুনির্দিষ্ট কারন নেই, তাই তারা এটিকে সরকারের ব্যর্থতা বলে মনে করছেন। অনলাইনে যেকোন বিরোধী কণ্ঠস্বরকে চেপে ধরে সরকার আরও একবার তাঁর সত্যিকার রূপ দেখিয়ে দিয়েছে। ২০১১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তারিখ থেকে বাহরাইনে সরকার বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। সে সময় থেকে এ পর্যন্ত বিপুল সংখ্যক নেটিজেনকে এই শাসনতন্ত্র গ্রেপ্তার করেছে। তাদের কয়েকজন হলেন মাহমুদ আল-ইউসুফ [2], মোহাম্মদ আলমাসকাতি [3] এবং গ্লোবাল ভয়েসেসের লেখক মোহাম্মাদ হাসান [4]

রিপোর্টারস উইদাউট বর্ডারের ২০১৪ সালের প্রতিবেদন [5]অনুযায়ী, বাহরাইন ইন্টারনেটের অন্যতম এককমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টের [6] তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ সালে মাথাপিছু কারাবন্দী সাংবাদিকের সংখ্যার ভিত্তিতে তৈরি করা তালিকাতে বাহরাইন দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে।

টুইটারে তাকরুজের ১৮ হাজার অনুসারী আছে এবং তিনি ১ লক্ষ টুইট করেছেন। সক্রিয় কর্মীদের বিরুদ্ধে সরকারের শৃঙ্খলা মূলক শাস্তির ব্যবস্থার নীল নকশা তুলে ধরতে তিনি বেশ সক্রিয় এক কণ্ঠস্বর ছিলেন। আর তাই বাহরাইনি সরকারের সন্দেহভাজন ব্যক্তির তালিকায় [7]তাঁর নাম সবচেয়ে উপরে ছিল। আরবিতে লেখা তাঁর টুইটগুলোতে তিনি পুলিশ প্রশাসন, দুর্নীতি দমন প্রচার সূচী এবং সাধারণ বাহরাইনিদের দৈনন্দিন উদ্বেগ নিয়ে গালিগালাজ করেছেন।

তাকরুজের গ্রেপ্তার নিয়ে আরবি দৈনিক সংবাদপত্রে একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে। খবরটি @এম_আলশেখ পরের দিন ইমেজ আকারে টুইট করেছেনঃ  

সরকার প্রকাশিত দৈনিক তাকরুজের গ্রেপ্তার নিয়ে প্রথম পাতায় একটি খবর প্রকাশ করেছে #বাহরাইন @তাকরুজ 

আইনজীবী হানান আলারাদি @হানানালারাদি তাঁর গ্রেপ্তার পরবর্তী পরিস্থিতি প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলেছেনঃ

অন্যান্য সরকার বিরোধী (@এমনারফেজহম) টুইটকারীদের মতো @তাকরুজ একাউন্টের স্বত্বাধিকারীকে কি জামিনে মুক্তি দেয়া হবে? 

বাহরাইন সরকার এর আগে সরকার বিরোধী টুইটার ব্যবহারকারী এমনারফেজহম’কে গ্রেপ্তার করেছিল। তাঁর বিচার মুলতবি রেখে তাকে পরে জামিনে মুক্তি দেয়া হয় [14]। এমনারফেজহমের বিরুদ্ধে জনগণকে অবমাননা করা এবং অপবাদ দেয়া, তাদের সম্মান এবং সুনামকে আঘাত করা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাহরাইনি বিভিন্ন পরিবারকে আক্রমণ করে অশোভন কথা বলা ইত্যাদি চারটি ভিন্ন ভিন্ন অভিযোগ আনা হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে টুইটার এবং ইন্সটাগ্রামে আল রাকিব, আহফাদ আল ওয়ালিদ, আহফাদ ওমর এবং এমনারফেজহম নামক চারটি ভিন্ন ভিন্ন একাউন্ট ব্যবহার করে বাহরাইনি জনগণকে অপমান করার অভিযোগ আনা হয়।

তাকরুজের গ্রেপ্তারের পর অনেক ক্ষুব্ধ টুইটার ব্যবহারকারী স্ব-প্রণোদিত হয়ে এই গ্রেপ্তারকে একটি নিষ্ফল পদক্ষেপ বলেছেন। @লেয়ার_ভালনারেবল উল্লেখ করেছেনঃ  

#বাহরাইন যখন একজন বিদ্রোহী, একজন টুইটার ব্যবহারকারী, একজন আলোকচিত্রীকে গ্রেপ্তার করে…তখন সে প্রমাণ করে দেয় যে সে নিজে কতোটা বোকা এবং যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সে কতোটা শক্তিশালী। আমিই হয়তোবা পরবর্তী তাকরুজ।  

দাপ্তরিক সূত্রে বলা হয়েছে যে গ্রেপ্তারকৃত নেটিজেন ইতোমধ্যে একাউন্টটি চালনা করার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। আর এ কারণে শাসনতন্ত্রের বিরুদ্ধে ঘৃণা উস্কে দেয়ার জন্য তাকে বিচারের সম্মুখীন করা হবে।