
ঘানার নাগরিকরা রাষ্ট্রপতি ভবনের সামনে অকুপাই আন্দোলনে অংশ নিচ্ছে। ছবি তুলেছেন ভিক্টোরিয়া ওকেই। অনুমতি নিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে।
সম্প্রতি অকুপাই ফ্ল্যাগ স্টাফ হাউজ প্রচারণার অংশ হিসেবে ঘানার একদল নাগরিক রাষ্ট্রপতি ভবনের কাছে মিছিল করেছেন। দুর্নীতি ও অর্থনৈতিক দুর্দশা দূর করতে সরকারকে চাপ দিতেই তাদের এই আন্দোলন।
তাদের আন্দোলন ছিল শান্তিপূর্ণ। পাঁচদিনের কম সময়ের মধ্যে তারা আন্দোলন কর্মসূচীর আয়োজন করেছেন। ব্রিটিশ শাসনমুক্তির ৫৪ বছর পূর্তির দিনে (১ জুলাই ২০১৪) এই কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়েছিল। তবে অকুপাই ঘানা নামের এই আন্দোলন শুরু হয়েছিল ফেসবুকে। জুন মাসের ২৮ তারিখে। জুলাইয়ের ১ তারিখে ৩ হাজার ফেসবুক ব্যবহারকারী আন্দোলনের সাথে সংহতি জানায়। এখন সমর্থনকারীর সংখ্যা ৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
সরকারের প্রতি জনগণের বিরূপ প্রতিক্রিয়া শুরু হয় গত মাসে- বৈদেশিক মুদ্রা নীতির কারণে ঘানার টাকার দাম পড়ে যাওয়ার পরে। শুধু তাই নয়, জ্বালানি তেলের সরবরাহও কমে যাওয়ায় সপ্তাহখানেক ধরে পেট্রোল পাম্পগুলোতে লম্বা লাইন পড়ে যায়।
আন্দোলনে ঘৃতাহুতি দেয় বিশ্বকাপ ফুটবল চলাকালীন একটি ঘটনা। পর্তুগালের সাথে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ঘানার খেলোয়াড়রা তাদের পাওনা টাকা পরিশোধ না করলে বিশ্বকাপ ম্যাচ বর্জনের হুমকি দেন। তখন সরকার তাড়াহুড়া করে তাদের জন্য ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্রাজিলে পাঠিয়ে দেয়। এ ঘটনার পরে জনগণের উপলদ্ধি, সরকার তাদের প্রতি দায়বদ্ধ নয়। রেডিও, টিভি এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম কুক্ষিগত করে রাখতে চায়।
আন্দোলনের দিনগুলোতে অকুপাই ঘানা গ্রুপ ফেসবুকে বিভিন্ন পোস্টের মাধ্যমে সরকার এবং দেশের অবস্থা নিয়ে তাদের অসন্তুষ্টিগুলো তুলে ধরে, সেগুলোর ব্যাখ্যা হাজির করে। জুন মাসের ২৯ তারিখে গ্রুপের ফেসবুক পেজে লেখা হয়:
This evening I saw police pickups even loading and stockpiling fuel.
I saw the faces of taxi drivers who are doing work and pay and need to pay off loans struggling for fuel.
I saw anxious workers who leave for work at 5am and return at 8pm but get paid pittance for their Labour anxiously waiting in queues with gallons.
Then I saw the elderly couple with kids abroad who need fuel for daddy to go for the checkup, wondering where it all went wrong,
The bread sellers, beans sellers, kofi broke man sellers who couldn't get taxis to carry their wares, those who need every present they make to survive,
Then I saw people like you and I, the Facebookers, the tooknown young middle classers, who greet our poor neighbors every morning with a wave and a condescending how are you? Now anxious about how you can buy fuel, or pay for that mortgage, or service that car loan…
আজকে সন্ধ্যায় আমি পুলিশ পিকআপ ভ্যানকে জ্বালানি নিতে দেখেছি।
আমি দেখেছি সেইসব ট্যাক্সি ড্রাইভারদের মুখ, যারা কাজ করছে, দেনা পরিশোধ করছে। জ্বালানি তেলের জন্য সংগ্রাম করছে।
আমি দেখেছি সেইসব কর্মজীবী মানুষের উদ্বিগ্ন মুখ, যারা সকাল ৫টায় বাসা থেকে বের হয়। আর ফেরে রাত ৮টায়। কিন্তু তাদের মজুরি খুব সামান্যই। তাই উদ্বিগ্ন মুখে গ্যালন নিয়ে লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
আমি দেখেছি বাচ্চাদের সাথে নিয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা সেইসব বয়স্ক দম্পতিদের, যাদের বাবার চেকআপের জন্য জ্বালানি দরকার। আশ্চর্য হয়ে দেখেছি, সেখানে সবকিছু কীভাবে ভুল পথে চালিত হয়।
রুটি, সবজি আর কফি বিক্রেতা ট্যাক্সিতে করে তাদের পণ্যসামগ্রী গুদামে নিয়ে যেতে পারেন না। প্রতি মুহূর্ত তাদের সংগ্রাম করে বেঁচে থাকতে হচ্ছে।
আমি দেখেছি আপনার আমার মতো মানুষদের, ফেসবুক ব্যবহারকারীদের, তরুণ মধ্যবিত্তদের, যারা প্রতিদিন সকালে আমাদের দরিদ্র প্রতিবেশিদের সম্ভাষণ জানায়, জানিয়ে দেয় অবনমন করে আপনি কেমন আছেন? আমি উদ্বিগ্ন আপনি জ্বালানি কিনতে পারবেন কি না, ঋণ শোধ করতে পারবেন কি না অথবা গাড়ির ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারবেন কি না।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধিবাসাী ঘানার র্যাপ সংগীতশিল্পী ব্লিটজঅ্যাম্বাসেডরের টুইটার অনুসারীর সংখ্যা ১৯ হাজারের উপরে। তিনি টুইট করেছেন:
Only if I could teleport to Ghana now…..#OccupyFlagStaffHouse. the people are tired of failed leadership.
— Blitz the Ambassador (@BlitzAmbassador) July 1, 2014
আমি যদি এখন টেলিপোর্ট করে ঘানায় যেতে পারতাম! জনতা নেতৃত্ব দিতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।
সিএনএন আফ্রিকার পুরস্কার বিজয়ী রেডিও সাংবাদিক অ্যানি ওসাবুতে আন্দোলনকারীদের ছবি শেয়ার করেছেন:
A nicely prepared clips from the #OccupyFlagStaffHouse pic.twitter.com/7Uf9RwHxC2
— Prampram fisherman (@AnnyOsabutey) July 2, 2014
আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ঘানার রাষ্ট্রপতি জন ড্রামানি মাহামা টুইটারে সক্রিয় হয়েছেন। তিনি আন্দোলনকারীদের আশ্বস্ত করেছেন, তাদের দাবিদাওয়া কোনো বধিরের কানে যাচ্ছে না। তিনি সব শুনছেন:
I have not forgotten that one of the greatest virtues of leadership is the ability to listen.
— John Dramani Mahama (@JDMahama) July 2, 2014
আমি ভুলে যাইনি যে একজন নেতৃত্বের অন্যতম গুণ হলো, অন্যরা কি বলছেন, তা শোনার ক্ষমতা থাকা।
I want to assure you that we will create change. We will build the sort of country that we will be proud to hand down to our children.
— John Dramani Mahama (@JDMahama) July 2, 2014
আমি আপনাদের নিশ্চয়তা দিতে পারি, আমরা পরিবর্তন আনবোই। আমরা এমন একটি দেশ গড়বো, যা নিয়ে আমাদের সন্তানরা গর্ব করবে।
This is our country, our home, and all Ghanaians deserve to have the ability to live, work and raise our families here with dignity n pride
— John Dramani Mahama (@JDMahama) July 2, 2014
এটা আমাদের দেশ, আমাদের বাড়ি, ঘানার সব নাগরিকই ভালোভাবে জীবন চালানো, কাজ করা এবং সম্মান ও গর্বের সাথে ছেলেমেয়েদের বড়ো করার অধিকার রয়েছে।
এটা চমত্কার অনুভুতি, কিন্তু বাস্তবের পরিবর্তন নয়… টুইট দিয়ে নয়… তাকে প্রমাণ দিতে হবে, তিনি আসলেই শুনছেন।