বিশ্বকাপে ফুটবল দলগুলোর কোনটি কোন পর্যায়ে আছে তা নির্নয় করা একটি একঘেয়ে বিষয় বলে বিবেচনা করা হয়। নক-আউট পর্যায়ে ফুটবল প্রেমীরা আরও উত্তেজনাকর কিছু ম্যাচের এক ঝলক দেখার সুযোগ পান। এ সময়ে প্রতিটি খেলা দলগুলোর মাঝে ব্যবধান তৈরি করে কোন দলটি টুর্নামেন্টে ক্রমাগত টিকে থাকবে এবং কোন দলটি কত তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে যাবে।
তবে এবারের বিশ্বকাপে তেমনটা ঘটছে না। বিশ্ব ফুটবলের তিন দানবঃ স্পেন, ইতালি এবং ইংল্যান্ড বাদ পড়ে গেছে। আর উরুগুয়ের স্ট্রাইকার লুইস সুয়ারেজের চতুর অ্যানিমেটেড জিআইএফ [2] পুনরায় দেখে বিশ্ব হতবাক হয়েছে। ইতালির রক্ষণ ভাগের খেলোয়াড় জর্জিও শিয়েলিনিকে কামড় দেবার পর হতে কাপকেক থেকে শুরু করে জাহাজের ক্যাপ্টেন পর্যন্ত সবকিছুতেই এই উরুগুয়ে স্ট্রাইকার যেন আঘাত হানছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার কার্টুনিস্ট জাপিরো এখানে ফিফার সাথে সুয়ারেজের আচরণ নিয়ে তীব্র ব্যঙ্গ করে লিখেছেন [3]। তাকে অনেকবার তাঁর আঁকা কার্টুনের জন্য হুমকি [4]পেতে হয়েছে।
কিন্তু এসব বিশ্বকাপ শিরোনাম ছাড়িয়ে বাকস্বাধীনতা এবং মানবাধিকার সম্পর্কিত আরও কিছু খবর আছে। একটি ভিডিও নির্মাণের সাথে জড়িত থাকায় ইরানে তিনজন লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। [5] ভিডিওটি তারা জাতীয় ফুটবল দলকে সমর্থন জানাতে তৈরি করেছিলেন। দ্বিতীয় রাউন্ডে মেক্সিকো জাতীয় দলের ম্যাচ চলার সময়ে সমর্থকেরা মানুষের প্রতি ঘৃণা সূচক অপবাদের স্লোগান [6] দেয়। ফিফা এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে মেক্সিকো জাতীয় দলের সমর্থকদের খেলার মাঠে প্রবেশের অনুমোদন দেয়া কমিয়ে দিয়েছে।
দুঃখজনকভাবে, বেশিরভাগ ব্রাজিলিয়ানের পক্ষে ব্যক্তিগতভাবে মাঠে খেলা দেখতে আসা অসম্ভব হয়ে পরেছে। তাই সীমানা ছাড়িয়ে ফুটবল সংস্থা ফাভেলা বা বস্তি বিশ্বকাপের [7] আয়োজন করেছে। সংস্থাটি শহরের বস্তি এলাকার সদস্যদেরকে তাদের নিজস্ব দল গঠনের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। একইভাবে সুইডেনের অস্টারসান্ড শহরটিও একটি টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছে। যেখানে পাদানিয়া, তামিল ইলম এবং ওসিটানিয়ার মতো অস্তিত্বহীন দেশগুলো [8]খেলার সুযোগ পাবে।
১৯৮৬ সালের পর এই প্রথমবারের মতো রমযান মাসে ফিফা বিশ্বকাপ আসর চলছে। ফলে মুসলিম খেলোয়াড়দের মাঝে প্রশ্ন উঠেছে যে তারা এ সময়ে ছুটি কাটাবেন কিনা [9]? ১৯৮২ সালে কুয়েতি ফুটবল দল ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাদের চূড়ান্ত গ্রুপ ম্যাচটি রমযানের রোজা পালন করে খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে তাদের কোচ লক্ষ্য করেছিলেন, এতে ম্যাচটিতে তাদের খেলার উপর “কিছুটা” হলেও প্রভাব পড়েছিল।
আপনারা যারা ম্যাচগুলোকে একটি নির্দিস্ট খাতে প্রবাহিত করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরিও সেবা ব্যবহার করছেন, তারা এখন হতভাগ্য হয়ে পরেছেন। কেননা, মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট রুল জারি করেছে [10], আরিও যে প্রযুক্তিতে কাজ করে তা কপিরাইট লঙ্ঘন করছে। আপনি যদি আপনার মোবাইল ফোনে টুর্নামেন্টটি দেখে থাকেন তবে আপনি অন্যদের চেয়ে কিছুটা সৌভাগ্যবান। কারন একই আদালত তাঁর জারি করা রুল বহাল রেখেছে। রুল অনুযায়ী আপনার যন্ত্রটির তল্লাশি চালাতে এখন সেই কর্তৃপক্ষের শুধুমাত্র একটি আদেশপত্র প্রয়োজন। [11]
তবে খুব বেশি উত্তেজিত হবেন না। কারন, হ্যাকিং টীম নামে একটি ইতালিয় কোম্পানির তৈরি করা সফটওয়্যার ব্যবহার করে সারা বিশ্ব জুড়ে মোবাইল ফোনের তথ্য সমুহ চুরি করে নেয়া হচ্ছে। সরকারি কর্তৃপক্ষ কিভাবে এই তথ্য চুরির কাজটি করছে সে সম্পর্কে সিটিজেন ল্যাবের একটি সক্রিয় কর্মী গবেষক দল এই ভীতিকর রিপোর্ট [12] প্রকাশ করেছেন।
এই সপ্তাহান্তে যদি একসাথে সবাইকে নিয়ে টুর্নামেন্ট দেখা এড়িয়ে যতে চান তবে নিউইয়র্কে ইন্ডিওয়েবক্যাম্পে [13]যোগ দিন। সেখানে আপনি স্বাধীন ওয়েবসাইট এবং স্রষ্টা মালিকানাধীন বিষয়বস্তু দেখতে পাবেন।