
বোমা পেতে রাখার ইসলামি মিলিটান্টসের দেওয়া সতর্কবাণী। ছবিঃ ashraf1974108 (টুইটার)
মিশরিয়রা আজ (৩০ জুন) বেশ ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছেন। ব্যাপারটি শুধুমাত্র প্রেসিডেন্ট ভবনের সামনে দুইটি বোমা বিস্ফোরণে দুইজন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হওয়া এবং বেশ কয়েকজন লোক আহত হওয়ার কারণে নয়; বরং সন্ত্রাসীরা আসন্ন বোমা বিস্ফোরণ ঘটানোর স্থানটির নাম অনলাইনে পোস্ট করা সত্ত্বেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোন ধরনের পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়ায়।
নেটিজেনদের মতে, যদি পুলিশ প্রশাসন প্রকৃতই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে থাকতো এবং তাদের মনোযোগ শুধুমাত্র সক্রিয় কর্মীদের গ্রেপ্তার এবং কারাদন্ডে দণ্ডিত করার দিকে কেন্দ্রীভূত না রাখতো, তবে কায়রোর হেলিওপোলিস জেলাতে আলোচিত এই বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতো না।
প্রথম বোমা বিস্ফোরণে একজন পুলিশ কর্মকর্তা মারা যান এবং আরও তিনজন লোক আহত হন। দ্বিতীয় ঘটনায় একজন পুলিশ কর্মকর্তা একটি বোমা নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টা করতে গেলে বোমাটি বিস্ফোরিত হয় এবং এতে সেই পুলিশ কর্মকর্তাটিও মারা যান। ইসলামপন্থী জঙ্গি বাহিনী এই বোমা বিস্ফোরণ ঘটানোর দায় স্বীকার করে নিলে জনগণ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
আশরাফ ফাউজি ক্রোধে ফেটে [আরবি] পড়েছেনঃ
دول كاتبينها بلون مختلف يا بهايم #محطة_الانفجار_السري #الاتحادية pic.twitter.com/CPkOYT5QeP — أشرف فوزي (@ashraf1974108) June 30, 2014
এমনকি তারা স্থান দুইটির নাম ভিন্ন রঙে লিখেছে, বোকার দল।
আহমেদ আল ইশ আরও বলেছেনঃ
بيان الداخلية بيقول جالهم بلاغ “صباح اليوم” بوجود عبوتين!! يعني ممكن الارهابيين بعد ما يأسوا من انتباههم للبيان ع النت، كلموهم في التليفون!! — Ahmed Al-Ish (@AhmdAlish) June 30, 2014
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের বক্তব্যে বলা হয়েছে, বোমার উপস্থিতি বিষয়ে আজ তারা একটি প্রতিবেদন পেয়েছে!! তাঁর মানে দাঁড়াচ্ছে যে সন্ত্রাসীরা ইন্টারনেটে বোমা বিস্ফোরণের সতর্কবাণী দিয়ে পুলিশ প্রশাসনকে আনন্দ দান করতে ব্যর্থ হয়ে হতাশ হয়ে পড়েছে। আর হতাশ হয়ে কোন উপায় না দেখে সন্ত্রাসীরা তাদেরকে টেলিফোন করে জানিয়েছে।
এবং আহমেদ আনোয়ার বিদ্রূপ করে বলেছেনঃ
الإرهابيين هيعملو ايه أكتر من كده نزلو بيان قالو على اماكن القنابل قبل انفجارها ب 4 ايام هيعملو ايه تانى ؟ هينزلو يتصورو سيلفى معاها؟ — Anwar (@A7mdAnwar) June 30, 2014
সন্ত্রাসীরা আর কি কি করতে পারতো? তারা একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বোমা কোথায় রাখা হয়েছে সেটি তারা উল্লেখ করেছে। তারা আর কি করতে পারতো? বোমাটি হাতে নিয়ে কয়েকটি সেলফি তুলে সেটি পোস্ট করতে হতো ?
এদিকে রাশা বিস্ময় প্রকাশ করেছেনঃ
عالهامش : خبراء متفجرات ايه اللي كل ما يحاولوا يفككوا قنبلة تنفجر فيهم دول ؟ هم بيدربوهم ويعلموهم فين ؟ ايه الهم ده بس يا ربي — Rasha (@neversaydiee) June 30, 2014
তারা কি ধরনের বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ, যারা প্রত্যেকবার খবর প্রচার করেন যে তারা বিস্ফোরক অকেজো করার চেষ্টা করছেন ? তাদেরকে কোথায় প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে? আমরা কি ধরনের যন্ত্রণার মধ্যে বসবাস করছি ?
এরপর নাওয়ারা নেগাম সমুচিত জবাব [আরবি] দিয়েছেনঃ
عايزينه يراقب النت ويلفق قضايا ويجند اعلاميين ويقبض على ابرياء وكمان يتصدى للتفجيرات؟ حتاكلوا محمد ابراهيم يعني؟ — ايام زرقا (@nawaranegm) June 30, 2014
আপনি কি চান তারা ইন্টারনেট পৃষ্ঠপোষকতা করুক, সক্রিয় কর্মীদেরকে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য ফন্দি আটুক, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রতিশোধ নিক, নিষ্পাপ লোকেদের গ্রেপ্তার করুক এবং বোমা বিস্ফোরণের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নিক ?
ব্লগার তামের মোওয়াফি একই ধরনের চিন্তা শেয়ার করেছেনঃ
لكن العيال أصحابنا طبعا همه اللي خطر على الأمن القومي ولازم يترموا في السجون!! — Tamer Mowafy (@kalimakhus) June 30, 2014
অবশ্যই আমাদের বন্ধুদের মাঝে এমন কেউ আছে যারা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তাকে বিপদের মুখে ফেলছে এবং এদেরকে শাস্তি দেয়া উচিৎ…
আর সাংবাদিকতার ছাত্র মেনা আলা পরিশেষে লিখেছেনঃ
This place doesn't need hope, it needs a miracle. #MENA — Menna منّة (@TheMiinz) June 30, 2014
এই ভুমির আর আশা নেই, এখানে এখন অলৌকিক কিছু প্রয়োজন।
কাকতালীয়ভাবে ব্যাপক প্রতিবাদ কর্মসূচী পালনের প্রথম বষপূর্তিতে এই বোমা হামলার ঘটনাটি ঘটলো। এক বছর আগে এই আন্দোলনের ফলে প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছিল। দীর্ঘ দিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনকারী হুসনি মোবারক ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর মুসলিম ব্রাদারহুডের এই প্রার্থী প্রায় এক বছর দেশ পরিচালনা করেছেন। গত ৩ জুলাই তারিখে মুরসির পদত্যাগের পর থেকে ইসলামপন্থি জঙ্গি বাহিনী কয়েকশ পুলিশকর্মীকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। ব্রাদারহুডের উপর সেনা অভিযানের পর থেকে এসব ঘটনায় ১ হাজার ৪ শতেরও বেশি মিশরীয় নিহত হয়েছেন এবং ১৬ হাজার লোককে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।